ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নাকোবাড়িয়া এলাকায় সামাজিক আধিপত্ত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে মহব্বত আলী (৫৫) নামে একজন নিহত হয়। রবিবার (০১ জুন) সকাল ৮ টার দিকে নাকোবাড়িয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মহব্বত আলী উপজেলার নাকোবাড়িয়া গ্রামের মৃত হবিবার রহমানের ছেলে। এ ঘটনায় আহত হয় ৪ জন। নিহতের ছেলে ইনামুল হক বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, পূর্বপরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র (চাপাতি, হাঁসুয়া, লোহার রড, লাঠি) নিয়ে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে তার পিতাকে কুপিয়ে জখম করে। হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
এ মামলায় যাদেরকে আসামি করা হয়েছে তারা হলেন, দামোদারপুর গ্রামের মৃত এলাহী মুন্সির ছেলে মো: নুরুল ইসলাম (৬২), পারখালকুলা গ্রামের ইমারত মন্ডলের ছেলে আরিফ মন্ডল (৪০), খোদতালিয়ান গ্রামের ইকবাল মুন্সির ছেলে রনি মুন্সি (৪২), কোলা গ্রামের আমজাদ হোসেন মোল্লার ছেলে আব্দুল জলিল (৪৫), খালকুলা গ্রামের ওমর আলীর ছেলে মো: সুমন (৩০), কাবিলপুর গ্রামের নব্বাস মোল্লার ছেলে বরকত মেম্বর(৫৫), মো: সোহরাব বিশ্বাসের ছেলে মুরাদ বিশ্বাস (৫০), নুরুল ইসলামের ছেলে মেহেদী হাসান (২৫), উল্ল্যা গ্রামের গোলাম নবী মুন্সির ছেলে বাবলু মিয়া (৩৫), আলতাফ হোসেনের ছেলে মো: আরিফ(৩২), গোপলাপুর গ্রামের মসলেম মোল্লার ছেলে আলাউদ্দিন (৫০), নুর আলীর ছেলে বিপ্লব (৩০), ইউসুফ শেখের ছেলে মাহাফুজ হোসেন (৫৫), দলিল উদ্দিনের ছেলে লিটন আলী বিশ্বাস (৪০), উল্ল্যা গ্রামের আমিন বিশ্বাসের ছেলে ছালাম বিশ্বাস (৪৮), বরকত উল্লা মন্ডলের ছেলে মজিদ মন্ডল (৪০), আজিজ মন্ডলের ছেলে ফরুক হোসেন (৪৫), নুর আলী মন্ডলের ছেলে সাজ্জাদ মন্ডল (৪৫), পারখালকুলা গ্রামের আজিজ মন্ডলের ছেলে ফিরোজ আলী (৪২), শুকুর আলীর ছেলে মোফাজ্জেল মেম্বর (৫০), মোস্তাফার ছেলে আশরাফ মহুরী(৫০), মনার ছেলে অসীম (৩৮), পারখালকুলা গ্রামের মাওলার ছেলে জামিরুল (৪৫), গোপালপুর গ্রামের মসলেম মোল্লার ছেলে বাবলুর রহমান ঘেনা (৪৫), ইকবাল মুন্সির ছেলে ছনি মুন্সি (২৮), রব মোল্লার ছেলে আফাঙ্গীর মোল্লা (৩৫), আদম মোল্লার ছেলে তরিকুল ইসলাম(৪৫), সুলতান মোল্লার ছেলে ইদু মোল্লা (৫৫), সিদ্দিক মোল্লার ছেলে মহব্বত মোল্লা (৩২), মৃত গোলাম আলীর ছেলে মোশারেফ শেখ (৫০), খোদতালিয়ান গ্রামের ইকবাল মুন্সীর ছেলে বনি মুন্সী(২৭), খালকুলা গ্রামের ছাত্তার মন্ডলে ছেলে মোঃ এরশাদ মন্ডল (৪২), মইনুদ্দিন খাজার ছেলে সবুর খাজা (৩৮), হাসেম মুন্সীর ছেলে সায়েম (৪৫), আকবর মুসল্লীর ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন মুসল্লী (৪০) ও দিলাঙ্গীর মুসল্লী (৩৫), ইরফানের ছেলে হাবিব (২২), বড় তালিয়ান গ্রামের মনিরুল ইসলামের ছেলে সাদ্দাম(৩৮), রব্বান মন্ডলের ছেলে আতাউর মন্ডল(৫০), মৃত ছাব্দুল মন্ডলের ছেলে বিল্লাল মন্ডল (৫০), দুদু বিশ্বাসের ছেলে বেলায়েত বিশ্বাস(৫৫), নাটোপাড়া গ্রামের মৃত আঃ গফুর মোল্লার ছেলে বছির মোল্লা (৫৫), কাবিলপুর গ্রামের মৃত লোকমান বিশ্বাসের ছেলে নুরো বিশ্বাস (৫৮), আবুল শেখের ছেলে বাবলু (৫০), বাগডাঙ্গা গ্রামের খোকনের ছেলে দিপু (২৮), দামোদরপুর গ্রামের আবু সাঈদের ছেলে জাফর ইকবল(৪৫), তেঘরীহুদা গ্রামের আনসার মোল্লার ছেলে আঃ রাজ্জাক মোল্লা(৫০), দৌলতপুর গ্রামের আয়নাল মোল্লার ছেলে শাহজান(৫৫), খালকুলা গ্রামের মৃত ওমর আলীর ছেলে ইছাহক আলী (৩৫), খালকুলা গ্রামের দলিল উদ্দিনের ছেলে ইব্রাহিম (৩৭), গোলাম খার ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান(৩৫), আব্দুল মন্ডলের ছেলে জিল্লু মন্ডল (৪০), গোপালপুর গ্রামের জামাত আলীর ছেলে আলাউদ্দীন(৩৫), রেজাউল শেখের ছেলে আলমগীর শেখ (৪৫), ছোট ডাউটি গ্রামের কিতাবদী মন্ডলের ছেলে মোঃ ফারুক মন্ডল(৪৫), কাবিলপুর গ্রামের মৃত আফসার খার ছেলে মফিজ মেম্বার (৫০), খঞ্জাপুর গ্রামের মন্তেজ শেখর ছেলে মোঃ শহীদ শেখ (৪৫), বড় তালিয়ান গ্রামের সিকমালের ছেলে জামাত আলী (৩০)। এছাড়াও অজ্ঞাত আরও ৩০/৪০ জনকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে জামাল ইউনিয়নের নজরুল ইসলামের সঙ্গে আরিফ হোসেনের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। রবিবার উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে অন্তত ৫ জন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে মহব্বত হোসেন নামের একজনের অবস্থা গুরুতর হলে তাকে ফরিদপুরে রেফার্ড করা হয়। দুপুরে ফরিদপুর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর থেকে উপজেলার জামাল ইউনিয়নজুড়ে ভাঙচুর-লুটপাট অব্যাহত রয়েছে।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে নিহতের ছেলে বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সবুজদেশ/এসইউ