ঢাকা ০৭:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এ মাসেই তফশিল, নভেম্বর থেকে আবার ইউপি নির্বাচন শুরু

Reporter Name

ঢাকা:

আগামী নভেম্বর মাসের প্রথমার্ধে ফের শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভোট। এ মাসের মধ্যেই তফশিল ঘোষণার পরিকল্পনা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা শুরু হওয়ায় প্রথমার্ধেই ভোট করা হবে। এ লক্ষ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে ইসির সংশ্লিষ্টরা। এদিকে, ইউপি ভোটের সহিংসতায় প্রাণহানির ঘটনায় উদ্বিগ্ন নির্বাচন কমিশন। প্রথমধাপে ছয় জনের প্রাণহানির ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে কমিশন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেন, নির্বাচনে সহিংসতা কোনোভাবেই কাম্য নয়। প্রাণহানির ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। প্রতিটি ঘটনায় গুরুত্বসহকারে নেওয়া হচ্ছে। প্রশাসনের কোনো ধরনের গাফিলতি থাকলে ছাড় দেওয়া হবে না।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি বিদায়ের আগে দেশব্যাপী বাকি প্রায় ৪ হাজার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন, জেলা পরিষদ, ২০ পৌরসভা ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে ভোট করতে হবে বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে। বিদায়ের আগে পাঁচ মাসের কম সময়ে দেশব্যাপী এসব নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে বেশ ব্যস্ত থাকতে হবে কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশনকে। ইতিমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের প্রথম ধাপের ভোট শেষ হয়েছে। সদ্য সমাপ্ত এই নির্বাচনে জাল ভোট, ব্যালট ছিনতাইসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচনি সহিংসতায় অন্তত ছয় জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এই অবস্থায় আসন্ন বিভিন্ন নির্বাচন কতটুকু, সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ করতে পারবে—সেই বিষয় নিয়েও চিন্তিত নির্বাচন কমিশনাররা।

গত ২১ জুন প্রথম ধাপের ২০৪টি এবং স্থগিত ১৬০টিতে ভোট হয় ২০ সেপ্টেম্বর। এই ভোটে অন্তত ছয় জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া আগামী ৭ অক্টোবর ১৫ উপজেলা, এক পৌরসভা, সিটি করপোরেশনের পাঁচ কাউন্সিলর ও পৌরসভার পাঁচ কাউন্সিলর পদে উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে। আগামী ৯০ দিনের মধ্যে জাতীয় সংসদের একটি সংরক্ষিত আসনে উপনির্বাচন করতে হবে ইসিকে।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, এ মাসের শেষ দিকে তপশিল হতে পারে দ্বিতীয় ধাপের ইউপিসহ অন্যান্য নির্বাচনের। কোনো কারণে এই মাসের শেষ তপশিল না হলেও অক্টোবরের প্রথম এ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা প্রস্তুতি রাখা হচ্ছে। তবে মোট চার ধাপে দেশব্যাপী ইউপি নির্বাচন শেষ করার প্রাথমিক পরিকল্পনা রয়েছে কমিশনের। তবে এ মাসেই ভোট করার জন্য নির্বাচন উপযোগী ইউপির তালিকা প্রস্তুত রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন। এ ক্ষেত্রে ভোট হবে ১৪ নভেম্বরের আগে। কেননা ১৪ নভেম্বর এবং পাশাপাশি সময়ে দাখিল ও এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। এর আগে ২৪ অক্টোবর এবং ১লা নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় আবার গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হবে। সব মিলিয়ে ২ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বরের মধ্যে দ্বিতীয় ধাপের ভোট করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে কমিশন। তবে দ্বিতীয় ধাপে কতটা ইউপির ভোট হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আগামী কমিশন সভায় নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে চূড়ান্ত করবেন।

বিভিন্ন স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে ইসি সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় ৪ হাজার ইউপিতে ভোট আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে কমিশন। এই মাসের শেষে কমিশনের সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ঐ বৈঠকে কয় ধাপে ইউপি ভোট হবে বা কখন হবে, এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

ইসির নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, করোনা মহামারির কারণে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচন দীর্ঘ দিন থেকে আটকা রয়েছে। নির্বাচন উপযোগী প্রায় ৪ হাজার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন আটকা রয়েছে। ইসির কর্মকর্তাদের ভাষায়, নির্বাচনের জটে লেগেছে নির্বাচন কমিশনে। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি বিদায়ের আগেই এই নির্বাচনি জট নিয়ে অনেকটাই বিপাকে বর্তমান কমিশন।

