ঢাকা ০৫:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবার ধামাকার সিওও সিরাজুলসহ ৩ জন গ্রেফতার

Reporter Name

ঢাকা:

প্রতারণা ও অর্থ-আত্মসাতের অভিযোগে ধামাকা শপিং-এর সিওও (চিফ অপারেটিং অফিসার) সিরাজুল ইসলাম রানাসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। 

মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে তাদেরকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে গাজীপুরের টঙ্গী পশ্চিম থানায় একটি মামলা রয়েছে। 

আজ বুধবার র‍্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক (এএসপি) আ ন ম ইমরান খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে। 

টঙ্গী পশ্চিম থানার মামলাটি ২৩ সেপ্টেম্বর দায়ের করেন টঙ্গী পশ্চিম থানার উত্তর আউচপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. শামীম খান। তিনি একজন পোশাক কারখানার পার্টস ব্যবসায়ী। 

ওই মামলার আসামিরা হলেন- প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএমডি জসিমউদ্দিন চিশতী (৫৭), চেয়ারম্যান ডা. এম আলী ওরফে মোজতবা আলী (৬০), সিওও সিরাজুল ইসলাম রানা, প্রধান ব্যবসা কর্মকর্তা ডিএমডি দেবকর দে শুভ (৩২), নাজিম উদ্দিন আসিফ (২৮), এজিএম হেড অব একাউন্টস সাফোয়ান আহমেদ (৪১), ডেপুটি ম্যানেজার আমিরুল হোসাইন (৪৬), আসিফ চিশতী (২৬), সিস্টেম ক্যাটাগরি হেড ইমতিয়াজ হাসান (৩৫), ভাইস প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীম স্বপন (৩৫) ও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিরোধ বারান রয় (৪৫)।

মামলার বাদী মো. শামীম খান জানান, গত ২০ মার্চ অনলাইনে ইনভ্যারিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেড পরিচালিত ধামাকা শপিং ডটকমের ফেসবুক পেজে বিভিন্ন ভার্চুয়াল সিগনেচার কার্ডের মাধ্যমে পণ্য কেনার অফার দেয়। অনলাইনে অফারটি দেখে প্রতিষ্ঠানের হেল্পলাইনে যোগাযোগ করেন তিনি। যোগাযোগ করার পর তাকে জানানো হয়, পণ্য অর্ডার করলে ৪৫ দিনের মধ্যে পণ্য সরবরাহ করা হবে। সে অনুযায়ী ৮৪টি ইনভয়েসের মাধ্যমে ওই প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত ইনভয়েসে ১১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেন তিনি। প্রতিষ্ঠানটি তার অর্ডার কনফার্ম করে ও কনফার্ম ইনভয়েস জিমেইল আইডিতে পাঠায়। কিন্তু প্রতিষ্ঠান থেকে নির্ধারিত ৪৫ দিনেও পণ্য সরবরাহ করেনি। ৫০ দিন পর হেল্পলাইনে যোগাযোগ করলে অপেক্ষা করতে বলে। এক মাস অপেক্ষা করার পর তাদের প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও ডিরেক্টর অপারেশন কর্তৃক স্বাক্ষরিত তাকে সাউথ ইস্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৫৫ হাজার টাকার দুইটি চেক দেওয়া হয়। ওই চেক নিয়ে টাকা তুলতে গেলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায় একাউন্টে কোনো টাকা নেই।

তিনি আরও জানান, গত ৫ আগস্ট প্রতিষ্ঠানের সিও মামলার ৩নং আসামি মো. সিরাজুল ইসলামের কাছে যাওয়ার পর তিনি টাকা না দিয়ে তাকে হুমকি দেন। পরে ৫ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অফিসে গিয়ে দেখেন অফিস তালাবন্ধ। তিনি বুঝতে পারেন তার সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। তাই টাকা পরিশোধের ইনভয়েজ, ব্যাংকের চেকের ফটোকপিসহ প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র সংগ্রহ করে মামলা করেন।

উল্লেখ্য, চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন ও আকর্ষণীয় ছাড়ে পণ্য বিক্রির ফাঁদ তৈরি করে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ৫৮৯ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) জসিমউদ্দিন চিশতি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন। এছাড়া পরিচালনা পর্ষদের বেশির ভাগ সদস্য পালিয়ে বিদেশে চলে গেছেন বলে জানিয়েছে অপরাধ তদন্ত সংস্থা (সিআইডি)। 

রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির অফিস বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে কাস্টমার কেয়ার সেন্টারের ফোন নম্বরও। এ অবস্থায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ধামাকায় অর্ডার পেমেন্ট করা হাজারো গ্রাহক।

About Author Information
আপডেট সময় : ০১:১৭:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১
২৬৮ Time View

