ঝুঁকি দেখিয়ে বিগত দিনে কয়েক দফা কাটা হয়েছে শতবর্ষী রেইন্ট্রি গাছের মুল্যবান কাঁচা ডাল। অথচ শুকনো ডালগুলো ঝুঁকিপূর্ণভাবে গাছেই থেকে গেছে। যেগুলো এখন বর্ষার পানিতে নরম হয়ে আছড়ে পড়ছে নীচের সড়কের ওপর। ফলে হরহামেশায় ঘটছে দূর্ঘটনা। এমন অবস্থা বিরাজ করছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের শতবর্ষী রেনট্রি গাছের ঐতিহ্যবাহী ভূষন রোডে। স্থানীয়দের ভাষ্য, এখনই শুকনো মোটা ডালগুলো কাটার ব্যবস্থা না করলে যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
বৈশ্বিক আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তনের কারনে প্রচন্ড গরমে এ গাছগুলো যেমন একদিকে মানুষকে স্বস্তি দিচ্ছে। তেমনি এর শুকনো ডাল ভেঙে পড়ে ঘটছে দূর্ঘটনা। গত ৩ দিন আগেও লাড্ডু মিয়া নামের এক রিকশাচালকসহ যাত্রী শুকনো ছিটকে ডাল পড়ে আহত হয়েছেন। গত কাল গভীর রাতে বৃষ্টি চলাকালে ফুড গোডাউনের পাশে ফাঁকা স্থানে পড়েছে আরেকটি শুকনো ডাল। কাজেই চলমান বর্ষা মৌসুমের জন্য ঝুঁকির আরেক নাম হয়ে উঠেছে ভূষন রোড।
এ সড়কটির পাশে রয়েছে সরকারী নলডাঙ্গা ভূষন পাইলট হাইস্কুল, ভূষন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, ভূষন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঐতিহ্যবাহী কালীগঞ্জ শিশু একাডেমি, মহিলা কলেজসহ অনেকগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীরা সকাল হলেই এ সড়ক দিয়েই আসা যাওয়া করে থাকে। এছাড়াও এ সড়কেই বড় বড় বৃক্ষগুলোর নীচে সব ভূষি মালের আড়ৎ ও হলুদের জমজমাট হাট বসে। যেখানে হাটের দিনে সপ্তাহে দুইদিন হাজারো মানুষের সমাগম ঘটে থাকে। এখানে শুকনো মোটা ডালপালা আছড়ে পড়লে ঘটতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা।
স্থানীয়রা জানান, শহরের ভূষন হাইস্কুলের সড়কটি লোক চলাচলের দিক দিয়ে অন্য সড়কের চেয়ে বেশ ভিন্ন এবং অন্যতম ব্যস্ততম সড়ক। শতবর্ষী গাছগুলোর জন্য এদিকে গরমের সময়ে অপেক্ষাকৃত এলাকাটি ছায়া- শীতল রাখে। অপরদিকে শুকনো ডালপালা মাথার ওপর পড়ারও ভয় সব সময় কাজ করে। কারন একটু জোরে বাতাস হলে অথবা লাগাতর বর্ষা আসলে প্রায়ই গাছের শুকনা ডাল সড়কের ওপর ভেঙে পড়ে। ডাল পড়ে পথচারীসহ স্থানীয়দের অনেকে হতাহতের শিকার হয়ে থাকেন। ফলে সব সময় তাদের বাড়তি ঝুঁকিতে থাকতে হয়। এ জন্য শুকনো ডালগুলো সরকারী উদ্যোগেই আগে থেকে কেটে ফেলা হয়। তাদের অভিযোগ, বিগত দিনে ঝুঁকিপূর্ণ ডাল দেখিয়ে কয়েক দফা সব কাঁচা ডাল কাটা হয়েছে। আর শুকনো ডাল গাছেই রয়ে গেছে। যে ডালগুলো এখন চলাচলরতদের জন্য চরম ঝুঁকির কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের আশা প্রশাসন বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রকৃত ঝুঁকিপূর্ণ ডালপালা কাটার ব্যবস্থা করবেন।
মোতালেব হোসেন নামের এক শ্রমিক জানান, গত ৩ দিন আগে হলুদ হাটার সামনে গাছের একটি শুকনো চিকন ডাল চলমান এক রিকসার ওপর ভেঙে পড়ে গুরুতর আহত হন চালকসহ যাত্রী। তিনি বলেন, তারা অনেকে সারাবছর এ সড়কের ভূসি মাল ও হলুদ হাটের গাড়িতে মালামাল লোড আনলোডের কাজ করেন। এখনও হলুদ হাটের ওপরেই বড় রেনট্রি গাছের বেশ কিছু মোটা ডাল শুকিয়ে গাছেই রয়েছে। যে কোন সময়ে খসে পড়ে বিপদ হতে পারে। এ ঝুঁকি নিয়েই পেটের দায়ে হাজারো ভয়ের মধ্যে তারা কাজ করছেন।
সবুজদেশ/এসএএস