ঢাকা ০৮:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫, ১৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কালীগঞ্জে ফুল এখন ছাগলের খাদ্য, বিপাকে চাষীরা (ভিডিও)

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:০৩:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২১
  • ৭৩৩ বার পড়া হয়েছে।

বিশেষ প্রতিনিধিঃ

মহামারি করোনাভাইরাসে সারা পৃথিবীই আজ বিপর্যস্ত। এ দেশেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে পড়েছে করোনার বিরূপ প্রভাব। সম্প্রতি দুই সপ্তাহের সর্বাত্মক লকডাউনে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন ফুলনগরী খ্যাত ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের ফুলচাষী ও ব্যবসায়ীরা।

এ বছর ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ২৫ হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ হয়েছিল। প্রতি বছর সব থেকে বেশি ফুলের চাষ হয় কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নে।

সরেজমিন ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, ফুলচাষীরা গাছ বাঁচাতে ক্ষেত থেকে গাঁদা, গোলাপ, জারবেরা, রজনীগন্ধা ফুল ছিড়ে ফেলে দিচ্ছেন। আর সেই ফুল খাচ্ছে গরু অথবা ছাগলে। সর্বাত্মক লকডাউনে যানবাহন না চলায় ফুল তুলে ফেলে দিতে হচ্ছে তাদের। 

কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর গ্রামের ফুলচাষী এসএম টিপু সুলতান জানান, এ বছর ৬ বিঘা জমিতে জারবেরা, ২ বিঘা জমিতে ভুট্টা ফুল, ২ বিঘা জমিতে গোলাপ, ১ বিঘা জমিতে গ্লাডিওলাস, ২ বিঘা জমিতে চন্দ্রমল্লিকা ও ২ বিঘা জমিতে হাইব্রিড রজনী ফুল চাষ করেছেন। আম্পান ও করোনার কারণে তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। 

তিনি আরো জানান, যানবাহন না চলার কারণে কোথাও ফুল বিক্রি করতে পারেননি। এজন্য ফুল গাছ বাঁচাতে ফুল ছিঁড়ে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। সরকারের কাছে ফুলচাষীদের জন্য বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা করার দাবিও জানান তিনি। 

উপজেলার বড় ঘিঘাটি গ্রামের রাকিবুল ইসলাম রকি জানান, রজনী ২ বিঘা ও গাঁদা ফুল ১ বিঘা জমিতে চাষ করেছেন। তেমন ফুল তিনি বিক্রি করতে পারেননি। সবেমাত্র বিক্রি করা শুরু করেছিলেন। এরমধ্যে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। 

আরেক চাষী শফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি ১ বিঘা জমিতে গাঁদা ফুলের চাষ করেছি। বিক্রির সময়ই লকডাউন। কিন্তু করোনার কারণে কোন বেচা বিক্রি নেই। এদিকে ফুল গাছে থাকলে গাছ নষ্ট হয়ে যায় তাই বাধ্য হয়ে খরচ করে ফুল তুলে ফেলে দিচ্ছি। এতে লাভের পরিবর্তে লোকসান হচ্ছে। তারপর আশায় আছি করোনা চলে গিয়ে স্বাভাবিক হলে আবারো ফুল বিক্রি হবে। 

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার শিকদার মো. মোহায়মেন আক্তার জানান, করোনাভাইরাসের কারণে ফুলচাষীরা চরম বিপদে পড়েছেন। তারা ফুল বিক্রি করতে পারছেন না। আবার ক্ষেতে ফুল রাখতেও পারছেন না। বাধ্য হয়ে গরু ছাগল দিয়ে খাওয়াচ্ছেন। অনেকে ফুল তুলে ফেলে দিচ্ছেন। ফুলচাষ দেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখলেও দ্রুত পঁচনশীল হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন এই অঞ্চলের কৃষকরা। কেউ যদি সহজ শর্তে ঋণ নিতে চায় তাহলে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে। 

সবুজদেশ/এসএএস

দেখুন ভিডিও…

Tag :
জনপ্রিয়

কালীগঞ্জে ফুল এখন ছাগলের খাদ্য, বিপাকে চাষীরা (ভিডিও)

Update Time : ০৮:০৩:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২১

বিশেষ প্রতিনিধিঃ

মহামারি করোনাভাইরাসে সারা পৃথিবীই আজ বিপর্যস্ত। এ দেশেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে পড়েছে করোনার বিরূপ প্রভাব। সম্প্রতি দুই সপ্তাহের সর্বাত্মক লকডাউনে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন ফুলনগরী খ্যাত ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের ফুলচাষী ও ব্যবসায়ীরা।

এ বছর ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ২৫ হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ হয়েছিল। প্রতি বছর সব থেকে বেশি ফুলের চাষ হয় কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নে।

সরেজমিন ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, ফুলচাষীরা গাছ বাঁচাতে ক্ষেত থেকে গাঁদা, গোলাপ, জারবেরা, রজনীগন্ধা ফুল ছিড়ে ফেলে দিচ্ছেন। আর সেই ফুল খাচ্ছে গরু অথবা ছাগলে। সর্বাত্মক লকডাউনে যানবাহন না চলায় ফুল তুলে ফেলে দিতে হচ্ছে তাদের। 

কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর গ্রামের ফুলচাষী এসএম টিপু সুলতান জানান, এ বছর ৬ বিঘা জমিতে জারবেরা, ২ বিঘা জমিতে ভুট্টা ফুল, ২ বিঘা জমিতে গোলাপ, ১ বিঘা জমিতে গ্লাডিওলাস, ২ বিঘা জমিতে চন্দ্রমল্লিকা ও ২ বিঘা জমিতে হাইব্রিড রজনী ফুল চাষ করেছেন। আম্পান ও করোনার কারণে তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। 

তিনি আরো জানান, যানবাহন না চলার কারণে কোথাও ফুল বিক্রি করতে পারেননি। এজন্য ফুল গাছ বাঁচাতে ফুল ছিঁড়ে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। সরকারের কাছে ফুলচাষীদের জন্য বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা করার দাবিও জানান তিনি। 

উপজেলার বড় ঘিঘাটি গ্রামের রাকিবুল ইসলাম রকি জানান, রজনী ২ বিঘা ও গাঁদা ফুল ১ বিঘা জমিতে চাষ করেছেন। তেমন ফুল তিনি বিক্রি করতে পারেননি। সবেমাত্র বিক্রি করা শুরু করেছিলেন। এরমধ্যে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। 

আরেক চাষী শফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি ১ বিঘা জমিতে গাঁদা ফুলের চাষ করেছি। বিক্রির সময়ই লকডাউন। কিন্তু করোনার কারণে কোন বেচা বিক্রি নেই। এদিকে ফুল গাছে থাকলে গাছ নষ্ট হয়ে যায় তাই বাধ্য হয়ে খরচ করে ফুল তুলে ফেলে দিচ্ছি। এতে লাভের পরিবর্তে লোকসান হচ্ছে। তারপর আশায় আছি করোনা চলে গিয়ে স্বাভাবিক হলে আবারো ফুল বিক্রি হবে। 

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার শিকদার মো. মোহায়মেন আক্তার জানান, করোনাভাইরাসের কারণে ফুলচাষীরা চরম বিপদে পড়েছেন। তারা ফুল বিক্রি করতে পারছেন না। আবার ক্ষেতে ফুল রাখতেও পারছেন না। বাধ্য হয়ে গরু ছাগল দিয়ে খাওয়াচ্ছেন। অনেকে ফুল তুলে ফেলে দিচ্ছেন। ফুলচাষ দেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখলেও দ্রুত পঁচনশীল হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন এই অঞ্চলের কৃষকরা। কেউ যদি সহজ শর্তে ঋণ নিতে চায় তাহলে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে। 

সবুজদেশ/এসএএস

দেখুন ভিডিও…