হোয়াইট হাউসে হাতে গোনা কয়েকজন আফ্রো-আমেরিকানকে চাকরি দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁদের মধ্যে বেশ ক্ষমতাবান ছিলেন ওমারোসা মানেগল নিউম্যান। চাকরি থেকে ১২ মাসের মাথায় অব্যাহতি পান এ নারী। এই সপ্তাহেই প্রকাশিত হতে যাচ্ছে তাঁর হোয়াইট হাউস অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা বই ‘আনহিঞ্জড’। বইটিতে ট্রাম্প ও হোয়াইট হাউসের অনেক গোপন কথা লিখেছেন তিনি, যার রেকর্ডিংও তাঁর কাছে আছে বলে দাবি করেছেন ওমারোসা।
ওমারোসা মানেগল নিউম্যান কী করে হোয়াইট হাউসের গোপন রেকর্ডিংগুলো পেলেন, সে এক রহস্য বটে।
অনলাইন পোর্টাল অ্যাক্সিওসডটকম জানাচ্ছে, এর কারণ খুব সাধারণ—সরকারের একেবারে উচ্চপর্যায়ের কিছু লোক তাঁর ভয়ে ভীত ছিলেন।
ওমারোসা মানেগল নিউম্যান সম্পর্কে তাঁর সাবেক সহকর্মীরা বলছেন:
‘আমি তাঁকে খুব বেশি ভয় পাই… শারীরিকভাবে তাঁর উপস্থিতি বেশ ভীতিকর।’ তাঁর সাবেক এক সহকর্মী এ কথা বলেন। (তিনি আরও সুনির্দিষ্ট কিছু বলতে চাননি, কেননা তিনি এখনো ওমারেসার ভয়ে ভীত। অন্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারাও একই ধরনের কথা বলেন।)
সাবেক সহকর্মীটি আরও বলেন, ‘আমি তাঁকে কখনো “না” বলিনি। তিনি যা-ই বলতেন আমি বলতাম, হ্যাঁ, দারুণ! আমি তাঁর ভয়ে ভীত ছিলাম। সব সময় ক্ষতির আশঙ্কা করতাম।’
ওমারোসার সাবেক তিন সহকর্মী একই অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন। আর একজন সাবেক কর্মকর্তা বলেন, ‘এক শ ভাগ সহমত। সবাই তাঁকে ভয় পেত।’
ওমারোসা তাঁর প্রকাশিতব্য বইয়ে ট্রাম্পকে যে বর্ণবাদী, নারীবিদ্বেষী ও মানসিকভাবে অসুস্থ বলেছেন, এর জন্য ট্রাম্প নিজেকে ছাড়া অন্য কাউকে দোষারোপ করতে পারবেন না। মোটা বেতনে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হিসেবে তিনিই ওমারোসাকে হোয়াইট হাউসে নিয়ে আসেন। দুজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ওমারোসার চরিত্র ঠিক ট্রাম্পের মতোই।
একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘সম্ভবত ট্রাম্প চরিত্রের সবচেয়ে কাছাকাছি ওমারোসা। তিনি মিডিয়াকে ভালো করে চেনেন। তিনি ট্রাম্পের মতোই শারীরিক উপস্থিতির গুরুত্বটা বোঝেন।’
হোয়াইট হাউসের সাবেক চিফ অব স্টাফ রেইন্স প্রিবাস বেশ কয়েকবার ওমারোসাকে ওভাল অফিস থেকে বের করার জোর চেষ্টা করেন।
ওমারোসা কারও কাছে জবাবদিহি করতেন না। একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা গত বছর বলেন, তাঁরা হতবুদ্ধি হয়ে যেতেন, কেননা ওমারোসাই হোয়াইট হাউসের উচ্চপদস্থ একমাত্র আফ্রো-আমেরিকান কর্মকর্তা ছিলেন।
ওমারোসা নিরাপত্তা ও নীতিগত বিষয়ে এক ঝাঁকুনি দেন, যখন কনে সাজে বিয়ের অতিথিদের নিয়ে হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে ফটোশুট করার চেষ্টা করেন।
অন্য সবার মতে, হোয়াইট হাউসে প্রায় ১২ মাসের কর্মজীবনে ওমারোসা খুব সামান্য কাজ করেছেন। কিন্তু প্রায় পুরোটা সময় ট্রাম্পের কক্ষে অবাধ প্রবেশাধিকার ছিল তাঁর। তিনি ওই রেকর্ডিংগুলো পেয়েছেন শুধু এ কারণে যে, তিনি তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন।