কালীগঞ্জের যে গ্রামটি করোনাভাইরাস মোকাবেলায় মডেল
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে গ্রামবাসীরা নিজেরাই লকডাউন করেছেন। বাইরের কাউকে গ্রামে প্রবেশ করতে পারছেন না। স্থানীয়রা লকডাউন করায় দুস্থ ও দরিদ্র মানুষের তালিকা করে বাড়িতে পাঠানো হচ্ছে ১০ কেজি চাল, দুই কেজি ডাল ও এক লিটার তেলসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র। প্রয়োজন নিশ্চিত করে গ্রাম থেকে বাইরে এবং বাইরে থেকে গ্রামে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। বাইরে থেকে প্রবেশের সময় সমস্ত শরীরে জীবানুনাশক স্প্রে করে দেওয়া হচ্ছে।
মহামারী এই ভাইরাস থেকে রেহায় পেতে এমনই উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার আনন্দবাগ গ্রামবাসী।
গ্রামবাসীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার আনন্দবাগ গ্রামে প্রায় দুই হাজার মানুষের বসবাস। গ্রামের যুবকেরা সময় ভাগ করে রাস্তার মোড়ে কাজ করছেন। পুরো গ্রামটিকে নজদারিতে রাখা হয়েছে। গ্রামের মধ্যে তিনটি রাস্তায় হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও জীবানুনাশক স্প্রে নিয়ে বসে থাকে যুবকেরা। কেউ আসলে তাদেরকে দেওয়া হচ্ছে। গ্রামটি নিজেরাই লকডাউন করায় যা যা করণীয় সবকিছুই তারা করেছে।
সরকারি নলডাঙ্গা ভ‚ষণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রুহুল আমিন বলেন, গ্রামের সবাই করোনা ভাইরাস থেকে রেহায় পেতে এমন উদ্যোগ নিয়েছে। লকডাউন করার ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই করা হয়েছে। করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এভাবে চলবে। গ্রামের সকলে মিলে চেষ্টা করা হচ্ছে গ্রামটিকে সুরক্ষিত রাখার জন্য।
তিনি আরো জানান, দায়িত্ব পালনের জন্য এক একটি দল গঠন করা হয়েছে। তারা পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করছেন। দায়িত্ব পালনের সময় তারা নিজেরাও মুখে মাস্ক ব্যবহার করছেন।
গ্রামের যুবক জনি হোসেন জানান, করোনা ভাইরাসের হাত থেকে গ্রামটিকে সুরক্ষিত রাখতে আমরা এমন উদ্যোগ নিয়েছি। ২৬ মার্চ থেকে আনন্দবাগ গ্রামটিকে লকডাউন করা হয়েছে। এখন খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ গ্রামের বাইরে যেতে পারছে না। সবাইকে আমরা নজরদারিতে রাখছি।
গ্রামের বাসিন্দা স্বপন হোসেন জানান, লকডাউন করায় গ্রামের গরীব মানুষদের কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে চাল, ডাল, তেলসহ আনুষাঙ্গিক সবকিছুই দেওয়া হচ্ছে। করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত রাখতেই আমরা এমন উদ্যোগ নিয়েছি।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবর্ণা রাণী সাহা জানান, বিষয়টি তিনি অবগত আছেন। গ্রামবাসীর এই উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়। তবে সতর্ক থাকতে হবে, যেন জরুরি প্রয়োজন বাধাগ্রস্ত না হয়।