ঢাকা ০৪:৩৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুষ্টিয়ায় নারী নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩, আসামি ছাড়াতে থানায় ঘেরাও

 

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মাংস চুরির অভিযোগে রিনা খাতুন (৪০) নামের এক নারীকে গাছে বেঁধে মারধর এবং মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর আগে, মঙ্গলবার রাতে ভুক্তভোগী রিনা খাতুন কুমারখালী থানায় সাতজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

বুধবার (১১ জুন) সকালে গ্রেফতার হওয়া তিন নারীকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় ঘেরাও করে তাদের স্বজনেরা। স্বজনদের অভিযোগ, পুলিশ মীমাংসার আশ্বাস দিয়ে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাদের গ্রেফতার করেছে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

গ্রেফতার হওয়া আসামিরা হলেন—উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের রিপনের স্ত্রী মুক্তি খাতুন, মোমিনের স্ত্রী পারভিন খাতুন এবং বক্করের স্ত্রী লিপি খাতুন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (৯ জুন) রাত ৮টার দিকে মির্জাপুর গ্রামে প্রতিবেশী রিপন আলীর ঘরে ঢুকে ফ্রিজ থেকে মাংস চুরির অভিযোগ তোলা হয় রিনা খাতুনের বিরুদ্ধে। এরপর তাকে গাছের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর করা হয়। কিছুক্ষণ পর তার স্বামী জাহাঙ্গীর এসে তাকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে যান।

পরে স্থানীয় নজরুল, কাশেম, রিপনসহ শতাধিক নারী-পুরুষ রাতেই রিনার বাড়ি ভাঙচুর করে তাকে তুলে নিয়ে যায় এবং আবার রিপনের বাড়িতে এনে মারধর করে তার মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়।

পরে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার শাহ আলমের উপস্থিতিতে সালিশ বসিয়ে রিনার দুটি গরু, একটি ছাগল ও স্বর্ণালংকারের বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে রিনা কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন।

ঘটনার কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলা জুড়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এরপর মঙ্গলবার রাতে থানায় মামলা দায়ের করেন রিনা খাতুন।

পরদিন সকালে মির্জাপুর গ্রাম থেকে পুলিশ তিনজন নারী আসামিকে গ্রেফতার করলে তাদের স্বজনেরা থানায় এসে বিক্ষোভ করে ও গ্রেফতারকৃতদের ছাড়িয়ে নেওয়ার দাবি জানায়।

মির্জাপুর গ্রামের ইলেকট্রিক মিস্ত্রি রিপন বলেন, ‘ওই নারী (রিনা খাতুন) আমার বাড়ি থেকে ৪১ হাজার টাকা ও মাংস চুরি করে হাতে-নাতে ধরা পড়েছে। পুলিশ চোরের পক্ষ নিয়ে আমার স্ত্রীসহ তিনজনকে ধরে এনেছে। আমরা চোরের শাস্তি ও গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির চেষ্টা করছি।’

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলাইমান বলেন, ‘ভুক্তভোগী নারী থানায় মামলা করেছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় তিনজন নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের পরিবারের লোকজন মীমাংসার দাবিতে থানায় কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি করেছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সবুজদেশ/এসইউ

অলৌকিকভাবে বেঁচে গেলেন বিধ্বস্ত বিমানটির এক যাত্রী

কুষ্টিয়ায় নারী নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩, আসামি ছাড়াতে থানায় ঘেরাও

Update Time : ০৯:৩৭:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫

 

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মাংস চুরির অভিযোগে রিনা খাতুন (৪০) নামের এক নারীকে গাছে বেঁধে মারধর এবং মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর আগে, মঙ্গলবার রাতে ভুক্তভোগী রিনা খাতুন কুমারখালী থানায় সাতজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

বুধবার (১১ জুন) সকালে গ্রেফতার হওয়া তিন নারীকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় ঘেরাও করে তাদের স্বজনেরা। স্বজনদের অভিযোগ, পুলিশ মীমাংসার আশ্বাস দিয়ে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাদের গ্রেফতার করেছে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

গ্রেফতার হওয়া আসামিরা হলেন—উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের রিপনের স্ত্রী মুক্তি খাতুন, মোমিনের স্ত্রী পারভিন খাতুন এবং বক্করের স্ত্রী লিপি খাতুন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (৯ জুন) রাত ৮টার দিকে মির্জাপুর গ্রামে প্রতিবেশী রিপন আলীর ঘরে ঢুকে ফ্রিজ থেকে মাংস চুরির অভিযোগ তোলা হয় রিনা খাতুনের বিরুদ্ধে। এরপর তাকে গাছের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর করা হয়। কিছুক্ষণ পর তার স্বামী জাহাঙ্গীর এসে তাকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে যান।

পরে স্থানীয় নজরুল, কাশেম, রিপনসহ শতাধিক নারী-পুরুষ রাতেই রিনার বাড়ি ভাঙচুর করে তাকে তুলে নিয়ে যায় এবং আবার রিপনের বাড়িতে এনে মারধর করে তার মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়।

পরে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার শাহ আলমের উপস্থিতিতে সালিশ বসিয়ে রিনার দুটি গরু, একটি ছাগল ও স্বর্ণালংকারের বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে রিনা কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন।

ঘটনার কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলা জুড়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এরপর মঙ্গলবার রাতে থানায় মামলা দায়ের করেন রিনা খাতুন।

পরদিন সকালে মির্জাপুর গ্রাম থেকে পুলিশ তিনজন নারী আসামিকে গ্রেফতার করলে তাদের স্বজনেরা থানায় এসে বিক্ষোভ করে ও গ্রেফতারকৃতদের ছাড়িয়ে নেওয়ার দাবি জানায়।

মির্জাপুর গ্রামের ইলেকট্রিক মিস্ত্রি রিপন বলেন, ‘ওই নারী (রিনা খাতুন) আমার বাড়ি থেকে ৪১ হাজার টাকা ও মাংস চুরি করে হাতে-নাতে ধরা পড়েছে। পুলিশ চোরের পক্ষ নিয়ে আমার স্ত্রীসহ তিনজনকে ধরে এনেছে। আমরা চোরের শাস্তি ও গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির চেষ্টা করছি।’

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলাইমান বলেন, ‘ভুক্তভোগী নারী থানায় মামলা করেছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় তিনজন নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের পরিবারের লোকজন মীমাংসার দাবিতে থানায় কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি করেছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সবুজদেশ/এসইউ