জাহিদ হাসান, যশোরঃ

যশোরে একই জমিতে বাণিজ্যিকভাবে সরিষা ও মধু চাষ করে লাভবান হচ্ছেন চাষীরা। সরিষা ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহ করায় ক্ষেতে সরিষার ফলনও বেড়েছে। অল্প খরচে এ চাষ করতে পারায় দিন দিন মধু চাষের দিকে ঝুঁকছে এ অঞ্চলের কৃষকেরা। লাভজনক হওয়ায় ভবিষ্যতে এ জেলায় সরিষার আবাদ আরো বাড়ার আশা কৃষি বিভাগের।

যশোর অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে, যশোরের আট উপজেলায় জেলায় চলতি মৌসুমে ১২ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। গত বছরে নয় হাজার সাত শ’ ৭৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়। যার মধ্যে এবার এক হাজার দুই শ’ ৬৮ হেক্টর জমিতে বাক্স বসিয়ে মৌচাষ করা হচ্ছে। এ বছর জেলায় নয় শ’ ৭৯ টি বক্সে সরিষার ফুল থেকে অন্তত চার হাজার কেজি মধুর যোগান মিলবে। যা গত বছর মধু উৎপাদন হয়েছিলো তিন হাজার ৬১২ কেজি।

সদর উপজেলার হামিদপুর মাঠে মৌচাষী আসমত আলী জানান, চলতি মৌসুমে বারি-১৪ সরিষা দেড় বিঘা জমিতে চাষ করেছি। জমির পাশে ৪৫টি মৌচাষের বক্স বসিয়ে এ পর্যন্ত ২৫ কেজি মধু পেয়েছি। আশা করছি আরো এক মাস সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহ করা যাবে। এ সময়ে অন্তত ১০-১৫ কেজি মধু পাবো।

হামিদপুর গ্রামের কৃষক আবু তালেব বলেন, সরিষা চাষের সাথে মাঠে মাঠে মধু সংগ্রহ ধুম পড়েছে। অধিকাংশ সরিষা ক্ষেতের মাঠের পাশের মৌ চাষের এমন বক্স স্থাপন করা হয়েছে। বক্সে থাকা লাখ লাখ মৌমাছি সরিষা ফুলে উড়ে মধু সংগ্রহ করছে। এতে সরিষা ফুলের পরাগায়নে সহায়তা হচ্ছে। ফলে একদিকে সরিষার উৎপাদন বাড়ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ পরিচালক সুশান্ত কুমার তরফদার বলেন, জেলায় গত বছরের চেয়ে চলতি মৌসুমে সরিষার চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। একই জমিতে সরিষা ও মধু চাষ করলে সরিষার ফলন বাড়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ । তাই সরিষার পাশাপাশি মধু চাষে কৃষকদের উদ্ধুদ্ধ করা হচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আলী জানান, সরিষা ক্ষেতে মৌ চাষ করলে পরাগায়ন ভাল হয়। এজন্য ২০ শতাংশ ফলন বাড়ে। একই সঙ্গে মধু চাহিদাও পূরণ হয়। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করায় সরিষা ক্ষেতে মৌ চাষ বাড়ছে। সেইজন্য মৌ বাক্সসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি সরবারহ করে নতুন নতুন মৌ চাষি তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here