About Author Information
আপডেট সময় : ১১:৫৮:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১
১৫৮ Time View

এ মাসেই তফশিল, নভেম্বর থেকে আবার ইউপি নির্বাচন শুরু

আপডেট সময় : ১১:৫৮:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

ঢাকা:

আগামী নভেম্বর মাসের প্রথমার্ধে ফের শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভোট। এ মাসের মধ্যেই তফশিল ঘোষণার পরিকল্পনা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা শুরু হওয়ায় প্রথমার্ধেই ভোট করা হবে। এ লক্ষ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে ইসির সংশ্লিষ্টরা। এদিকে, ইউপি ভোটের সহিংসতায় প্রাণহানির ঘটনায় উদ্বিগ্ন নির্বাচন কমিশন। প্রথমধাপে ছয় জনের প্রাণহানির ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে কমিশন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেন, নির্বাচনে সহিংসতা কোনোভাবেই কাম্য নয়। প্রাণহানির ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। প্রতিটি ঘটনায় গুরুত্বসহকারে নেওয়া হচ্ছে। প্রশাসনের কোনো ধরনের গাফিলতি থাকলে ছাড় দেওয়া হবে না।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি বিদায়ের আগে দেশব্যাপী বাকি প্রায় ৪ হাজার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন, জেলা পরিষদ, ২০ পৌরসভা ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে ভোট করতে হবে বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে। বিদায়ের আগে পাঁচ মাসের কম সময়ে দেশব্যাপী এসব নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে বেশ ব্যস্ত থাকতে হবে কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশনকে। ইতিমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের প্রথম ধাপের ভোট শেষ হয়েছে। সদ্য সমাপ্ত এই নির্বাচনে জাল ভোট, ব্যালট ছিনতাইসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচনি সহিংসতায় অন্তত ছয় জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এই অবস্থায় আসন্ন বিভিন্ন নির্বাচন কতটুকু, সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ করতে পারবে—সেই বিষয় নিয়েও চিন্তিত নির্বাচন কমিশনাররা।

গত ২১ জুন প্রথম ধাপের ২০৪টি এবং স্থগিত ১৬০টিতে ভোট হয় ২০ সেপ্টেম্বর। এই ভোটে অন্তত ছয় জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া আগামী ৭ অক্টোবর ১৫ উপজেলা, এক পৌরসভা, সিটি করপোরেশনের পাঁচ কাউন্সিলর ও পৌরসভার পাঁচ কাউন্সিলর পদে উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে। আগামী ৯০ দিনের মধ্যে জাতীয় সংসদের একটি সংরক্ষিত আসনে উপনির্বাচন করতে হবে ইসিকে।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, এ মাসের শেষ দিকে তপশিল হতে পারে দ্বিতীয় ধাপের ইউপিসহ অন্যান্য নির্বাচনের। কোনো কারণে এই মাসের শেষ তপশিল না হলেও অক্টোবরের প্রথম এ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা প্রস্তুতি রাখা হচ্ছে। তবে মোট চার ধাপে দেশব্যাপী ইউপি নির্বাচন শেষ করার প্রাথমিক পরিকল্পনা রয়েছে কমিশনের। তবে এ মাসেই ভোট করার জন্য নির্বাচন উপযোগী ইউপির তালিকা প্রস্তুত রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন। এ ক্ষেত্রে ভোট হবে ১৪ নভেম্বরের আগে। কেননা ১৪ নভেম্বর এবং পাশাপাশি সময়ে দাখিল ও এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। এর আগে ২৪ অক্টোবর এবং ১লা নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় আবার গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হবে। সব মিলিয়ে ২ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বরের মধ্যে দ্বিতীয় ধাপের ভোট করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে কমিশন। তবে দ্বিতীয় ধাপে কতটা ইউপির ভোট হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আগামী কমিশন সভায় নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে চূড়ান্ত করবেন।

বিভিন্ন স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে ইসি সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় ৪ হাজার ইউপিতে ভোট আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে কমিশন। এই মাসের শেষে কমিশনের সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ঐ বৈঠকে কয় ধাপে ইউপি ভোট হবে বা কখন হবে, এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

ইসির নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, করোনা মহামারির কারণে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচন দীর্ঘ দিন থেকে আটকা রয়েছে। নির্বাচন উপযোগী প্রায় ৪ হাজার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন আটকা রয়েছে। ইসির কর্মকর্তাদের ভাষায়, নির্বাচনের জটে লেগেছে নির্বাচন কমিশনে। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি বিদায়ের আগেই এই নির্বাচনি জট নিয়ে অনেকটাই বিপাকে বর্তমান কমিশন।