কালীগঞ্জের যুবলীগ কর্মীকে জঙ্গি বানিয়ে মামলা দেয়ায় গ্রামবাসীর মানববন্ধন (ভিডিও)
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ১০ নং কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি আক্তারুজ্জামান কে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামের সদস্য বানিয়ে মামলা দেয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ঝনঝনিয়া গ্রামবাসী।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩ টায় উপজেলার ঝনঝনিয়া গ্রামের রাস্তায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে গ্রামের প্রায় ৫’শ নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।
হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা থেকে রেহায় পেতে ইতিমধ্যে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি আবেদন করেছেন আটক আক্তারুজ্জামানের চাচা শেখ মোঃ নজরুল ইসলাম। তিনি সেই আবেদনে উল্লেখ করেছেন, গত ১৯ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ৮ টার দিকে দুইটি মাইক্রোবাস এসে ভাইপো আক্তার ও তার স্ত্রী মিনা ও ছোট বোন পারুল কে উঠিয়ে নিয়ে চলে যায়। এ সময় আমি বাঁধা দিলে আমাকে বলে তারা প্রশাসনের লোক। এরপর ওই রাতেই দেড়টার দিকে বারোবাজার পুলিশ ফাঁড়ির কর্মরত এএসআই তরিকুল ইসলাম স্থানীয় ইউপি সদস্য শেখ কামরুল ইসলাম এর মাধ্যমে আমাকে বারবাজার মাছের আড়তের ওখানে যেতে বলে। আমি গেলে আক্তারের স্ত্রী মিনা ও বোন পারুল কে ছেড়ে দেয়। আর বলে আক্তারকে ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছি একটি মামলার তদন্তের স্বার্থে। আপনারা কোন চিন্তা করবেন না।
এরপর গত ২৬ তারিখে রাত ৮ টার দিকে সময় টেলিভিশনের সংবাদে দেখতে পাই তার ভাইপো আক্তার কে ডাকাতি প্রস্তুতিকালে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই বক্তব্য দিচ্ছেন কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। যার মামলা নং- ৬০, তারিখ ২৬/১২/২০১৯।
মানববন্ধনে কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নের ১০ নং ওয়ার্ডের মেম্বর কামরুজ্জামান বলেন, আক্তারুজ্জামান যুবলীগের ইউনিয়ন কমিটির সহ-সভাপতি। তাকে এভাবে রাতের আঁধারে নিয়ে গিয়ে নিষিদ্ধ দলের সদস্য বানিয়ে মিথ্যা মামলা দেয়ায় আমরা হতাশ। এজন্য আমরা ন্যায় বিচার পেতে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছি। তাকে নিয়ে যাওয়ার রাতে আমি উপস্থিত ছিলাম। দুইজনকে আমার উপস্থিতি ছেড়ে দেওয়া হয় আর আক্তারকে নিয়ে যাওয়া হয়।
আব্দুল আজিজ (৭২) নামের এক বৃদ্ধ বলেন, আক্তার মাঠে কাজ করে। খুবই ভালো ছেলে। তাকে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে মিথ্যা মামলা দেওয়ায় আমরা হতাশ।
আটক আক্তারুজ্জামানের স্ত্রী মিনা বেগম বলেন, আমার স্বামী নিরপরাধ। ১৯ তারিখে জোর করে আমার স্বামী, ননদ ও আমাকে জোর করে মাইক্রোবাসে করে নিয়ে যায়। রাত দেড়টার দিকে আমাকে ও পারুলকে ছেড়ে দিলেও আমার স্বামীকে নিয়ে যায়। এরপর তাকে একটি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়।
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল আজীম আনার বলেন, আমি তাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি ও জানি। তার পরিবার সবসময় বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিল এবং আছে। বিগত নির্বাচনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার পরিবার দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আমার জানা মতে সে কোন রাষ্ট্রদ্রোহী কার্যকলাপে জড়িত নহে।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচাজ মাহফুজুর রহমান জানান, আক্তারকে আটক বা প্রশাসনের কোন টিম নিয়ে গেছে তা তিনি জানেন না। তবে ঢাকায় একটি মামলায় আটক রয়েছেন বলে ওই পরিবারের স্বজনদের মুখে তিনি শুনেছেন বলেও জানান।