ঢাকা ০২:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কোটচাঁদপুরে খাল দখল করে অবৈধ স্থাপনা, ৭০০ বিঘা জমিতে চাষাবাদ ব্যাহত

 

সড়ক ও জনপথের খাল দখল করে অবৈধ স্থাপনা তৈরি ও ময়লা আবর্জনা ফেলে ব্রীজের মুখ বন্ধ করায় পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌর এলাকার ৭০০ বিঘা জমিতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করেছেন ভুক্তভোগী চাষীরা।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, কালীগঞ্জ-জীবননগর  সড়কের কোটচাঁদপুর আম বাজার সংলগ্ন কালভার্টের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে বিভিন্ন ধরনের বর্জে। আর খাল ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ স্থাপনা। এতে করে বন্ধ হয়ে গেছে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা। ফলে মাঠের ৭০০ বিঘা জমিতে ফসল উৎপাদনে আশংকা দেখা দিয়েছে। এদিকে ওই ঘটনার প্রতিকার চেয়ে উপজেলা প্রশাসন বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন ভুক্তভোগী চাষিরা।

বড়বমানদহ গ্রামের চাষি আতাউর রহমান (আতা) বলেন, কালীগঞ্জ-জীবননগর সড়কের কোটচাঁদপুর আম বাজার সংলগ্ন কালভার্টের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে বিভিন্ন ধরনের আবর্জনায়। আর খাল ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে সমিল,নকশার কারখানা, রাইস মিল, আমের আড়ৎ, হোটেল, চায়ের দোকান সহ বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা। ঘর বরাদ্দ দিয়ে অ্যাডভান্স নেওয়া হয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। নেওয়া হচ্ছে প্রতিমাসে ঘর পতি ৯ থেকে ২০ হাজার টাকা মাসিক ভাড়া। অবৈধ স্থাপনের দেয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। এ কারনে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, যার ফলে আমাদের বল্বব দাড়ির মাঠ, নারান বিলের মাঠ ও বাজেবামনদহ মাঠের পানি আটকে গেছে। এ কারনে ওই ৩ মাঠের প্রায় ৭০০ বিঘা জমিতে ফসল উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। আমার দুই মাঠই জমি রয়েছে। আগে জমিতে পানি জমে না থাকায় ইচ্ছে মত চাষ করা যেত। কয়েক বছর ধরে তা আর সম্ভব হচ্ছে না। তিনি এ অবস্থার প্রতিকার চেয়েছেন সংশ্লিষ্টদের নিকট।

বাজেবামনদহ গ্রামের ইসরাফিল মল্লিক বলেন, এরশাদের আমলে খাল খনন করা হয়েছিল। সেখানে আমার বাপ চাচারা পাট জাগ দেওয়া সহ মাছ চাষ করতেন। আর এখন পাশের জমির মালিকরা সেই খাল ভরাট করে গড়ে তুলেছেন অবৈধ স্থাপনা। আর তাদের ফেলা ময়লা আবর্জনায় কালভার্টের মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ায়। মাঠের পানি বের হতে পারছেনা।এতে করে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। এ কারনে কয়েক বছর ধরে এ মাঠে চাষ করতে আমরা খুবই সমস্যায় আছি। বিষয়টি সুরাহার জন্য উপজেলা প্রশাসন বরাবর আবেদন করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

উপজেলা কৃষি অফিসার জাহিদ হোসেন সবুজদেশ নিউজকে বলেন, চাষিদের আবেদন হাতে পায় নাই। তবে শুনেছি। এরপর আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিতও করেছি।

তিনি আরো বলেন, আমি জানতে পেরেছি ওখানে কাজও করা হয়েছে। তবে তাতেও যদি পানি নিষ্কাশন না হয়,তাহলে আবারও কাজ করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী আনিসুল ইসলাম বলেন,পানি নিষ্কাশনের জন্য চাষিরদের দেয়া আবেদন পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে।

সবুজদেশ/এসএএস

Tag :

