ঢাকা ০৩:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনা: শিশুদের কি বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে দেয়া উচিত?

Reporter Name

প্রথমা, পূর্ণতা ও রিহান

সবুজদেশ ডেস্কঃ

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে স্কুল। তবে অনেক অভিভাবক স্কুল বন্ধ করে দেয়ার পর শিশুদের নিয়ে ভ্রমণে বের হচ্ছে, যা শিশুদের জীবনঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে।

স্কুল বন্ধ মানে বাইরে ঘোরাফেরা নয়, ঘরে থাকতে বলা হয়েছে। যেন আপনার সন্তান করোনাভাইরাসে আক্রান্ত না হয়। তবে স্কুল বন্ধ হওয়ার পর অনেক শিশু খেলতে বাসার বাইরে বের হচ্ছে। এতে করে আপনার সন্তান আক্রান্ত হতে পারে।

তাই তাদের ঘরের বাইরে মাঠে ও পার্কে গিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে দেয়া উচিত নয়।

দুই সপ্তাহ আগে ইতালিতে যখন কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ছিল। তখন সরকারের পক্ষ থেকে লোকজনকে তখনও ঘরে থাকতে বলা হয়নি। এ ছাড়া খুব একটা গুরুত্ব দেয়া হয়নি। তাই আজ ইতালি মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। করোনায় ইতালির মৃত্যুর সংখ্যা চীনকেও ছাড়িয়েছে।

অর্থাৎ কোয়ারেন্টিন অর্থ হচ্ছে– নিজ ঘরে অবরুদ্ধ থাকা। বাংলাদেশেও স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেয়ার পর অনেক অভিভাবকই এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও এ সময় শিশুদের নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার বিষয়ে লোকজন কথাবার্তা বলেছেন।

সংবাদমাধ্যমগুলো থেকে খবর পাওয়া গেছে, স্কুল বন্ধ থাকার কারণে দেশের পযর্টন স্পটগুলোতে লোকজনের ভিড় বেড়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সতর্ক করে দিয়েছেন, স্কুল-কলেজ বন্ধ করা হয়েছে ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে; বেড়াতে যাওয়ার জন্য নয়। তিনি বলেন, শিশুদের অবশ্যই ঘরে থাকতে হবে।স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অসুখের সংক্রমণ ঠেকাতে লোকজনকে সমাজের আর সবার কাছ থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রে জন্স হপকিন্স ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথের রোগতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. কেরি আলথফ বলছেন, সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকার বিষয়টি সবাইকে মেনে চলতে হবে। একজনকে আরেকজনের কাছ থেকে সবসময় ছয় ফুট দূরে থাকতে হবে। তাই ফুটবল বা বাস্কেটবলের মতো খেলার কোনো সুযোগ নেই।

তবে কিছু খেলা আছে যেগুলোতে আরেকজনের খুব কাছে যেতে হয় না। যেমন টেনিস, লুকোচুরি, হাইড অ্যান্ড সিক খেলতে পারে।

তিনি বলছেন, করোনাভাইরাস মানবদেহের বাইরে কয়েক দিন বেঁচে থাকতে পারে সেটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। সে কারণে খেলার মাঠ ও খেলারসামগ্রী এড়িয়ে চলা উচিত। শিশুরা এই ভাইরাসে খুব কমই আক্রান্ত হচ্ছে। তবে তারা এই ভাইরাসটি অন্যের দেহে ছড়িয়ে দিতে পারে।

তাই আপনার সন্তান ও তার বন্ধুরা হয়তো সুস্থ আছে। কিন্তু তার পরও তাদের মাধ্যমে এই ভাইরাসটি তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। রোগতত্ত্ববিদ ড. ক্যাথরিন সেমারাও বলছেন, লোকজন সামাজিকভাবে কতটা বিচ্ছিন্ন থাকছে সে বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও কর্তৃপক্ষকেও সতর্ক থাকতে হবে।

তিনি বলেন, এমনকি আপনি যেখানে থাকেন, সেই এলাকাটিও যদি অবরুদ্ধ না হয়ে থাকে। তার পরও আপনার উচিত ঘরে থাকা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী দিনগুলোতে অভিভাবকদের হয়তো আরও কঠোর হতে হবে। এ সময় অনলাইনে বা ইন্টারনেটে যোগাযোগ করাই নিরাপদ।

তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা

About Author Information
আপডেট সময় : ১১:৪৯:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ মার্চ ২০২০
৬৫৫ Time View

করোনা: শিশুদের কি বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে দেয়া উচিত?