এবার ধামাকার সিওও সিরাজুলসহ ৩ জন গ্রেফতার

আপডেট সময় : ০১:১৭:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১

ঢাকা:

প্রতারণা ও অর্থ-আত্মসাতের অভিযোগে ধামাকা শপিং-এর সিওও (চিফ অপারেটিং অফিসার) সিরাজুল ইসলাম রানাসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। 

মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে তাদেরকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে গাজীপুরের টঙ্গী পশ্চিম থানায় একটি মামলা রয়েছে। 

আজ বুধবার র‍্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক (এএসপি) আ ন ম ইমরান খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে। 

টঙ্গী পশ্চিম থানার মামলাটি ২৩ সেপ্টেম্বর দায়ের করেন টঙ্গী পশ্চিম থানার উত্তর আউচপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. শামীম খান। তিনি একজন পোশাক কারখানার পার্টস ব্যবসায়ী। 

ওই মামলার আসামিরা হলেন- প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএমডি জসিমউদ্দিন চিশতী (৫৭), চেয়ারম্যান ডা. এম আলী ওরফে মোজতবা আলী (৬০), সিওও সিরাজুল ইসলাম রানা, প্রধান ব্যবসা কর্মকর্তা ডিএমডি দেবকর দে শুভ (৩২), নাজিম উদ্দিন আসিফ (২৮), এজিএম হেড অব একাউন্টস সাফোয়ান আহমেদ (৪১), ডেপুটি ম্যানেজার আমিরুল হোসাইন (৪৬), আসিফ চিশতী (২৬), সিস্টেম ক্যাটাগরি হেড ইমতিয়াজ হাসান (৩৫), ভাইস প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীম স্বপন (৩৫) ও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিরোধ বারান রয় (৪৫)।

মামলার বাদী মো. শামীম খান জানান, গত ২০ মার্চ অনলাইনে ইনভ্যারিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেড পরিচালিত ধামাকা শপিং ডটকমের ফেসবুক পেজে বিভিন্ন ভার্চুয়াল সিগনেচার কার্ডের মাধ্যমে পণ্য কেনার অফার দেয়। অনলাইনে অফারটি দেখে প্রতিষ্ঠানের হেল্পলাইনে যোগাযোগ করেন তিনি। যোগাযোগ করার পর তাকে জানানো হয়, পণ্য অর্ডার করলে ৪৫ দিনের মধ্যে পণ্য সরবরাহ করা হবে। সে অনুযায়ী ৮৪টি ইনভয়েসের মাধ্যমে ওই প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত ইনভয়েসে ১১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেন তিনি। প্রতিষ্ঠানটি তার অর্ডার কনফার্ম করে ও কনফার্ম ইনভয়েস জিমেইল আইডিতে পাঠায়। কিন্তু প্রতিষ্ঠান থেকে নির্ধারিত ৪৫ দিনেও পণ্য সরবরাহ করেনি। ৫০ দিন পর হেল্পলাইনে যোগাযোগ করলে অপেক্ষা করতে বলে। এক মাস অপেক্ষা করার পর তাদের প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও ডিরেক্টর অপারেশন কর্তৃক স্বাক্ষরিত তাকে সাউথ ইস্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৫৫ হাজার টাকার দুইটি চেক দেওয়া হয়। ওই চেক নিয়ে টাকা তুলতে গেলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায় একাউন্টে কোনো টাকা নেই।

তিনি আরও জানান, গত ৫ আগস্ট প্রতিষ্ঠানের সিও মামলার ৩নং আসামি মো. সিরাজুল ইসলামের কাছে যাওয়ার পর তিনি টাকা না দিয়ে তাকে হুমকি দেন। পরে ৫ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অফিসে গিয়ে দেখেন অফিস তালাবন্ধ। তিনি বুঝতে পারেন তার সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। তাই টাকা পরিশোধের ইনভয়েজ, ব্যাংকের চেকের ফটোকপিসহ প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র সংগ্রহ করে মামলা করেন।

উল্লেখ্য, চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন ও আকর্ষণীয় ছাড়ে পণ্য বিক্রির ফাঁদ তৈরি করে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ৫৮৯ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) জসিমউদ্দিন চিশতি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন। এছাড়া পরিচালনা পর্ষদের বেশির ভাগ সদস্য পালিয়ে বিদেশে চলে গেছেন বলে জানিয়েছে অপরাধ তদন্ত সংস্থা (সিআইডি)। 

রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির অফিস বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে কাস্টমার কেয়ার সেন্টারের ফোন নম্বরও। এ অবস্থায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ধামাকায় অর্ডার পেমেন্ট করা হাজারো গ্রাহক।