ঢাকা ০৪:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনা যুদ্ধের সামনের সারির এক যোদ্ধার গল্প

Reporter Name

শোয়াইব উদ্দিন, ঝিনাইদহঃ

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লড়াই করছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। সামনের সারিতে থেকে জরুরি সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তারা। সংক্রমনের বিরুদ্ধে তাদের সঙ্গে সমান তালে কাজ করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। নিজের ও পরিবারের সদস্যদের সংক্রমনের কথা না ভেবেই প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনার নমুনা সংগ্রহ করছেন তিনি। এমনি এক জন হচ্ছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী প্যাথোলজিস্ট আবু তালেব।

প্রানঘাতী সংক্রমক ব্যাধি করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কগ্রস্থ অনেকেই। অনেক জায়গায় করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতেও পিছিয়ে গিয়েছেন। ঠিক সেই সময় গত ২ এপ্রিল থেকে একাই করোনা আক্রান্ত রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করছেন তিনি। তার সাহসিকতামূলক এ কর্মকাণ্ড এরই মধ্যে স্বাস্থ্যবিভাগের কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরও প্রশাংসা কুড়িয়েছেন। করোনা ভাইরাস নিয়ে কাজ করেছেন খুব কাছ থেকে। মহামারী করোনাভাইরাস নিয়ে কাজ করতে গিয়ে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। সবুজদেশ নিউজ ডটকমকে জানিয়েছেন তার অভিজ্ঞতার গল্প।

আবু তালেব বলেন, প্রথম কালীগঞ্জ উপজেলার কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নে আক্রান্ত এক ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করি। তখনই একটু ভয় পেয়েছিলাম। যেহেতু করোনা অতি সংক্রমিত ভাইরাস, এজন্য এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া নিয়ে প্রথমে একটু দুশ্চিন্তায় ছিলেন। এরপর থেকে আর তেমন ভয় করিনি। এখন প্রতিদিন ১০/১৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করেন।

তিনি আরো বলেন, এখন পর্যন্ত তিনি প্রায় ১ হাজারের বেশি নমুনা সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু এখনো তিনি সুস্থ আছেন। নমুনা সংগ্রহের পর তিনি নিজেও নমুনা দিয়েছিলেন কিন্তু রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।

করোনা যুদ্ধের সামনের সারির এই যোদ্ধা বলেন, পরিবার থেকে কখনো অসহযোগিতা পাইনি। বরং তাদের অনুপ্রেরণা আমাকে আরো বেশি সাহস যুগিয়েছে। এছাড়াও অন্য কেউ কখনো এমন কোন ব্যবহার করিনি যাতে তিনি মনে কষ্ট পাবেন।

সরকারের সহযোগিতার বিষয়ে তিনি বলেন, করোনার নমুনা সংগ্রহের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে পিপিই, মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ বিভিন্ন উপকরণ পাচ্ছি।

করোনার এই সম্মুখ যোদ্ধা বলেন, করোনার নমুনা সংগ্রহ করে পরিবারের সদস্যদের কাছে যাওয়া থেকে বিরত থাকতাম। ছোট নাতনী কাছে দৌড়িয়ে আসার চেষ্টা করলেও তাকে আসতে বাঁধা দিতাম। দূর থেকে পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলি। সবসময় সচেতন থাকার চেষ্টা করি।

আবু তালেব বলেন, করোনা উপসর্গে কেউ রাতে মারা গেলে সেই রাতেই ওই বাড়িতে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করতে যেতে হয়। এটা আসলে অন্যরকম এক অভিজ্ঞতা। করোনা ভাইরাসের মতো এমন ভাইরাস আগে কখনো আসেনি। সেহেতু এটা নিয়ে কাজ করা একদমই নতুন অভিজ্ঞতা।

একমাত্র সচেতনতাই পারে করোনা ভাইরাসের এই ভয়াল থাবা থেকে মুক্ত করতে। মুখে সবসময় মাস্ক ও সাবান দিয়ে হাত ধোওয়া এগুলো সবসময় সবার করা উচিৎ বলে মনে করেন করোনা যুদ্ধের এই সম্মুখ যোদ্ধা।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৮:৩২:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ অগাস্ট ২০২০
১১১৬ Time View

