ঢাকা ০৭:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কালীগঞ্জে নারী পাচারকারী আটক নিয়ে লুকোচুরি!

বিশেষ প্রতিনিধি-

 

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে রেনু বেগম (৪২) নামে এক নারী পাচারকারী সন্দেহে পুলিশে দেয় স্থানীয় জনতা। এরপর থেকে বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় লুকোচুরি। রবিবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে শহরের মেইন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভিকটিম নারীকে সাজানো কথা বলতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। ভিকটিম কিশোরী (১৪) ঢাকার কেরাণীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা।

ভিকটিম ওই কিশোরী সবুজদেশ নিউজকে জানায়, সে গার্মেন্টেসে কাজ করতো। রেনু বেগম ও তারা কেরাণীগঞ্জ ইকুরিয়া এলাকায় ভাড়া থাকতেন। সেখান থেকে তাদের পরিচয়। এরপর তাকে ভালো কাজ দেওয়ার প্রলোভন দেখায় রেনু বেগম। ভালো কাজ দেওয়ার নাম করে গতকাল (১৮ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে কেরাণীগঞ্জ এলাকা থেকে তারা বাসে ওঠে। এরপর ভোরে কালীগঞ্জ নেমে সীমান্তের দিকে রওনা দেয়। হঠাৎ সে রেনু বেগমের কথাবার্তা শুনে বুঝতে পারেন তাকে ভারতে পাচার করা হচ্ছে। তখন তিনি কান্নাকাটি শুরু করেন। পরে বাধ্য হয়ে রেনু বেগম ও ভিকটিম কিশোরী আবার কালীগঞ্জে ফিরে আসে।

তিনি আরো বলেন, তারা দুইজন আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার জন্য কোহিনুর পরিবহনের কাউন্টারে বসে থাকে। সেখানে তাদের দুইজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এরপর স্থানীয় জনতা নারী পাচারকারীকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে এবং তার কথাবার্তার মধ্যে অসংলগ্নতা পেলে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে তাকে থানায় নিয়ে যায়।

ভিকটিম ওই কিশোরী অভিযোগ করে বলেন, দুপুর ১২ টার দিকে পুলিশ রেনু বেগমকে থানায় নিয়ে যায়। আর আমি কাউন্টারেই বসে থাকি। হঠাৎ বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে থানার এক পুলিশ আসে। পুলিশ এসে তাকে সাজানো কথা বলতে বাধ্য করে এবং ভিডিও ধারণ করে নিয়ে যায়। পুলিশ বলতে বলে, তোমার যা হয়েছে সেটা বলবা না। আমি যেটা বলতে বলি সেটা বলবা। তোমার আম্মু মারধর করেছে। এজন্য তুমি ফোন বন্ধ করে তার সাথে নিজে এসেছো। পুলিশ যা শিখিয়ে দিয়েছে সেটি আমি বলেছি।

প্রত্যক্ষদর্শী তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, তিনি সকালের দিকে বাস কাউন্টারে বসে ছিলেন। হঠাৎ দেখি ওই দুই নারীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে জানতে পারি ওই কিশোরীকে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে ঢাকার কেরাণীগঞ্জ এলাকা থেকে এনেছে। ওই কিশোরী কাউন্টারে অনেক কান্নাকাটি করে। পরে পুলিশ ডেকে পাচারকারী নারীকে সোপর্দ করা হয়।

কালীগঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, দুইজন দুই রকমের বক্তব্য দিয়েছে। আসলে ভারতে পাচারের বিষয় না। ওই মেয়ে রাগ করে তার সাথে এসেছে। দুই পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা থানায় এলে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। আর পুলিশের কথা শিখিয়ে দেওয়ার বিষয়টি ভিত্তিহীন। ওই কিশোরী কিছুটা সাইকো টাইপের।

সবুজদেশ/এসএএস

About Author Information
আপডেট সময় : ১০:২৫:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫
৭১ Time View

কালীগঞ্জে নারী পাচারকারী আটক নিয়ে লুকোচুরি!

আপডেট সময় : ১০:২৫:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

 

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে রেনু বেগম (৪২) নামে এক নারী পাচারকারী সন্দেহে পুলিশে দেয় স্থানীয় জনতা। এরপর থেকে বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় লুকোচুরি। রবিবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে শহরের মেইন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভিকটিম নারীকে সাজানো কথা বলতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। ভিকটিম কিশোরী (১৪) ঢাকার কেরাণীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা।

ভিকটিম ওই কিশোরী সবুজদেশ নিউজকে জানায়, সে গার্মেন্টেসে কাজ করতো। রেনু বেগম ও তারা কেরাণীগঞ্জ ইকুরিয়া এলাকায় ভাড়া থাকতেন। সেখান থেকে তাদের পরিচয়। এরপর তাকে ভালো কাজ দেওয়ার প্রলোভন দেখায় রেনু বেগম। ভালো কাজ দেওয়ার নাম করে গতকাল (১৮ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে কেরাণীগঞ্জ এলাকা থেকে তারা বাসে ওঠে। এরপর ভোরে কালীগঞ্জ নেমে সীমান্তের দিকে রওনা দেয়। হঠাৎ সে রেনু বেগমের কথাবার্তা শুনে বুঝতে পারেন তাকে ভারতে পাচার করা হচ্ছে। তখন তিনি কান্নাকাটি শুরু করেন। পরে বাধ্য হয়ে রেনু বেগম ও ভিকটিম কিশোরী আবার কালীগঞ্জে ফিরে আসে।

তিনি আরো বলেন, তারা দুইজন আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার জন্য কোহিনুর পরিবহনের কাউন্টারে বসে থাকে। সেখানে তাদের দুইজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এরপর স্থানীয় জনতা নারী পাচারকারীকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে এবং তার কথাবার্তার মধ্যে অসংলগ্নতা পেলে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে তাকে থানায় নিয়ে যায়।

ভিকটিম ওই কিশোরী অভিযোগ করে বলেন, দুপুর ১২ টার দিকে পুলিশ রেনু বেগমকে থানায় নিয়ে যায়। আর আমি কাউন্টারেই বসে থাকি। হঠাৎ বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে থানার এক পুলিশ আসে। পুলিশ এসে তাকে সাজানো কথা বলতে বাধ্য করে এবং ভিডিও ধারণ করে নিয়ে যায়। পুলিশ বলতে বলে, তোমার যা হয়েছে সেটা বলবা না। আমি যেটা বলতে বলি সেটা বলবা। তোমার আম্মু মারধর করেছে। এজন্য তুমি ফোন বন্ধ করে তার সাথে নিজে এসেছো। পুলিশ যা শিখিয়ে দিয়েছে সেটি আমি বলেছি।

প্রত্যক্ষদর্শী তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, তিনি সকালের দিকে বাস কাউন্টারে বসে ছিলেন। হঠাৎ দেখি ওই দুই নারীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে জানতে পারি ওই কিশোরীকে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে ঢাকার কেরাণীগঞ্জ এলাকা থেকে এনেছে। ওই কিশোরী কাউন্টারে অনেক কান্নাকাটি করে। পরে পুলিশ ডেকে পাচারকারী নারীকে সোপর্দ করা হয়।

কালীগঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, দুইজন দুই রকমের বক্তব্য দিয়েছে। আসলে ভারতে পাচারের বিষয় না। ওই মেয়ে রাগ করে তার সাথে এসেছে। দুই পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা থানায় এলে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। আর পুলিশের কথা শিখিয়ে দেওয়ার বিষয়টি ভিত্তিহীন। ওই কিশোরী কিছুটা সাইকো টাইপের।

সবুজদেশ/এসএএস