এছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নড়াইলে কথিত বন্দুকযুদ্ধে অজ্ঞাতপরিচয় আরও দুইজন নিহত হয়েছেন, যারা ডাকাত দলের সদস্য বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাষ্য।
তিনটি ঘটনাতেই মাদক ও বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র উদ্ধারের কথা জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মে মাসে মাদকবিরোধী অভিযান শুরুর পর প্রায় প্রতি রাতেই কথিত বন্দুকযুদ্ধে ‘মাদক বিক্রেতাদের’ নিহত হওয়ার খবর দিয়ে আসছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ ধরনের ঘটনায় গত আড়াই মাসে দুই শতাধিক মানুষের মৃত্য হয়েছে।
আমাদের জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
নারায়ণগঞ্জ
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ১৮ মামলার এক আসামি নিহত হয়েছে।
মঙ্গলবার ভোর পৌনে ৫টার দিকে সোনারগাঁও উপজেলার চেংরাকান্দি এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের আগমী ফিলিং স্টেশনের উল্টো দিকে গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে বলে র্যাব -১১ এর কোম্পানি কমান্ডার সিনিয়র এএসপি মো. আলেপ উদ্দিনের ভাষ্য।
নিহত আলমগীর হোসেন (৩৫) সোনারগাঁ উপজেলার কাচপুর বেপারীপাড়া এলাকার মানিক বেপারীর ছেলে।
র্যাব বলছে, পুলিশের ‘শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীর তালিকায়’ আলমগীরের নাম ছিল। এলাকার মানুষ তাকে চেয়ে ‘বিয়ার আলমগীর’ নামে। তার বিরুদ্ধে সোনারগাঁ ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ১৮টি মামলা রয়েছে।
র্যাব কর্মকর্তা আলেপ উদ্দিন বলেন, ইয়াবার চালান আসার খবরে তাদের একটি দল ভোরে ওই এলাকায় অভিযানে যায়।
“সেখানের ৫/৬ জন লোক র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি করে। আত্মরক্ষার্থে র্যাবও তখন পাল্টা গুলি চালায়। ১৩ মিনিট গোলাগুলি চলার পর ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক লোককে পড়ে থাকতে দেখা যায়, বাকিরা পালিয়ে যায়।”
গুলিবিদ্ধ ওই ব্যক্তিকে সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে স্থানীয়রা নিহত ওই ব্যক্তিকে আলমগীর হোসেন ওরফে বিয়ার আলমগীর হিসেবে শনাক্ত করেন বলে জানান সিনিয়র এএসপি আলেপ উদ্দিন।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে দুই রাউন্ড গুলি ভর্তি একটি পিস্তল এবং ১৫০০ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।
এ অভিযানে র্যাব সদস্য হাবিলদার হাবিবুর রহমান ও কনস্টেবল মিজানুর রহমান আহত হয়েছেন এবং তাদের সোনারগারঁও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানান র্যাব কর্মকর্তা আলেপ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মোহাম্মদপুরে র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে একজন নিহত হয়েছেন।
নিহতের নাম পরিচয় জানাতে না পারলেও র্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, ওই ব্যক্তি ডাকাত দলের সদস্য বলে তাদের ধারণা।
র্যাব-৫ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্পের ডেপুটি কমান্ডার এএসপি আবু খায়ের বলছেন, সোমবার রাত দেড়টায় দিকে উপজেলার মোহাম্মদপুর-ত্রিমোহনী এলাকায় শিবগঞ্জ-চৌডালা সড়কে গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে।
“র্যাবের একটি টহল দল সেখানে গেলে ডাকাত দলের সদস্যরা গুলি ছোড়ে। র্যাব সদস্যরাও তখন পাল্টা গুলি চালায়। গোলাগুলি থামার পর একজনকে সেখানে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।”
ওই ব্যক্তিকে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে র্যাব কর্মকর্তা খায়ের জানান।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, গুলি ও ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
নড়াইল
নড়াইলের লোহাগড়ায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে সন্দেহভাজন এক ডাকাত নিহত হয়েছে।
লোহাগড়া থানার ওসি প্রবীর কুমার বিশ্বাস বলছেন, সোমবার রাত ৩ টার দিকে লোহাগড়া পৌরসভার কচুবাড়িয়া এলাকায় গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে।
তিনি বলেন, “ডাকাতদের অবস্থানের খবর পেয়ে পুলিশ রাতে কচুবাড়িয়া এলাকায় যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতরা গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও গুলি চালায়। গোলাগুলি থামার পর সেখানে একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।”
ওই ব্যক্তিকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান ওসি।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ান শুটারগান, দুই রাউন্ড গুলি, দুটি ধারালো অস্ত্র ও একটি হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে নিহতের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
এ অভিযানে লোহাগড়া থানার এসআই মাহফুজুল হাসান, এ এস আই প্রলয় চক্রবর্তী, কনস্টেবল মো. মুরাদ ও মো. টিটু আহত হয়েছেন। তাদের লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।