বিশেষ প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের লেদ শ্রমিক শাহীন হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত প্রধান আসামি জসিম উদ্দিন ওরফে বাবুকে আটক করেছে পুলিশ। গত শনিবার দিবাগত রাতে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া গ্রাম থেকে আটক করা হয়।
আটক জসিম উদ্দিন ওরফে বাবু উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মমিন উল্লার ছেলে। এ ঘটনায় মিজানুর রহমান বাবুল ও জসিম উদ্দিন ওরফে বাবুকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত ৬জুন নিহত শাহীনের বাবা চান মিয়া বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

পুলিশের ভাষ্য, উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মিজানুর রহমান বাবুলের কাছে ৮০ টাকা পাওনা ছিল নেওয়াজ শরীফ নামে একজনের। দীর্ঘদিন সেই টাকা পরিশোধ করছিলেন না মিজানুর। হঠাৎ ৬জুন সেই টাকা পরিশোধ করেন। ওই টাকার মধ্যে একটি ২০ টাকার রক্তমাখা নোট ছিল। ওই টাকা বদলে দিতে অনুরোধ করলেও মিজানুর তা বদলে দেননি।
পুলিশ জানায়, নেওয়াজ বন্ধুদের সাথে রক্তমাখা টাকার কথা বলেছিলেন। সেই কথা চলে যায় পুলিশের কাছে। আর এর সুত্র ধরেই কালীগঞ্জে আলোচিত শাহনি হত্যায় জড়িত দুইজনকে আটক করে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে হত্যাকাণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ আলামত। গত সোমবার মিজানুর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। টাকা ছিনতাইয়ের জন্যই শাহীনকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গত ৬ জুন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের কলাক্ষেত থেকে শাহীন হোসেন (৩৩) নামে এক লেদ শ্রমিকের বিবস্ত্র লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত শাহীন স্থানীয় লেদের দোকানে কাজ করতেন বলে জানান এলাকাবাসী।
নিহতের বাবা চান মিয়া জানান, গত ৫ জুন রাত ১১ টার দিকে দোকান বন্ধ করে বাড়ির পথে রওনা দেন। কিন্তু তার ছেলে আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। পরদিন এলাকাবাসী কলাক্ষেতে লাশ দেখতে পেয়ে খবর দেয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সাগর শিকদার জানান, প্রযুক্তির মাধ্যমে ও বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়া এলাকা থেকে জসিম হোসেন ওরফে বাবুকে আটক করা হয়। হত্যাকাণ্ডের সকল আলামত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি।

তিনি আরো জানান, শাহীনের মরদেহ যখন উদ্ধার করা হয় তখন পরনে কোন কাপড় ছিল না। এ সময় অনেকেই ধারণা করেছিল এর পেছনে কোন নারী ঘটিত কারণ থাকতে পারে। কিন্তু তেমন কিছুই পাওয়া যায়নি। পরে টাকায় রক্তের সুত্র ধরে পুলিশ অনুসন্ধান শুরু করে। প্রথমে গ্রেফতার হন মিজানুর। পরে ১২ জুন রাতে ঠাকুরগাঁও থেকে জসিম ওরফে বাবুকে গ্রেফতার করা হয়।
গত রোববার বিকেল ৫ টার দিকে কালীগঞ্জ থানার ওসি মুহা: মাহফুজুর রহমান মিয়াসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে প্রধান আসামিকে সাথে করে হত্যাকাণ্ডের আলামত উদ্ধারে উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে যায় পুলিশ। বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের বিভিন্ন মাঠ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ক্ষুর, দড়ি, নিহত শাহীনের প্যান্ট, টর্চলাইট ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের আলামত উদ্ধারের সময় প্রধান আসামি জসিম হোসেন ওরফে বাবু জানান, তিনি এবং বাবুল যে ভুল করেছে এমন যেন আর কেউ না করে। হত্যার পর বাবুল তাকে ৬ হাজার টাকা দেয় বিভিন্ন দোকানে দেওয়ার জন্য।
ভিডিও দেখুন…