ঝিনাইদহঃ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের বারোবাজার। এখানে রয়েছে সুলতানি আমলের ১৯টি মসজিদ। যা মাটির নিচে ছিল। এর মধ্যে গলাকাটা মসজিদ অন্যতম। ২১ ফুট লম্বা ও ১৮ ফুট চওড়া মসজিদটি খনন করা হয় ১৯৯২-৯৩ সালে৷

জনশ্রুতি রয়েছে, বারোবাজারে এক অত্যাচারী রাজা ছিলেন৷ ‍যিনি প্রজাদের বলি দিয়ে মসজিদের সামনের দিঘিতে ফেলে দিতেন। এ কারণেই এর নাম হয় গলাকাটা। তবে ইতিহাসগত এর কোনো তথ্য নেই।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার এলাকার গলাকাটা মসজিদ।
ছবিঃ কালীগঞ্জ আঞ্চলিক ভাষা গ্রুপ, ঝিনাইদহ।

মসজিদটি বারোবাজার শহর থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পশ্চিমে। এ মসজিদে রয়েছে ছয়টি গম্বুজ। ভেতরে রয়েছে দুটি কষ্টিপাথরের মিনার। মসজিদটি খনন করার সময় একটি হাতে লেখা কোরআন শরীফ ও একটি তলোয়ার পাওয়া যায়। যা মসজিদের ভেতরে সংরক্ষিত।

বারোবাজার প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রক্ষণাবেক্ষণ আন্দোলনের অন্যতম সদস্য আলমগীর হোসেন বলেন, গলাকাটা মসজিদের মতো এ এলাকার অনেক মসজিদ দীর্ঘদিন ধরে মাটির নিচে ছিল। স্থানটি ছিল উঁচু ঢিবি। এ ঢিবির ওপর জঙ্গল ও বড় বড় গাছপালা গজিয়ে উঠেছিল।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার এলাকার গলাকাটা মসজিদের দীঘি।
ছবিঃ কালীগঞ্জ আঞ্চলিক ভাষা গ্রুপ, ঝিনাইদহ।

তিনি বলেন, খনন করার সময় প্রাপ্ত শিলালিপি দেখে জানা যায় মসজিদগুলো সুলতানি শাসন আমলের তৈরি। এক সময় এ জনপদে বাস করতেন প্রাচীন রাজারা।

বারোবাজার প্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষা আন্দোলনকারীদের সদস্য সনজিত কুমার জানান, তারা বৃদ্ধদের মুখে গল্প শুনেছেন, মসজিদের পাশের দিঘির ওপর দিয়ে রাতে গলাকাটা ঘোড়া চলতো। তাই মানুষ এর নাম দিয়েছে গলাকাটা মসজিদ। যে নাম এখনো রয়েছে।

মসজিদে নামাজ পড়তে আসা বৃদ্ধ আব্দুল খালেক জানান, সুলতানি আমলের মসজিদটি দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসেন। তিনি গলাকাটা মসজিদের নিদর্শনগুলোর যথাযথ সংরক্ষণের ব্যবস্থার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here