বুধবার প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অগাস্ট থেকে এমএনপি সেবা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এ সেবা শুরু করতে আরও দুইমাস সময় প্রয়োজন হবে।
“এমএনপি সেবা শুরু করতে অপারেটরদের আরও দুই মাস সময় দেওয়া হয়েছে।”
বৈঠকে বিটিআরসির কর্মকর্তারা ছাড়াও মোবাইল ফোন এবং এমএনপি অপারেটদের প্রতিনিধিরা ছিলেন।
বৈঠকে অংশ নেওয়া বিটিআরসির এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সব ধরনের সমস্যার সমাধান করেই এমএনপি সেবা শুরু করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে গ্রাহকরা কোনো ধরনের ভোগান্তিতে না পড়েন।
এর আগে গত এপ্রিলে অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটর অব বাংলাদেশ (অ্যামটব) থেকে এমএনপির জন্য আরও তিন মাস সময় নেওয়ার ঘোষণার প্রেক্ষিতে অগাস্টে এই সেবা শুরুর আশ্বাস পাওয়া গিয়েছিল।
সঠিক পরিকল্পনা, অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়ার নকশা ও বাস্তবায়ন, তথ্য প্রযুক্তি ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি, এমএনপির প্ল্যাটফর্ম ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য এই সময় প্রয়োজন হচ্ছে।
মোবাইল ফোন নম্বর অপরিবর্তিত রেখে অপারেটর বদলের (এমএনপি) ক্ষেত্রে গেটওয়েগুলোর যে সংযোগের দায়িত্ব পালনের কথা, তা বিটিআরসি মোবাইল অপারেটরদের করতে বলায় এ সেবা শুরু না হতেই জটিলতায় পড়ে।
জুলাইয়ের শুরুতে অপারেটররা জানায়, তারা যখন এমএনপি সেবা দেওয়ার জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা চালাচ্ছে, সেই সময় বিটিআরসির ‘পোর্টেড নম্বর রুট’ করার নির্দেশনা পুরো প্রক্রিয়াকে ব্যাহত হওয়ার মতো অবস্থায় ফেলে দেয়।
এ সেবা চালু হওয়ার পর গ্রাহকরা ৩০ টাকা ফি দিয়ে নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর পরিবর্তনের আবেদন করতে পারবেন। আবেদন করার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তার অপারেটর বদলে যাবে। পুনরায় অপারেটর পরিবর্তন করতে হলে তাকে ৯০ দিন অপেক্ষা করতে হবে।
নম্বর পরিবর্তনের ঝক্কিতে যেতে চান না বলে সেবায় সন্তুষ্ট না হওয়ার পরও অনেকে এতদিন অপারেটর বদলাতে পারেননি। এমএনপি চালু হলে তারা নম্বর ঠিক রেখেই অন্য অপারেটরে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।
এতে অপারেটররাও তাদের সেবার মান উন্নত করতে চেষ্টা চালাবে বলে সরকার আশা করছে।
গত নভেম্বরে এমএনপি সেবার লাইসেন্স পায় বাংলাদেশ ও স্লোভেনিয়ার কনসোর্টিয়াম ইনফোজিলিয়ন বিডি-টেলিটেক।
ফ্ল্যাট রেটে আসছে অফ–নেট ও অন–নেট কল
বুধবারের এই বৈঠকে একই অপারেটরে ফোনকলের জন্য (অন-নেট) এবং অন্য অপারেটরে (অফ-নেট) খরচ একই হারে নিয়ে আসার সিদ্ধান্তও হয়েছে বলে জানান বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
অন-নেট ও অফ-নেট কলের হার ৫০ পয়সা নির্ধারণ করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে জহুরুল হক বলেন, শিগগিরই এ ব্যবস্থা চালু করা হবে।
বর্তমানে একই অপারেটরে ফোন কলের জন্য গ্রাহকদের প্রতি মিনিটে সর্বনিম্ন ২৫ পয়সা এবং অন্য অপারেটরে ৬০ পয়সা খরচ হয়।
২০১৭ সালে মোবাইল ফোনের কলরেট পুনঃনির্ধারণে বিটিআরসি প্রস্তাব পাঠালেও তা ফেরত পাঠায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।
সেখানে অন-নেটে সর্বনিম্ন কলরেট বাড়িয়ে ৩৫ পয়সা, অফনেটে সর্বনিম্ন কলরেট কমিয়ে ৪৫ পয়সা এবং সর্বোচ্চ সীমা দুই টাকা থেকে কমিয়ে দেড় টাকা করার কথা বলা হয়েছিল।
সেসময় বিটিআরসি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে ওই কলরেট চালু করা হবে। পরে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সংস্থার (আইটিইউ) পরামর্শকের মতামত নিয়ে কলরেটের বিভিন্ন স্তর চূড়ান্ত করা হবে।