করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে পর্যটক কমেছে বাগেরহাটে
এস এম সামছুর রহমান, বাগেরহাটঃ
সাম্প্রতিক সময়ে চীন থেকে উৎপত্তি হওয়া করোনাভাইরাস সারা বিশ্বে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার তালিকায় বাংলাদেশের নামও যুক্ত হয়েছে। ইতালিফেরত দুই জনের শরীরে এই ভাইরাস পাওয়া গেছে আর তাদের মধ্যে একজনের সংস্পর্শে আসার কারণে তৃতীয় আরেকজন আক্রান্ত হয়েছেন। আর এরপর থেকে বাগেরহাটে কমে গেছে পর্যটকদের আগমন। ফলে এই খাত থেকে রাজস্ব আয়ও কমে গেছে অনেক।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে, বিশ্বঐতিহ্য ষাটগুম্বুজ মসজিদ ও ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন, হজরত খানজাহান আলী (রহঃ) মাজার ঘিরেই বাগেরহাটের পর্যটন খাত সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও বেসরকারী ভাবেও গড়ে উঠেছে চন্দ্রমহল, সুন্দরবন রিসোর্টসহ কয়েকটি পর্যটন স্পট। সারা বছর পর্যটন জেলা বাগেরহাটে বহু দেশি-বিদেশি পর্যটকের পদচারণা মুখরিত থাকলেও প্রতিবছরের ফেব্রুয়ারী থেকে এপ্রিল মাসে তা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। কিন্তু করোনা কারনে গত এক সপ্তাহে পর্যটকের সংখ্যা কমে গেছে আশঙ্কাজনক ভাবে। গত সপ্তাহের তুলনায় অর্ধেকেরও কম পর্যটক এসছে এই সপ্তাহে।
এবিষয়ে মোংলার মা-বাবা ট্যুরিজমের স্বত্তাধিকারী মো: আব্দুল্লাহ নান্টু বলেন, গত এক সপ্তাহে দেশ বিদেশের অনেক পর্যটক করোনার কারনে তাদের পূর্ব নির্ধারিত ভ্রমন সুচী বাতিল করেছে। এরফলে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন তারা।
তাজমহলের আদলে তৈরি করা বাগেরহাট সদর উপজেলার চন্দ্রমহল ইকো পার্কের ব্যবস্থাপক কাবুল শেখ বলেন, গত কয়েক দিনে অনেকগুলো বিদ্যালয় তাদের পুর্বনির্ধারিত পিকনিকের তারিখ বাতিল করেছে। আর বিদেশী পর্যটকতো আসছেই না।
সুন্দরবন পুর্ব বন বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজননও ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজাদ কবির বলেন, গত শনিবারের পর থেকে আশঙ্কাজনক ভাবে কমে গেছে পর্যটকের সংখ্যা। বনবিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে করমজলে আসা পর্যটকদের এক মিটার দুরত্বে চলাসহ নানা ভাবে সতর্ক করা হচ্ছে।
সদর উপজেলার বারাকপুরে অবস্থিত সুন্দরবন রিসোর্ট এন্ড পিকনিক কর্ণানের স্বত্তাধিকারী ডাঃ মোশররফ হোসেন বলেন, মানুষতো করোন আতঙ্কে আছে। তাই পিকনিক প্রায় বন্ধ। সাধারন পর্যটকরাও আসছে না। গত এক সপ্তাহে পর্যটকের সংখ্যা একেবারে কমে গেছে।
বাগেরহাট ষাটগুম্বুজ প্রত্নতত্ব বিভাগের কাস্টডিয়ান গোলাম ফেরদাউস জানান, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ষাটগুম্বুজ মসজিদ পর্যটকের সংখ্যা একেবারেই কমে গেছে। গত শনিবার পর্যন্ত ভাল ছিল। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পর্যটকের সংখ্যা অর্ধেকেরও কমে নেমে এসেছে। বিশ্ব ঐতিহ্য হওয়ায় প্রতিবছর ষাটগুম্বুজ মসজিদে অনেক বিদেশী নাগরিক আসে। বিদেশী পর্যটকতো আসা সম্পূর্ণ বন্ধ, দেশী পর্যটকও কমেছে। এখন ভরা মৌসুম। এই অবস্থা চলতে থাকলে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রাও অর্জিত না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।