সবুজদেশ ডেক্সঃ কুষ্টিয়া শহরে সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার নূর মোহাম্মদ শাহকে (৫০) হাত-পা-মুখ বেঁধে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল সোমবার রাতে নিজ বাসায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।

নূর মোহাম্মদের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলায়। তিনি কুষ্টিয়া শহরের বাবর আলী রেলগেট এলাকায় বি সি স্ট্রিট সড়কের হানিফ আলীর বাড়ির তিনতলার একটি ফ্ল্যাটে একাই ভাড়া থাকতেন। তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরা ঢাকায় থাকেন।

বাড়িওয়ালা হানিফ আলী বাড়ির দোতলায় থাকেন। তাঁর ছেলে আল মাহমুদ সোহাগের ভাষ্য, রাত সাড়ে নয়টার দিকে একটা শব্দ শুনতে পেয়ে তিনি বাসা থেকে বের হন। বাসায় চোর ঢুকেছে মনে করে তিনি চারতলা ভবনের ছাদে গিয়ে খুঁজতে থাকেন। এ সময় তিনতলার ডান দিকের নূর মোহাম্মদের ফ্ল্যাটে চড়া শব্দে টেলিভিশন চলছিল। ওই ফ্ল্যাটের দরজার নিচের মেঝের ফাঁকা জায়গা পাপোশ দিয়ে আটকানো দেখেন। এ সময় তিনি ডোরবেল বাজান এবং নূর মোহাম্মদের মোবাইল ফোনে কল দিতে থাকেন। সাড়া না পেয়ে কয়েক মিনিট পর তিনি নিচতলায় পানির পাম্পের সুইচ বন্ধ করতে যান।

আল মাহমুদ বলেন, তিনি রাত ১০টার দিকে সিঁড়ি বেয়ে তিনজন যুবককে নামতে দেখেন। তাঁদের মধ্যে একজনের হাতে একটি ছুরি ছিল। তাঁরা কারা, কার কাছে এসেছেন, তা জানতে চাইলে এক যুবক বলেন, তাঁরা রেজিস্ট্রার সাহেবের কাছে গিয়েছিলেন। ওই যুবক আল মাহমুদকে রেজিস্ট্রারের কাছে যেতে বলেন। এরপর তাঁরা কলাপসিবল গেট খুলে বাইরে চলে যান।

আল মাহমুদ বাসার ভেতরে রান্নাঘরে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় নূর মোহাম্মদকে পড়ে থাকতে দেখেন। বাড়ির অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের সহায়তায় তিনি পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাজিবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, রাত ১১টার দিকে পুলিশ কয়েকজনের সহায়তায় নূর মোহাম্মদকে নিয়ে আসে। তাঁর দুই হাতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের চিহ্ন আছে। হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা গেছেন।

পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রেখেছে।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শ্বাসরোধে আল মাহমুদকে হত্যা করা হয়েছে। বাড়ির সামনে থাকা একটি সিসি ক্যামেরায় তিন যুবকের বের হওয়ার দৃশ্য দেখা গেছে। তাঁদের সবার মাথায় টুপি ছিল। পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here