ঢাকা ০৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কৃষককে মাদক ব্যবসায়ী বানানোর চেষ্টা, পুলিশকে গণপিটুনি

Reporter Name

কৃষককে মাদক ব্যবসায়ী বানানোর চেষ্টায় গণপিটুনির শিকার হয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটায় নাটোর সদর উপজেলার ছাতনী ইউনিয়নে শিবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে এএসআই কালামকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী আইয়ুবের অভিযোগ, ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এমরান আলীর ইন্ধনে পুলিশ তার বাড়িতে ঢুকে তাণ্ডব চালায়। ঘটনার সময় পুলিশের সঙ্গে ৪ সোর্স গরু বিক্রির ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।

ভুক্তভোগী কৃষক আইয়ুব আলী জানান, তিনি ঢাকায় কোরবানির হাটে ৩টি গরু বিক্রির দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা এনে বাড়িতে রেখেছিলেন। শনিবার রাত আড়াইটায় তার বাড়ির গেট ধাক্কাতে থাকে কয়েকজন ব্যক্তি। ভেতর থেকে পরিচয় জানতে চাইলে জানায় তারা পুলিশ। এই কথোপকথনের মধ্যেই বাড়ির দেয়াল টপকে ঢুকে পড়ে ৪ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি। দরজা খুলতেই দেখা যায় নাটোর সদর থানা পুলিশের এএসআই আবুল কালাম ও তার সঙ্গীয় ফোর্স। তারা দাবি করেন বাড়িতে ইয়াবা রাখা আছে।

এসময় কৃষক আইয়ুব, তার স্ত্রী, ছোট মেয়ে ও ছেলে বাড়িতে ছিলেন। স্ত্রী ও মেয়েসহ আইয়ুবকে একটি ঘরে রেখে আইয়ুবের ছেলে মাসুদ রানাকে পেটাতে শুরু করেন এএসআই কালাম। ‘বাবা (ইয়াবা) কই’ বলে মারতে মারতে মাসুদকে বাড়ির দরজার সামনে আনেন এএসআই। এরই ফাঁকে আইয়ুব আলীর ঘরে ঢুকে আলমারির ভেতরে থাকা দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় পুলিশের ৩ সোর্স। এসময় মাসুদকে মারতে মারতে বাড়ির বাইরে আনার সময় তার চিৎকারে জড়ো হয় এলাকাবাসী। তাদের প্রতিবাদের মুখে মাসুদকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। এরই মধ্যে পুরো ঘটনা জানাজানি হলে উত্তেজিত জনতা জড়ো হয়ে পুলিশ ও অজ্ঞাত ১ জনকে ধরে পিটুনি দেয়।

আইয়ুবের বাড়িতে তাণ্ডব !

এ প্রসঙ্গে সদর থানার ওসি কাজী জালাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, এ ঘটনায় বিব্রত পুলিশ। তবে টাকা নেওয়ার বিষয়টি সত্য নয়। টাকা খোয়া যাওয়ার বিষয়ে ভুক্তভোগী থানায় কোন অভিযোগ করেননি।

ইউপি সদস্য এমরান আলী বলেন, বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি। পুলিশ গতরাতে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরতে ছাতনীতে গিয়েছিল। আইয়ুবের ছেলে মাসুদ একজন ইভটিজার। তাকে সতর্ক করার জন্য পুলিশকে বলেছিলাম। তাই ওই রাতে পুলিশ তাদের বাড়িতে গিয়েছিল। পুলিশ তাদের মারপিট করেছে কি না আমার জানা নেই।

নাটোরের পুলিশ সুপার বিপ্লব বিজয় তালুকদার বলেন, বিষয়টি শুনেছি। ইতোমধ্যে এএসআই কালামকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। পুরো ঘটনা জানার চেষ্টা চলছে। কার কতটুকু অপরাধ, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৭:২৯:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অগাস্ট ২০১৮
৫২৪ Time View