কোটচাঁদপুরে খাল দখল করে অবৈধ স্থাপনা, ৭০০ বিঘা জমিতে চাষাবাদ ব্যাহত

Update Time : ০৯:৩১:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

 

সড়ক ও জনপথের খাল দখল করে অবৈধ স্থাপনা তৈরি ও ময়লা আবর্জনা ফেলে ব্রীজের মুখ বন্ধ করায় পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌর এলাকার ৭০০ বিঘা জমিতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করেছেন ভুক্তভোগী চাষীরা।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, কালীগঞ্জ-জীবননগর  সড়কের কোটচাঁদপুর আম বাজার সংলগ্ন কালভার্টের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে বিভিন্ন ধরনের বর্জে। আর খাল ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ স্থাপনা। এতে করে বন্ধ হয়ে গেছে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা। ফলে মাঠের ৭০০ বিঘা জমিতে ফসল উৎপাদনে আশংকা দেখা দিয়েছে। এদিকে ওই ঘটনার প্রতিকার চেয়ে উপজেলা প্রশাসন বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন ভুক্তভোগী চাষিরা।

বড়বমানদহ গ্রামের চাষি আতাউর রহমান (আতা) বলেন, কালীগঞ্জ-জীবননগর সড়কের কোটচাঁদপুর আম বাজার সংলগ্ন কালভার্টের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে বিভিন্ন ধরনের আবর্জনায়। আর খাল ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে সমিল,নকশার কারখানা, রাইস মিল, আমের আড়ৎ, হোটেল, চায়ের দোকান সহ বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা। ঘর বরাদ্দ দিয়ে অ্যাডভান্স নেওয়া হয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। নেওয়া হচ্ছে প্রতিমাসে ঘর পতি ৯ থেকে ২০ হাজার টাকা মাসিক ভাড়া। অবৈধ স্থাপনের দেয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। এ কারনে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, যার ফলে আমাদের বল্বব দাড়ির মাঠ, নারান বিলের মাঠ ও বাজেবামনদহ মাঠের পানি আটকে গেছে। এ কারনে ওই ৩ মাঠের প্রায় ৭০০ বিঘা জমিতে ফসল উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। আমার দুই মাঠই জমি রয়েছে। আগে জমিতে পানি জমে না থাকায় ইচ্ছে মত চাষ করা যেত। কয়েক বছর ধরে তা আর সম্ভব হচ্ছে না। তিনি এ অবস্থার প্রতিকার চেয়েছেন সংশ্লিষ্টদের নিকট।

বাজেবামনদহ গ্রামের ইসরাফিল মল্লিক বলেন, এরশাদের আমলে খাল খনন করা হয়েছিল। সেখানে আমার বাপ চাচারা পাট জাগ দেওয়া সহ মাছ চাষ করতেন। আর এখন পাশের জমির মালিকরা সেই খাল ভরাট করে গড়ে তুলেছেন অবৈধ স্থাপনা। আর তাদের ফেলা ময়লা আবর্জনায় কালভার্টের মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ায়। মাঠের পানি বের হতে পারছেনা।এতে করে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। এ কারনে কয়েক বছর ধরে এ মাঠে চাষ করতে আমরা খুবই সমস্যায় আছি। বিষয়টি সুরাহার জন্য উপজেলা প্রশাসন বরাবর আবেদন করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

উপজেলা কৃষি অফিসার জাহিদ হোসেন সবুজদেশ নিউজকে বলেন, চাষিদের আবেদন হাতে পায় নাই। তবে শুনেছি। এরপর আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিতও করেছি।

তিনি আরো বলেন, আমি জানতে পেরেছি ওখানে কাজও করা হয়েছে। তবে তাতেও যদি পানি নিষ্কাশন না হয়,তাহলে আবারও কাজ করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী আনিসুল ইসলাম বলেন,পানি নিষ্কাশনের জন্য চাষিরদের দেয়া আবেদন পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে।

সবুজদেশ/এসএএস