করোনায় শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে ‘আদর্শ বাড়তি খাবার’
জাহিদ হাসান, যশোরঃ
দেশে মহামারী করোনা ভাইরাস সংক্রামন বৃদ্ধির পর অসহায় ও দরিদ্র পরিবারের খাদ্য যোগানে সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তি পর্যায়েও এগিয়ে এসেছে ত্রান সহায়তায়। এই সহযোগিতায় চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ থাকলেও শিশুদের জন্য নেই কোন খাবার। এতে মহাসংকটে পড়েছে কর্মহীন এসব অসহায় পরিবারগুলো। সেই লক্ষে অসহায় পরিবারের শিশুদের পুষ্টির নিশ্চয়তার লক্ষে শিশুদের মাঝে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ‘আদর্শ বাড়তি খাবার’ নামে একটি কর্মসূচি চালু করেছে ত্রাণ ও পূর্ণবাসন অধিদপ্তর। ইতো মধ্যে এ কর্মসূচিতে যশোরে এক হাজার শিশুকে খাবার দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোর ত্রাণও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা মুহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন।
সূত্রে জানাগেছে, করোনায় কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক জীবন যাপনে নেমে এসেছে অসহায়ত্ব। হতদরিদ্র জনগোষ্ঠী হয়ে পড়েছেন আরও অসহায়। তবে সরকারের পাশাপাশি তাদের সহযোগিতা করছেন বিত্তবানরা। কিন্তু এই সহযোগিতার মধ্যে শিশুদের জন্য খাবার ছিলো না। তাই ত্রাণ ও পূর্নবাসন মন্ত্রালয়ের অধীনে যশোরে দরিদ্র পরিবারের শিশুদের খাবার বিতারণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যার মাধ্যমে শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিত হবে।
জেলা ত্রাণ ও পূর্নবাসন অফিস সূত্রে জানাগেছে, শিশু পুষ্টির নিশ্চয়তার লক্ষে শিশুদের মাঝে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ‘আদর্শ বাড়তি খাবার’ কর্মসূচির জন্য ১২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এই কর্মসূচিতে ৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১ হাজার শিশুকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। প্রতি দুই জন শিশুর মধ্যে তিনশ’ টাকা পরিমানে শিশু খাদ্য সরবাহর করা হচ্ছে। শিশু খাদ্য কর্মসূচিতে মধ্যে রয়েছে দুধ, দুগ্ধজাত খাবার, সাগু, সুজি। এতিম, হতদরিদ্র, নিম্ন আয়ের মানুষের শিশু সন্তানরা এসব ত্রাণ পাবে। প্রথম ধাপে এই কর্মসূচিতে জনসংখ্যা অনুসারে যশোরের সদর উপজেলায় ৫০ হাজার টাকা,মণিরামপুরে ৪০ হাজার টাকা এবং বাকী ৬ উপজেলাতে ৩০ হাজার টাকা শিশু খাদ্য সরবাহর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান উল্লাহ শরিফী জানান, করোনা ভাইরাসে কর্মহীনদের পরিবারে ছোট থেকে বড়দের খাবার সংকটে রয়েছে। যে সব অসহায় পরিবার গুলোতে একাধিক শিশু রয়েছে সে সকল পরিবার পড়েছেন মহা সংকটে। একদিকে এসব মানুষের আয়ের পথ বন্ধ থাকায় শিশুদেও নিয়ে তারা পড়েছেন বিপাকে । তাই ত্রাণ ও পূর্নবাসন অধিদপ্তরের অধীনে শিশুদের খাদ্যসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবার্সন অধিদপ্তরে বরাদ্দকৃত টাকা দিয়ে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে খাবার ক্রয় করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি পৌঁচ্ছে দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন জানান, করোনা ভাইরাসের সংক্রামন ছড়িয়ে পরার পর শ্রমজীবি ও দরিদ্র জনগোষ্টির অনেকেই পড়েছে খাদ্য সংকটে। এই সংকটের ফলে বড়দের পাশাপাশি শিশুরাও খাদ্যাভাবে ভুগছেন। অনেক হতদরিদ্র পরিবার তাদের শিশুদের নিয়মিত খাবার দিতে পারছেন না। ফলে অনেক শিশু না খেয়ে থাকছেন। তবে এবার এসব শিশুদের ত্রাণ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
তিনি আরো জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে তালিকা তৈরি শেষে এসব ত্রাণ শিশুদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। যশোরে প্রথমধাপে এই কর্মসূচির আওতায় এক হাজার পরিবারকে শিশু খাদ্যসহায়তা দেওয়া হয়েছে। করোনা বিপযর্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে যশোরের আট উপজেলায় এই কর্মসূচিতে শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে শিশুখাদ্য সহায়তা চলমান থাকবে।