উচ্চ মাধ্যমিকে সরকার নির্ধারিত বেতন ২০ টাকা আর স্নাতকে মাত্র ২৫ টাকা। অথচ ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের সরকারি মাহতাব উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ কর্তৃপক্ষ সরকারী নির্দেশনা উপেক্ষা করে ২০ টাকার স্থলে ১২০ আর ২৫ টাকার স্থলে নিচ্ছিলেন ৩’শ টাকা। কলেজ কর্তৃপক্ষের এমন কর্মকান্ডের প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে মানববন্ধন, প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ,অধ্যক্ষের বরাবর স্মারকলিপি প্রদানসহ বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী অব্যাহত রেখেছিল। অবশেষে ২৭ জানুয়ারী সংগঠনটির যৌক্তিক এ দাবি মেনে নিয়ে নতুন বেতন কাঠামো ঘোষনা করেছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।

সূত্রে জানাগেছে, সোমবার দুপুরে কলেজটির অফিস কক্ষে এক সভায় ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের ১২০ টাকার স্থলে মাত্র ২০ টাকা এবং স্নাতক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ৩০০ টাকা বেতনের স্থলে ২৫ টাকা বেতন নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে। আর এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলেজটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনোজ কান্তি বিশ্বাস।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কলেজটি ২০১৮ সালের আগষ্ট মাসে সরকারিকরণ করা হয়। দীর্ঘ ছয় বছর অতিবাহিত হলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ বেসরকারি নিয়মেই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন আদায় করে আসছিল। এর প্রতিবাদে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কলেজ, পৌর ও উপজেলা ছাত্রদলের যৌথ উদ্যোগে সাধারন শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে সকলের স্বার্থে আন্দোলনে নামে। সংগঠনটি দফায় দফায় নানা কর্মসূচী পালন করে আসছিল। এছাড়াও অধ্যক্ষ বরাবর সরকারি নিয়মে বেতন নির্ধারনে এবং অন্যান্য দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

এমইউ কলেজ শাখার যুগ্ম আহবায়ক ইফতিজাহান জানান, ছাত্রদল সব সময় শিক্ষার্থীদের কল্যানে কাজ করে থাকে। কলেজ কর্তৃৃপক্ষ যে খামখেয়ালীভাবে বেতন আদায় করছিলেন তা ছিল শিক্ষার্থীদের ওপর এক ধরনের জুলুম। তিনি বলেন, যার প্রতিবাদ করে আজ সুফল আদায় করা হয়েছে সেখানে সকলের স্বার্থ রয়েছে।
পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক জুয়েল রানা জানান, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া সংগঠন। তারা সাধারন ছাত্রদের স্বার্থ রক্ষায় সব সময় নিজেদেরকে উজাড় করে দেয়। আজ দাবি আদায় হয়েছে। ফলে তিনি মনে করেন প্রতিষ্ঠানটির সাধারন শিক্ষার্থীসহ ছাত্রদল সফল হয়েছে।

উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মারুফ বিল্লাহ বলেন, সব সময়ই সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষায় ছাত্রদল সব সময়েই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আন্দোলন সংগ্রামের পর কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের ন্যায্য দাবি মানতে বাধ্য হয়েছে।

কলেজটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনোজ কান্তি বিশ্বাস জানান, ২০১৮ সালে কলেজটি সরকারি করা হলেও এখন পর্যন্ত সকল শিক্ষক ও কর্মচারীরা সরকারি হতে পারেননি। ডিজি থেকে মৌখিকভাবে বেসরকারি ভাবে বেতন আদায়ের নির্দেশনা দেওয়া ছিল। আমরা সে ভাবেই বেতন আদায় করছিলাম। কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে এখন থেকে অন্যান্য সরকারি কলেজের নিয়মে বেতন আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যা ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস থেকে কার্যকর হবে। বাকিরা টাকা ফেরত পাবেন।

সবুজদেশ/এসইউ