আপডেট সময় : ১১:৪৯:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ মার্চ ২০২০

সবুজদেশ ডেস্কঃ

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে স্কুল। তবে অনেক অভিভাবক স্কুল বন্ধ করে দেয়ার পর শিশুদের নিয়ে ভ্রমণে বের হচ্ছে, যা শিশুদের জীবনঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে।

স্কুল বন্ধ মানে বাইরে ঘোরাফেরা নয়, ঘরে থাকতে বলা হয়েছে। যেন আপনার সন্তান করোনাভাইরাসে আক্রান্ত না হয়। তবে স্কুল বন্ধ হওয়ার পর অনেক শিশু খেলতে বাসার বাইরে বের হচ্ছে। এতে করে আপনার সন্তান আক্রান্ত হতে পারে।

তাই তাদের ঘরের বাইরে মাঠে ও পার্কে গিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে দেয়া উচিত নয়।

দুই সপ্তাহ আগে ইতালিতে যখন কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ছিল। তখন সরকারের পক্ষ থেকে লোকজনকে তখনও ঘরে থাকতে বলা হয়নি। এ ছাড়া খুব একটা গুরুত্ব দেয়া হয়নি। তাই আজ ইতালি মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। করোনায় ইতালির মৃত্যুর সংখ্যা চীনকেও ছাড়িয়েছে।

অর্থাৎ কোয়ারেন্টিন অর্থ হচ্ছে– নিজ ঘরে অবরুদ্ধ থাকা। বাংলাদেশেও স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেয়ার পর অনেক অভিভাবকই এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও এ সময় শিশুদের নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার বিষয়ে লোকজন কথাবার্তা বলেছেন।

সংবাদমাধ্যমগুলো থেকে খবর পাওয়া গেছে, স্কুল বন্ধ থাকার কারণে দেশের পযর্টন স্পটগুলোতে লোকজনের ভিড় বেড়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সতর্ক করে দিয়েছেন, স্কুল-কলেজ বন্ধ করা হয়েছে ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে; বেড়াতে যাওয়ার জন্য নয়। তিনি বলেন, শিশুদের অবশ্যই ঘরে থাকতে হবে।স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অসুখের সংক্রমণ ঠেকাতে লোকজনকে সমাজের আর সবার কাছ থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রে জন্স হপকিন্স ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথের রোগতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. কেরি আলথফ বলছেন, সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকার বিষয়টি সবাইকে মেনে চলতে হবে। একজনকে আরেকজনের কাছ থেকে সবসময় ছয় ফুট দূরে থাকতে হবে। তাই ফুটবল বা বাস্কেটবলের মতো খেলার কোনো সুযোগ নেই।

তবে কিছু খেলা আছে যেগুলোতে আরেকজনের খুব কাছে যেতে হয় না। যেমন টেনিস, লুকোচুরি, হাইড অ্যান্ড সিক খেলতে পারে।

তিনি বলছেন, করোনাভাইরাস মানবদেহের বাইরে কয়েক দিন বেঁচে থাকতে পারে সেটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। সে কারণে খেলার মাঠ ও খেলারসামগ্রী এড়িয়ে চলা উচিত। শিশুরা এই ভাইরাসে খুব কমই আক্রান্ত হচ্ছে। তবে তারা এই ভাইরাসটি অন্যের দেহে ছড়িয়ে দিতে পারে।

তাই আপনার সন্তান ও তার বন্ধুরা হয়তো সুস্থ আছে। কিন্তু তার পরও তাদের মাধ্যমে এই ভাইরাসটি তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। রোগতত্ত্ববিদ ড. ক্যাথরিন সেমারাও বলছেন, লোকজন সামাজিকভাবে কতটা বিচ্ছিন্ন থাকছে সে বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও কর্তৃপক্ষকেও সতর্ক থাকতে হবে।

তিনি বলেন, এমনকি আপনি যেখানে থাকেন, সেই এলাকাটিও যদি অবরুদ্ধ না হয়ে থাকে। তার পরও আপনার উচিত ঘরে থাকা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী দিনগুলোতে অভিভাবকদের হয়তো আরও কঠোর হতে হবে। এ সময় অনলাইনে বা ইন্টারনেটে যোগাযোগ করাই নিরাপদ।

তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা