জাতীয় ঐক্য হবে না আ.লীগ বাদে : কাদের
সবুজদেশ ডেক্সঃ আওয়ামী লীগের মতো জনপ্রিয় দলকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশে কোনো জাতীয় ঐক্য হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শনিবার বিকেলে ফেনী শহরের ট্রাংক রোডের শহীদ মিনার চত্বরে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় একটি আন্তর্জাতিক সমীক্ষার হিসাব দিয়ে ওবায়দুল কাদের এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্তর্জাতিক সমীক্ষা বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা ৬৬ ভাগ, আর আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা ৬৪ ভাগ। আওয়ামী লীগের মতো জনপ্রিয় দলকে বাদ দিয়ে দেশে কোনো জাতীয় ঐক্য হবে না। তারা (ড. কামাল হোসেনের জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া ও এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর যুক্তফ্রন্ট) যে ঐক্য করতে চায়, সেই ঐক্য হবে জাতীয়তাবাদী ও সাম্প্রদায়িক ঐক্য। এই ঐক্য দেশের মানুষ মেনে নেবে না। তিনি বলেন, ঢাকার মহানগর নাট্যমঞ্চে ৩০ দলের সভায় সাত-আট শ লোকেরও জমায়েত হয়নি। প্রধানমন্ত্রী তাদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যান খুলে দেওয়া হবে।’ অথচ তারা সেখানে যায় না।
বিএনপিকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দাওয়াত না পেয়েও তাঁরা ভুয়া দাওয়াতের কথা প্রচার করে জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে গিয়ে নালিশ করেছেন। লন্ডনে ও ব্যাংককে সভা করেন। তাঁরা প্রতারক ও মিথ্যাচারের দল। বিএনপি ১০ বছরে ১০ মিনিটের জন্যও আন্দোলন করতে মাঠে নামতে পারেনি।’ ‘দেখতে দেখতে ১০ বছর, মানুষ বাঁচে কয় বছর, আন্দোলন হবে কোন বছর’ প্রশ্ন করে ফেনীতে জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে যে জনসভা হয়েছে, তারা (বিএনপি) এ রকম একটি জনসভা ঢাকায় করে দেখাক। কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করে কোনো লাভ হবে না। বিএনপি নিজেরা আন্দোলন করতে না পেরে কখনো হেফাজতে ইসলামের ওপর, কখনো ছাত্রদের ওপর ভর করে আন্দোলনের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। এখন তারা দেশে-বিদেশে নালিশ করে বেড়াচ্ছে।
আওয়ামী লীগের বিগত সময়ের সাফল্য তুলে ধরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে নারী ও তরুণসমাজ পাঁচ কোটি ভোটার হবে আওয়ামী লীগের শক্তি। আওয়ামী লীগের অবদানে এখন দেশে বিদ্যুতের লোডশেডিং নেই বললেই চলে। ১৬ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে ১৪ কোটি মানুষের হাতে মোবাইল ফোন। ১০ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। গ্রামের মানুষ ঘরে বসে প্রবাসীদের সঙ্গে ছবি দেখে (ভিডিও কল) এখন কথা বলতে পারে।
দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নিজেদের মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা করবেন না। যিনি বেশি জনপ্রিয়, তিনি দলের মনোনয়ন পাবেন। এখন থেকে ভোটকেন্দ্র কমিটি ও কেন্দ্র রক্ষা কমিটি করতে হবে।’ সব শেষে তিনি দেশে গণতন্ত্র রক্ষা ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য সবার নিকট আহ্বান জানান।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শুনেস চন্দ্র শীল ও শহীদ খোন্দকারের যৌথ সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ জাহানারা বেগম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজ আহম্মদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সাইফুদ্দিন নাছির, জহির উদ্দিন মাহমুদ, ফেনী পৌরসভার মেয়র আলাউদ্দিন, ফেনী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি করিম উল্যাহ, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন ফিরোজ।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জেলা সফরের অংশ হিসেবে শনিবার কুমিল্লা থেকে ওবায়দুল কাদের কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। তিনি কুমিল্লা, ফেনী ও চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বক্তব্য দেন। আগামীকাল রোববার লোহাগাড়া ও কক্সবাজারে পথসভার মধ্য দিয়ে দুই দিনের কর্মসূচি শেষ হবে।