ঐতিহ্য রক্ষায় কালীগঞ্জে ব্যতিক্রমী গাছি সমাবেশ অনুষ্ঠিত
দেশের দক্ষিণাঞ্চালের শীতের গুড়-পাটালির মুড়ি-মুড়কি আর খেঁজুর রসে ভেজানো পিঠার কদর দীর্ঘদিনের। আর এ সুস্বাদু রস আসে খেঁজুর গাছ থেকে। কথায় আছে “যশোরের যশ খেঁজুরের রস”। কিন্ত আজকের দিনে তা যেন কথার কথায় পরিণত হয়েছে। কেননা এ অঞ্চলে এখন আগের দিনের মত খেঁজুর গাছ নেই। আর যা আছে সৌখিনতার কারনে সে গাছ কেটে রস উৎপাদন করা গাছিরও আজ চরম সঙ্কট।
সেই গাছিদেরকে উৎসাহিত করতে ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের কাজী আব্দুল ওয়াহেদ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ব্যতিক্রমী গাছি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার দুপুরে উপজেলার কোলা ইউনিয়নের ডি কে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কৃষক শাহাজান মোল্যার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেদারুল ইসলাম।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, সর্বমোট উপজেলাটিতে খেজুর গাছ রয়েছে ১৪ হাজার ৫০০ টি । ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে রস আহরণকৃত খেজুর গাছের সংখ্যা ১০ হাজার ৮২৫ টি। এসব গাছ থেকে উপজেলায় মোট ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৪০০ লিটার রস ও ২৯.৫ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদন হয়। আর উপজেলাটিতে মোট গাছির সংখ্যা ১ হাজার ১৫ জন।
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেদারুল ইসলাম বলেন, এ এলাকার যেমন খেঁজুর রস, গুড়-পাটালির সুনাম রয়েছে। তেমনি বানিজ্যিকভাবে উৎপাদিত গুড়-পাটালির বদনামও রয়েছে। কেননা চিনির দাম কম থাকলে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা গুড় পাটালিতে চিনি মিশিয়ে বদনাম ডেকে আনেন। তিনি বলেন, খেঁজুর গাছ কমে যাওয়ায় নতুন করে খেঁজুরের চারা লাগানোর ক্ষেত্রে তিনি সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবেন। গ্রামীণ এ গাছিদের ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানের আয়োজনের জন্য তারা ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য।
এ সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহিন আলম, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুব আলম রনি, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার মামুনুর রশিদ, উপ- সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সত্যজিৎ বিশ্বাস প্রমুখ। সবশেষে এলাকার সেরা ৫ জন গাছির হাতে উপহার হিসেবে গাছি দা ও ঠুঙি (দা রাখার বিশেষ পাত্র) তুলে দেন প্রধান অতিথি। সমাবেশে, কোলা, জমাল, নিয়ামতপুর ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক গাছি উপস্থিত ছিলেন।
সবুজদেশ/এসএইচ/এসএএস