ঢাকা ০৫:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৩ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কালীগঞ্জে ৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণ, ধর্ষককে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৯:৫১:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুন ২০২১
  • ৭০০ Time View

ধর্ষক সেলিম

বিশেষ প্রতিনিধিঃ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার সুবিতপুর গ্রামে ৭ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষণের অভিযোগ ওঠায় ধর্ষক সেলিমকে সালিসের মাধ্যমে ৮০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়।

ঘটনাটি ঘটেছে কালীগঞ্জ উপজেলার ১১ নং রাখালগাছি ইউনিয়নের সুবিতপুর গ্রামে। ইতিমধ্যে এই ধর্ষণ ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন অভিযুক্ত সেলিম হোসেন। সেলিম ওই গ্রামের নুর মোহাম্মদের ছেলে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ভিকটিমের মা মঙ্গলবার দুপুরে গনমাধ্যম কর্মীদের জানান, গত শুক্রবার (২৮ মে) পান আনার জন্য আমার শিশু কন্যাকে পাশের বাড়ির সেলিম চাচার বাড়িতে পাঠায়। মেয়েকে আসতে দেরি দেখে তিনি এগিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর মেয়েকে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে বাড়ি ফিরতে দেখে তাকে জিজ্ঞাসা করি। দেখি তার পাজামাটি রক্তে ভেজা। সেলিমের বাড়িতে গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তখনও তিনি ঘামছিলেন।

ভিকটিমের মা আরো জানান, পাড়া প্রতিবেশির কথা মতো পরে আমি বিষয়টি চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম মন্টুর কাছে বলি। তিনি আমার বাড়িতে এসে শিশু কন্যাটিকে ঘরের মধ্যে নিয়ে যৌনাঙ্গে হাত দিয়ে বলেন, কোন আলামত নেই। পরে ইউনিয়ন পরিষদের সভাকক্ষে এক সালিসে প্রথমে অভিযুক্ত সেলিমকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু তিনি দিতি অপরাগতা প্রকাশ করলে শেষমেষ ৮০ হাজার টাকায় রফা হয়।

তিনি আরো জানান, টাকার অভাবে মেয়েকে চিকিৎসা করাতে পারিনি। ওভাবেই বাসায় রেখে দিয়েছি। সালিসের কোন টাকা এখনো পাইনি।

অভিযুক্ত মোহাম্মদ সেলিম হোসেন গনমাধ্যম কর্মীদের জানান, সালিসে ৮০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা। চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম মন্টুর কাছে ইতিমধ্যে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছি। বাকী ৩০ হাজার টাকা দেবার জন্য সময় নিয়েছি।

ধর্ষণ না করেও কেন জরিমানা দিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে সেলিম জানান, এ নিয়ে থানা পুলিশ করার কথা ওঠে। তাছাড়া চেয়ারম্যানের কথা আমি ফেলতে পারিনি, তাই টাকা দিয়েছি।

সুবিতপুর গ্রামের মেম্বর আবুল হাসেম জানান, ঘটনাটি গ্রামের মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পাড়ার কারণে মঙ্গলবার সকালে আমি শুনেছি যে একটি শিশু ধর্ষিত হয়েছে। কিন্তু পরিবারটি অসহায় হতদরিদ্র হওয়ায় থানা পুলিশের কাছে যেতে ভয় পাচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে রাখালগাছি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম মন্টু মঙ্গলবার বিকালে জানান, ধর্ষণের অভিযোগ পেয়ে সুবিতপুর গ্রামে গিয়েছিলাম। শিশুটির মা যখন বলছিলো রক্ত আসছে তখন আমি বলেছিলাম কৈ রক্ত তো আসছে না। তিনি বলেন, আমি ধর্ষকের কাছ থেকে কোন টাকা গ্রহন করিনি। তবে ভিকটিমের পরিবার যদি আইনগত সহায়তা চায় তবে আমি দিতে প্রস্তুত রয়েছি। চেয়ারম্যান বলেন, ভিকটিমের পরিবার ডাক্তারী পরীক্ষা বা থানায় যেতে রাজি নয়।

বিষয়টি নিয়ে কালীগঞ্জ থানার ওসি মাহফুজুর রহমান মিয়া জানান, এমন কোন অভিযোগ এখনো থানায় আসেনি। তবে ভিকটিমের পরিবার যদি মামলা করতে ভয় পায় তবে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে। তাও অপরাধীকে কোন ছাড় দেবে না পুলিশ। ওসি ভিকটিম ও অভিযুক্তের নাম ঠিকানা সাংবাদিকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেন।

(ভিকটিমের মা, ধর্ষক ও চেয়ারম্যানের অডিও-ভিডিও বক্তব্য সবুজদেশ নিউজ ডটকমের কাছে সংরক্ষিত আছে।)

Tag :