ঢাকা ০৬:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৩ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুষ্টিয়া চিনিকল: সাবেক এমডি গোলাম সারওয়ারের পদাবনতি

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:১৪:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুন ২০২১
  • ১৮৭ Time View

কুষ্টিয়াঃ

সিবিএ নেতাদের সঙ্গে যোগসাজশে আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় কুষ্টিয়া চিনি কলের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) গোলাম সারওয়ার মুর্শেদের পদাবনতি হয়েছে।

আজ বুধবার কুষ্টিয়া চিনিকলের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাকিবুর রহমান খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, সিবিএ নেতাদের সঙ্গে যোগসাজশে গোলাম সারওয়ার মুর্শেদের আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে এ শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া তিনি বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প সংস্থার চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান অপুর সই করা এ সংক্রান্ত একটি পত্র পাওয়ার কথাও জানান।

রাকিবুর রহমান খান জানান, গোলাম সারওয়ার মুর্শেদেকে চাকরির তৃতীয় গ্রেড থেকে চতুর্থ গ্রেডে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি প্রধান কার্যালয়ের প্রধান সিপিই পদে কর্মরত রয়েছেন।

২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর চিনিকল থেকে চিনি চুরিসহ বেশকিছু অপরাধ সংঘটনের কারণে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মুর্শেদ, চিনিকলের সিবিএ সভাপতি ফারুক হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমানকে একযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।

পরে গোলাম সারওয়ার মুর্শেদকে ২০২০ সালের নভেম্বরে প্রধান কার্যালয়ের প্রধান সিপিই পদে বদলি করা হয়েছিল। বর্তমান পদ থেকে তিনি আগামী ২৫ জুন অবসর গ্রহণ করবেন।

চিনিকল সূত্রে জানা গেছে, গোলাম সারওয়ারের বিরুদ্ধে চিনিকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রাচুইটি ও বিভিন্ন মালামাল সরবরাহকারীদের বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিধি বহির্ভূতভাবে রেজুলেশন করে চার কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র ভাঙানো, চিনিকলের অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড ভেঙে সেই অর্থ চিনি ব্যবসায়ীদের দেওয়া, মিলের অবসরপ্রাপ্তদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থ প্রদানকালে ১৩ শতাংশ হারে ঘুষ আদায়সহ আরও কিছু অপরাধের অভিযোগ আনা হয়।

অভিযোগ বলা হয়, ২০১৬ সালে মিলের স্থায়ী শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের পাঁচ কোটি টাকা পাঁচ বছর মেয়াদি জাতীয় সঞ্চয়পত্র কেনা হয়। একই দিনে মৌসুমি শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের ৫০ লাখ টাকার একই সঞ্চয়পত্র কেনা হয়। ২০১৮ সালে স্থায়ী শ্রমিকদের পাঁচ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্রের মধ্যে এক কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়। কিন্তু এক কোটি টাকার কোনও লভ্যাংশ না দিয়ে নিজেরা ভাগ করে নেন। এসব খাত থেকে নিজে ৪৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।

এছাড়া অভিযোগ রয়েছে তিনি মিলের ৬০ টাকা কেজি দরে প্রায় তিন কোটি টাকার চিনি‘ ফ্রি সেলে’ ৫২ টাকা কেজি দরে বিক্রয় করে দেন। এতে বিপুল পরিমাণ ক্ষতির মুখে পড়ে কুষ্টিয়া সুগার মিল। লোকসানের ওই টাকা সমন্বয়ের নামে মিলের শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড ও বেতন থেকে টাকা কেটে রেখে নিজেরা ভাগবাটোয়ারা করে নেন।

বিষয়গুলো সামনে এলে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্পসংস্থা কয়েক দফা বিভাগীয় তদন্ত পরিচালনা করে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।

মিলের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, একই সময়ে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প সংস্থার চিফ অব পার্সোনাল মো. রফিকুল ইসলামের সই করা আরেক আদেশে অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত মিলের সিবিএ সভাপতি ফারুক হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চলমান বিভাগীয় মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করার কথা বলা হয়েছে। এ বিষয়ে কাজ চলছে এবং খুব দ্রুত বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :