ঢাকা ১০:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোমবাতি জ্বালিয়ে ইসিজি, বিদ্যুৎ গেলে রোগীদের দুর্ভোগ

Reporter Name

বিশেষ প্রতিনিধিঃ

লোডশেডিং বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিদ্যুৎ সংযোগ চলে গেলে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ডুবে থাকে অন্ধকারে। রোগীদের পড়তে হয় চরম দুর্ভোগে। হাসপাতালের জেনারেটরটি তিন বছর ধরে অকেজো থাকায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। অনেক সময় বিদ্যুৎ না থাকলে মোমবাতি জ্বালিয়ে ইসিজি করতে দেখা গেছে হাসপাতালটিতে।

রোগী ও স্থানীয়রা জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জেনারেটরটি মেরামতের জন্য তেমন কোনো উদ্যোগ নেননি। উপজেলার মহেশ্বরচাঁদা গ্রামের মোহাম্মদ আলী বজ্রপাতে আহত হওয়ায় রোববার সন্ধ্যায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ২ ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ না থাকায় হাসপাতালে মোমবাতি জ্বালিয়ে ইসিজি করা হয়। পরে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার চুটলিয়ায় বিদ্যুতের তারের ওপর গাছ পড়ে সোমবার রাতে কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর ও মহেশপুরে প্রায় ৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ থাকে। এ সময় অন্ধকারে ডুবে ছিল কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিকল্প বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেনি। রোগীর স্বজনরা মোমবাতি কিনে আলোর ব্যবস্থা করেন।

বজ্রপাতে নিহত মোহাম্মদ আলীর ভাইপো মিঠু মালিথা জানান, সরকারি হাসপাতালে মোমবাতি জ্বালিয়ে ইসিজি করার ঘটনা বিরল। তিনি হাসপাতালের অকেজো জেনারেটর মেরামতের দাবি জানান।

মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি উপজেলার বেজপাড়া এলাকার শীতা রাণীর স্বজন মিতা রাণী যুগান্তরকে বলেন, সোমবার সন্ধ্যার আগ দিয়ে বিদ্যুৎ চলে যায়। এরপর গভীর রাতে বিদ্যুৎ আসে। দীর্ঘসময় হাসপাতাল অন্ধকারে ছিল। নিজেরা মোমবাতি কিনে জ¦ালিয়ে খাওয়াসহ বিভিন্ন কাজ করেছি। তিনি আরো বলেন, মোমবাতি না কিনলে রোগীকে ওষুধ দিবেন না বলে হাসপাতালের নার্সরা স্বজনদের বলছিলেন।

তারা বানু নামের আরেক রোগী জানান, গতকাল সন্ধ্যার আগে থেকে প্রায় রাত ১টা পর্যন্ত অন্ধকারে ছিলাম। নিজেরা মোমবাতি কিনে আলোর ব্যবস্থা করেছি।

হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি কোলবাজার এলাকার মুহিত নামে এক রোগী জানান, সোমবার রাতে ৭ ঘণ্টা অন্ধকারে ছিলাম। মোমবাতি না কিনলে রোগীকে ওষুধ দেবে না বলে হাসপাতালের নার্সরা স্বজনদের বলছিলেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামীমা শিরিন লুবনার মোবাইল ফোনে জেনারেটর বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, হাসপাতালে আসতে হবে। মুঠোফোনে কোনো তথ্য দেওয়া যাবে না বলে সংযোগ কেটে দেন।

ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম বলেন, এ ব্যাপারে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জানাননি। বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নেবেন বলে তিনি জানান।

About Author Information
আপডেট সময় : ১১:০১:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ জুন ২০২১
৬২৫ Time View

কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোমবাতি জ্বালিয়ে ইসিজি, বিদ্যুৎ গেলে রোগীদের দুর্ভোগ

আপডেট সময় : ১১:০১:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ জুন ২০২১

বিশেষ প্রতিনিধিঃ

লোডশেডিং বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিদ্যুৎ সংযোগ চলে গেলে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ডুবে থাকে অন্ধকারে। রোগীদের পড়তে হয় চরম দুর্ভোগে। হাসপাতালের জেনারেটরটি তিন বছর ধরে অকেজো থাকায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। অনেক সময় বিদ্যুৎ না থাকলে মোমবাতি জ্বালিয়ে ইসিজি করতে দেখা গেছে হাসপাতালটিতে।

রোগী ও স্থানীয়রা জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জেনারেটরটি মেরামতের জন্য তেমন কোনো উদ্যোগ নেননি। উপজেলার মহেশ্বরচাঁদা গ্রামের মোহাম্মদ আলী বজ্রপাতে আহত হওয়ায় রোববার সন্ধ্যায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ২ ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ না থাকায় হাসপাতালে মোমবাতি জ্বালিয়ে ইসিজি করা হয়। পরে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার চুটলিয়ায় বিদ্যুতের তারের ওপর গাছ পড়ে সোমবার রাতে কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর ও মহেশপুরে প্রায় ৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ থাকে। এ সময় অন্ধকারে ডুবে ছিল কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিকল্প বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেনি। রোগীর স্বজনরা মোমবাতি কিনে আলোর ব্যবস্থা করেন।

বজ্রপাতে নিহত মোহাম্মদ আলীর ভাইপো মিঠু মালিথা জানান, সরকারি হাসপাতালে মোমবাতি জ্বালিয়ে ইসিজি করার ঘটনা বিরল। তিনি হাসপাতালের অকেজো জেনারেটর মেরামতের দাবি জানান।

মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি উপজেলার বেজপাড়া এলাকার শীতা রাণীর স্বজন মিতা রাণী যুগান্তরকে বলেন, সোমবার সন্ধ্যার আগ দিয়ে বিদ্যুৎ চলে যায়। এরপর গভীর রাতে বিদ্যুৎ আসে। দীর্ঘসময় হাসপাতাল অন্ধকারে ছিল। নিজেরা মোমবাতি কিনে জ¦ালিয়ে খাওয়াসহ বিভিন্ন কাজ করেছি। তিনি আরো বলেন, মোমবাতি না কিনলে রোগীকে ওষুধ দিবেন না বলে হাসপাতালের নার্সরা স্বজনদের বলছিলেন।

তারা বানু নামের আরেক রোগী জানান, গতকাল সন্ধ্যার আগে থেকে প্রায় রাত ১টা পর্যন্ত অন্ধকারে ছিলাম। নিজেরা মোমবাতি কিনে আলোর ব্যবস্থা করেছি।

হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি কোলবাজার এলাকার মুহিত নামে এক রোগী জানান, সোমবার রাতে ৭ ঘণ্টা অন্ধকারে ছিলাম। মোমবাতি না কিনলে রোগীকে ওষুধ দেবে না বলে হাসপাতালের নার্সরা স্বজনদের বলছিলেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামীমা শিরিন লুবনার মোবাইল ফোনে জেনারেটর বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, হাসপাতালে আসতে হবে। মুঠোফোনে কোনো তথ্য দেওয়া যাবে না বলে সংযোগ কেটে দেন।

ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম বলেন, এ ব্যাপারে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জানাননি। বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নেবেন বলে তিনি জানান।