কালীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন: কে হচ্ছেন নৌকার মাঝি?
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
দেশে ধাপে ধাপে পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথম ধাপের নির্বাচন ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। এখনো কালীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়নি। কিন্তু ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে বইতে শুরু করেছে ভোটের হাওয়া। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করতে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা শুরু করেছেন দৌড়ঝাপ। জেলা থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে নিজেদের জাহির করছেন রীতিমত। কালীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে ৭জন প্রার্থী নৌকা প্রতিক নিয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দিতা করার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এখন আশায় আছেন আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দিতা করতে কে পাচ্ছেন দলের মনোনয়ন। নেতাকর্মীরা মনে করেন, যার আমলনামা ভালো, দলের জন্য নিবেদিত, ত্যাগী তাকেই মনোনয়ন দিবেন দলীয় প্রধান। সর্বত্রই এখন আলোচনা কে হচ্ছেন নৌকার মাঝি?
দলীয় সুত্রে জানা গেছে, মেয়র পদে এ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ৭ জন প্রার্থী জেলা কমিটির কাছে জীবন বৃত্তান্ত প্রদান করেছেন। তারা হলেন, বর্তমান মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফুল আলম আশরাফ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মতিয়ার রহমান মতি, সাবেক মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান বিজু, জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন সোহেল, পৌর কাউন্সিলর ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রেজাউল করিম রেজা, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহবায়ক সাহেদ কবির লিমন ও পৌর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক প্রশান্ত কুমার খাঁ।
জানা গেছে, কালীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য ৭জন মেয়রপ্রার্থীর মধ্যে ২ জন ভোটযুদ্ধে এবারই প্রথম নামতে চান। বর্তমান মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ এর আগে পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। এরপর তখনকার মেয়র মকছেদ আলী বিশ্বাস মৃত্যুবরণ করায় ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মোস্তাফিজুর রহমান বিজুকে প্রায় ৮ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে নৌকার প্রার্থী আশরাফুল আলম আশরাফ বিজয়ী হন। মতিয়ার রহমান মতি এর আগে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু পুনরায় একই পদে ভোট করতে গিয়ে শিবলী নোমানীর কাছে পরাজিত হন। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের গঠনের পর কালীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন সোহেল জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রেজাউল করিম রেজা পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে দুইবার নির্বাচিত হয়েছেন। পৌর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক প্রশান্ত কুমার খাঁ এর আগে কয়েকবার কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন। এছাড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহবায়ক সাহেদ কবির লিমন এবারই প্রথম পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাচ্ছেন।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা মনে করেন, পৌরবাসীর ভাগ্যন্নয়নে যিনি কাজ করবেন তাকেই দল মনোনয়ন দিবে। আর দল যাকে মনোনয়ন দিবে নেতাকর্মীরা তার পক্ষেই কাজ করবো। এখন দলের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে।
পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও বর্তমান মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ বলেন, দলের নির্দেশনার প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। যে কেউ মনোনয়ন চাইতেই পারে। দল যাকে ভালো মনে করবে তাকে মনোনয়ন দিবে। আমি পৌরসভার মেয়র পদে মাত্র ২ বছর দায়িত্ব পালন করেছি। এরমধ্যে যতটুকু সম্ভব পৌরবাসীর উন্নয়নের জন্য কাজ করেছি।
আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী জাহাঙ্গীর হোসেন সোহেল বলেন, দল আমাকে মনোনয়ন দিলে এই পৌরসভাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিবো। দল যাকে মনোনয়ন দিবে তার পক্ষেই কাজ করবো। মেয়র নির্বাচিত হলে পৌরবাসীর সাথে আলোচনা করে অসুবিধা ও সমস্যাগুলো সমাধান করবো। অবহেলিত কালীগঞ্জ পৌরসভাকে জনগণের সহযোগিতায় আধুনিক পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলবো।
মনোনয়ন প্রত্যাশী সাহেদ কবির লিমন বলেন, মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছি। কাজও করে যাচ্ছি। দলীয় মনোনয়ন পেলে পৌরবাসীর সমস্যাগুলো চিহ্নিত হরে সমাধান করবো।