কৃষককে মাদক ব্যবসায়ী বানানোর চেষ্টা, পুলিশকে গণপিটুনি

আপডেট সময় : ০৭:২৯:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অগাস্ট ২০১৮

কৃষককে মাদক ব্যবসায়ী বানানোর চেষ্টায় গণপিটুনির শিকার হয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটায় নাটোর সদর উপজেলার ছাতনী ইউনিয়নে শিবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে এএসআই কালামকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী আইয়ুবের অভিযোগ, ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এমরান আলীর ইন্ধনে পুলিশ তার বাড়িতে ঢুকে তাণ্ডব চালায়। ঘটনার সময় পুলিশের সঙ্গে ৪ সোর্স গরু বিক্রির ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।

ভুক্তভোগী কৃষক আইয়ুব আলী জানান, তিনি ঢাকায় কোরবানির হাটে ৩টি গরু বিক্রির দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা এনে বাড়িতে রেখেছিলেন। শনিবার রাত আড়াইটায় তার বাড়ির গেট ধাক্কাতে থাকে কয়েকজন ব্যক্তি। ভেতর থেকে পরিচয় জানতে চাইলে জানায় তারা পুলিশ। এই কথোপকথনের মধ্যেই বাড়ির দেয়াল টপকে ঢুকে পড়ে ৪ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি। দরজা খুলতেই দেখা যায় নাটোর সদর থানা পুলিশের এএসআই আবুল কালাম ও তার সঙ্গীয় ফোর্স। তারা দাবি করেন বাড়িতে ইয়াবা রাখা আছে।

এসময় কৃষক আইয়ুব, তার স্ত্রী, ছোট মেয়ে ও ছেলে বাড়িতে ছিলেন। স্ত্রী ও মেয়েসহ আইয়ুবকে একটি ঘরে রেখে আইয়ুবের ছেলে মাসুদ রানাকে পেটাতে শুরু করেন এএসআই কালাম। ‘বাবা (ইয়াবা) কই’ বলে মারতে মারতে মাসুদকে বাড়ির দরজার সামনে আনেন এএসআই। এরই ফাঁকে আইয়ুব আলীর ঘরে ঢুকে আলমারির ভেতরে থাকা দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় পুলিশের ৩ সোর্স। এসময় মাসুদকে মারতে মারতে বাড়ির বাইরে আনার সময় তার চিৎকারে জড়ো হয় এলাকাবাসী। তাদের প্রতিবাদের মুখে মাসুদকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। এরই মধ্যে পুরো ঘটনা জানাজানি হলে উত্তেজিত জনতা জড়ো হয়ে পুলিশ ও অজ্ঞাত ১ জনকে ধরে পিটুনি দেয়।

আইয়ুবের বাড়িতে তাণ্ডব !

এ প্রসঙ্গে সদর থানার ওসি কাজী জালাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, এ ঘটনায় বিব্রত পুলিশ। তবে টাকা নেওয়ার বিষয়টি সত্য নয়। টাকা খোয়া যাওয়ার বিষয়ে ভুক্তভোগী থানায় কোন অভিযোগ করেননি।

ইউপি সদস্য এমরান আলী বলেন, বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি। পুলিশ গতরাতে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরতে ছাতনীতে গিয়েছিল। আইয়ুবের ছেলে মাসুদ একজন ইভটিজার। তাকে সতর্ক করার জন্য পুলিশকে বলেছিলাম। তাই ওই রাতে পুলিশ তাদের বাড়িতে গিয়েছিল। পুলিশ তাদের মারপিট করেছে কি না আমার জানা নেই।

নাটোরের পুলিশ সুপার বিপ্লব বিজয় তালুকদার বলেন, বিষয়টি শুনেছি। ইতোমধ্যে এএসআই কালামকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। পুরো ঘটনা জানার চেষ্টা চলছে। কার কতটুকু অপরাধ, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।