সবুজদেশ ডেক্সঃ  চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলার গতকাল সোমবার সারাদিন সকল নেতাকর্মীদের সাথে  সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আ:লীগের সহ-সভাপতি চুয়াডাঙ্গা ০২ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী হাজী আলী আজগর টগর। এ সময় কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন আ:লীগ, যুবলীগ,ছাত্রলীগ সহ অঙ্গসংঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ হলরুমে সাক্ষাৎ করেন ও এলাকায় নৌকার পক্ষে ভোট চাইতে মাঠে নেমে পড়ার নির্দেশনা দেন।সরকারের নানা উন্নয়ন তুলে ধরে প্রতিটি বাড়ি মহল্লায় মহল্লায় নৌকার পক্ষে ঝাঁপিয়ে পড়ে আবারো জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের আ:লীগ সরকারকে ক্ষমতায় আনার আহবান জানান।
তিনি আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নদর্শন ও উন্নয়ন কৌশল আজো আমাদের কাছে জাজ্বল্যমান এবং তার নীতি, আদর্শ ও কর্ম-পদ্ধতি অবলম্বন করে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মেধা ও গতিশীল নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে উন্নত-আধুনিক রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠায় কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ, পৃথিবীর মানচিত্রে সত্যিই এক উদাহরণ। এই উদাহরণ অগ্রগতির উদাহরণ। অর্থনীতি ও আর্থ সামাজিক বেশির ভাগ সূচকে বাংলাদেশ ছাড়িয়ে গেছে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশকে। নিম্ন আয়ের দেশগুলোকে ছাড়িয়েছে অনেক আগেই। আজ নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ বাংলাদেশ। এখন স্বপ্ন ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে জায়গা করে নেয়া।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) একটি প্রতিবেদনে বলেছে, একটি জনবহুল ও নিম্ন আয়ের দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যেভাবে প্রবৃদ্ধির সঙ্গে দারিদ্র্য দূর এবং বৈষম্য কমানোকে সংযুক্ত করেছে, তা অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য।
সদ্য বাংলাদেশ ঘুরে গেলেন বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট কৌশিক বসু। তিনিও প্রশংসায় পঞ্চমুখ দেশের অর্থনীতির সূচক নিয়ে। প্রশংসা করেছেন নিজেদের অর্থ দিয়ে পদ্মা সেতুর মতো সাহসী পদক্ষেপের।
এছাড়া সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন উদাহরণ দেওয়ার মতো একটি দেশ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিশ্বব্যাংক বলছে, প্রধান ১২টি সূচকের মধ্যে বেশির ভাগেই বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া এবং অন্য নিম্ন আয়ের দেশের তুলনায় এগিয়ে গেছে। তবে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতি হয়েছে।
বাংলাদেশ ১৯৯০-এর পর সার্বিকভাবে প্রবৃদ্ধিতে উন্নয়নশীল দেশের গড় হারের তুলনায় অনেক এগিয়েছে। দারিদ্র্যের হার অর্ধেক হয়ে গেছে। মেয়েদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অবদানের হার দ্রুত বেড়েছে। জনসংখ্যা, গড় আয়ু, শিশুমৃত্যুর হার, মেয়েদের স্কুলে পড়ার হার, সক্ষম দম্পতিদের জন্ম নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা গ্রহণের হার ইত্যাদি সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ সমপর্যায়ের উন্নয়নশীল অন্যান্য দেশ, এমনকি প্রতিবেশী ভারতকে পেছনে ফেলতে সমর্থ হয়েছে।
এই ধারাবাহিকতায় কয়েকদিন আগেই নেয়া হয়েছে নতুন পরিকল্পনা সপ্তম ‘পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা’। যেখানে দারিদ্র্যতা আর ক্ষুধার হার আরো নামিয়ে আনার বড় ঘোষণা রয়েছে।
অনেক ক্ষেত্রেই ভারতের তুলনায় বাংলাদেশের সাফল্য যে বেশি, নোবেলজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক অমর্ত্য সেন তা বারবার বলেছেন। তিনি তাঁর সর্বশেষ প্রকাশিত অ্যান আনসারটেইন গ্লোরি: ইন্ডিয়া অ্যান্ড ইটস কনট্রাডিকশনস বইয়ে বাংলাদেশ নিয়ে আলাদা একটি অধ্যায়ও রেখেছেন।
বিশ্বব্যাংকের তৈরি করা তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে এখন গড় মাথাপিছু আয় হচ্ছে ৫২৮ ডলার। আর দক্ষিণ এশিয়ার গড় আয় এক হাজার ১৭৬ ডলার। এক হাজার ৩১৪ ডলার নিয়ে দক্ষিণ এশিয়াকে প্রায় ধরে ফেলেছে বাংলাদেশ। সাফল্য আছে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারেও। বাংলাদেশে এখন এই হার লক্ষ্যমাত্রার মধ্যেই।
স্বাধীনতার পর দেশের মানুষ গড়ে বেঁচে থাকত ৪৬ বছর, এখন সেই গড় আয়ু ৭০ বছর। অথচ দক্ষিণ এশিয়ার গড় আয়ু হচ্ছে ৬৫ বছর। শুধু তাই নয়, মেয়েরা সবচেয়ে বেশি স্কুলে যায় এই বাংলাদেশেই। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষার ফলেও অসাধারণ সাফল্য দেখিয়ে বাংলাদেশের মেয়েরা। পাশের হার ও মেধার স্বাক্ষরে ছেলেদের পেছনে ফেলেছে তারা।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সম্প্রতি বলেছেন, বাংলাদেশ আজ বড় সম্ভাবনার দেশ। বাংলাদেশ শুধু যে মুসলিম প্রধান দেশ, তা নয়; এটি উত্তর আফ্রিকা থেকে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর ভারত পর্যন্ত বিস্তৃত এমন একটি অঞ্চলের অংশ, যেখানে রয়েছে মেয়েদের প্রতি বৈষম্যমূলক পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা। এ কারণে বাংলাদেশের সামাজিক উন্নয়নের এই অগ্রগতিকে একটি ‘উন্নয়ন বিস্ময়’ বলে আখ্যায়িত করা হয়।
এর পেছনে কাজ করেছে জনগণের উন্নয়ন-সচেতনতা, গোত্র-বর্ণ ভেদাভেদহীন সমাজ এবং সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর নানা কার্যকর কর্মসূচি ও সামাজিক উদ্যোগ।
মাঠপর্যায়ের এসব কর্মসূচির মাধ্যমেই দেশের মানুষ নানা ধর্মীয় গোঁড়ামিকে ক্রমান্বয়ে অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছে। জাতীয় পর্যায়ে ধর্ম নিরপেক্ষতা বা সেক্যুলারিজম নিয়ে যে রাজনৈতিক বিতর্ক, তা দেশের উন্নয়ন-প্রক্রিয়ায় উপাদান হিসেবে তেমন কাজ করেছে বলে মনে হয় না।
তবে এখনো দেশের অনেক মানুষ দরিদ্র্য। বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ বলছে, ৬ শতাংশ হারে অব্যাহত প্রবৃদ্ধি অর্জন গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙা করেছে। মূলত ৮০ লাখ প্রবাসীর পাঠানো আয়, তৈরি পোশাক খাতের প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক এবং কৃষির সবুজ বিপ্লব বা এক জমিতে দুই ফসল দরিদ্র্য কমানোর ক্ষেত্রে বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছে। আবার সরকারও পিছিয়ে পড়া ও অতিদরিদ্রদের জন্য সামাজিক কর্মসূচি খাতে অব্যাহতভাবে বাজেট বাড়িয়েছে।
বাংলাদেশের বিস্ময়কর সাফল্যের জন্য নারীর অগ্রগতি বড় ভূমিকা রেখেছে। এটা যে কেউ স্বীকার করবে। পোশাক খাতের ৪০ লাখ শ্রমিকের মধ্যে মেয়েদের সংখ্যাই বেশি। এঁরাই বাংলাদেশকে অনেক এগিয়ে নিচ্ছেন।
সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) ঠিক করা হয়েছিল ১৯৯০ সালে। বাংলাদেশও ওই সময় থেকেই ক্রমান্বয়ে এগিয়েছে। এমডিজি পূরণের বছর ২০১৫। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) তৈরি করা প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ৮টি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে বাংলাদেশ এরই মধ্যে অনেকগুলোতে সঠিক পথে আছে, কিছু ক্ষেত্রে লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। এমডিজি পূরণের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ এখন সারা বিশ্বে একটি উদাহরণ। বাংলাদেশ এখন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা উপজেলা আ:লীগের সভাপতি সিরাজুল আলম ঝন্টু,সহ-সভাপতি সহিদুল হক,সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম,জেলা আ:লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক পারকৃষ্ণপুর মদনা ইউপি চেয়ারম্যান এস এম জাকারিয়া আলম,জেলা আ:লীগের সদস্য কার্পাসডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান ভুট্ট,কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন আ:লীগের সভাপতি শাফিকুর রহমান শাফিক মাষ্টার,কার্পাসডাঙ্গা১ নং ওয়ার্ড আ:লীগের সভাপতি আ:কাদের বিশ্বাস,আ:লীগ নেতা মিয়াজান,ফকির,রমজান,আশাদুল, সমির,মন্টু মেম্বর,কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আ:রাজ্জাক মেম্বর,সহ -সভাপতি মজিবার রহমান,সাধারন সম্পাদক সাংবাদিক মোস্তাফিজ কচি,যুগ্ম সম্পাদক শরীফ রতন,প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সাংবাদিক মেহেদী হাসান মিলন,দপ্তর সম্পাদক বখতিয়ার খলজি বকুল,অর্থ-বিষয়ক সম্পাদক শফিউদ্দীন বাবু,যুবলীগ নেতা আক্তারুল,জাফর,কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি কামরুজ্জামান রানা,সহ-সভাপতি তুহিন এ্যারিয়েন,সাধারন সম্পাদক সানাউল কবির শিরিন শেখ,সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক,সাজ্জাদ,সাজ্জাদ ২,রকিবুল,ফরহাদ,সাদিক,শাহীন প্রমুখ।
আল মামুন সোহাগ
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here