করোনা যুদ্ধের সামনের সারির এক যোদ্ধার গল্প

আপডেট সময় : ০৮:৩২:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ অগাস্ট ২০২০

শোয়াইব উদ্দিন, ঝিনাইদহঃ

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লড়াই করছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। সামনের সারিতে থেকে জরুরি সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তারা। সংক্রমনের বিরুদ্ধে তাদের সঙ্গে সমান তালে কাজ করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। নিজের ও পরিবারের সদস্যদের সংক্রমনের কথা না ভেবেই প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনার নমুনা সংগ্রহ করছেন তিনি। এমনি এক জন হচ্ছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী প্যাথোলজিস্ট আবু তালেব।

প্রানঘাতী সংক্রমক ব্যাধি করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কগ্রস্থ অনেকেই। অনেক জায়গায় করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতেও পিছিয়ে গিয়েছেন। ঠিক সেই সময় গত ২ এপ্রিল থেকে একাই করোনা আক্রান্ত রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করছেন তিনি। তার সাহসিকতামূলক এ কর্মকাণ্ড এরই মধ্যে স্বাস্থ্যবিভাগের কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরও প্রশাংসা কুড়িয়েছেন। করোনা ভাইরাস নিয়ে কাজ করেছেন খুব কাছ থেকে। মহামারী করোনাভাইরাস নিয়ে কাজ করতে গিয়ে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। সবুজদেশ নিউজ ডটকমকে জানিয়েছেন তার অভিজ্ঞতার গল্প।

আবু তালেব বলেন, প্রথম কালীগঞ্জ উপজেলার কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নে আক্রান্ত এক ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করি। তখনই একটু ভয় পেয়েছিলাম। যেহেতু করোনা অতি সংক্রমিত ভাইরাস, এজন্য এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া নিয়ে প্রথমে একটু দুশ্চিন্তায় ছিলেন। এরপর থেকে আর তেমন ভয় করিনি। এখন প্রতিদিন ১০/১৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করেন।

তিনি আরো বলেন, এখন পর্যন্ত তিনি প্রায় ১ হাজারের বেশি নমুনা সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু এখনো তিনি সুস্থ আছেন। নমুনা সংগ্রহের পর তিনি নিজেও নমুনা দিয়েছিলেন কিন্তু রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।

করোনা যুদ্ধের সামনের সারির এই যোদ্ধা বলেন, পরিবার থেকে কখনো অসহযোগিতা পাইনি। বরং তাদের অনুপ্রেরণা আমাকে আরো বেশি সাহস যুগিয়েছে। এছাড়াও অন্য কেউ কখনো এমন কোন ব্যবহার করিনি যাতে তিনি মনে কষ্ট পাবেন।

সরকারের সহযোগিতার বিষয়ে তিনি বলেন, করোনার নমুনা সংগ্রহের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে পিপিই, মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ বিভিন্ন উপকরণ পাচ্ছি।

করোনার এই সম্মুখ যোদ্ধা বলেন, করোনার নমুনা সংগ্রহ করে পরিবারের সদস্যদের কাছে যাওয়া থেকে বিরত থাকতাম। ছোট নাতনী কাছে দৌড়িয়ে আসার চেষ্টা করলেও তাকে আসতে বাঁধা দিতাম। দূর থেকে পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলি। সবসময় সচেতন থাকার চেষ্টা করি।

আবু তালেব বলেন, করোনা উপসর্গে কেউ রাতে মারা গেলে সেই রাতেই ওই বাড়িতে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করতে যেতে হয়। এটা আসলে অন্যরকম এক অভিজ্ঞতা। করোনা ভাইরাসের মতো এমন ভাইরাস আগে কখনো আসেনি। সেহেতু এটা নিয়ে কাজ করা একদমই নতুন অভিজ্ঞতা।

একমাত্র সচেতনতাই পারে করোনা ভাইরাসের এই ভয়াল থাবা থেকে মুক্ত করতে। মুখে সবসময় মাস্ক ও সাবান দিয়ে হাত ধোওয়া এগুলো সবসময় সবার করা উচিৎ বলে মনে করেন করোনা যুদ্ধের এই সম্মুখ যোদ্ধা।