কোটচাঁদপুরে টাকার বিনিময়ে কৃষক দলের কমিটি গঠনের অভিযোগ
কোটচাঁদপুর উপজেলার সদ্য গঠিত কৃষকদলের আহ্বায়ক কমিটি বাতিল ও জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ওসমান আলী বিশ্বাসের সকল পদ থেকে অপসরনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন উপজেলা কৃষকদল।
রবিবার বিকালে কৃষক দলের কমিটি গঠনে স্বজন প্রীতি স্বেচ্ছাচারিতা ও অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ এনে স্থানীয় পোস্ট অফিস মোড়ের বিএনপি অফিসে সংবাদ সম্মেলন করেন দলটি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, সাবেক উপজেলা যুবদলের সভাপতি ও কোটচাঁদপুর উপজেলা বিএনপির সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক এবং সম্ভাব্য কৃষক দলের সভাপতি পদপ্রার্থী মোহাম্মদ আলী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সহসভাপতি আবু বকর বিশ্বাস,জেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান একরামুল হক,উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত হোসেন, সাবেক উপজেলা বিএনপির সভাপতি নুরুজ্জামান মিয়া, সাবেক পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রেকজাউল হোসেন, জেলা বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমান, পৌর বিএনপির যুগ্ন সম্পাদক ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর কামাল হোসেন,পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান তুহিন, পৌর যুবদলের সদস্য সচিব সেলিম রেজা মধু, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আবুল হোসেন, সদস্য সচিব শাহনুর রহমান শাহান প্রমুখ।
সে সময় তারা অভিযোগ করে বলেন, গত ০৬-১১-২০২৪ ইং তারিখে কোটচাঁদপুর প্রিজন ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কোটচাঁদপুর উপজেলা শাখার আহবায়ক কমিটি গঠনের লক্ষ্যে কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শতশত নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় ঝিনাইদহ জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক ওসমান আলী বলেন, গত ৫ই আগস্ট তারিখের পূর্বে যে সমস্ত নেতা-কর্মী হামলা মামলার শিকার হয়েছেন তাদেরকে কোটচাঁদপুর উপজেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক কমিটিতে প্রাধান্য দেয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে যে নিরপেক্ষ কমিটি গঠন করে দিবেন তিনি সেই কমিটি অনুমোদন করবেন। অথচ তিনি তা না করে গেল ২৮-১১-২০২৪ তারিখে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সুপারিশবিহীন বিহীন শুধুমাত্র আহ্বায়কের স্বাক্ষরিত উপজেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে দেন। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায়। মোহাম্মদ আলী বলেন,আহ্বায়ক কমিটির শীর্ষ পদে যাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাদের নামে ২০১৪ সাল হইতে একটি মামলাও হয়নি। এ ছাড়া ওই কমিটির আহ্বায়ক রফিকুল ইসলামের নামেও আওয়ামী দুঃশাসনের সময় কোন মামলা নাই বলে জানা গেছে। আর সদস্য সচিব আবুল কাসেম বাবু স্বৈরাচার সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন ৮ গ্রামের ইক্ষু সমবায় সমিতির জমি নিজের নামে রেস্ট্রি করে নেন বলে জনশ্রুতি আছে। তিনি আরো বলেন,বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সম্মানিত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জননেতা তারেক রহমানের নির্দেশ আছে দলের অভ্যন্তরে কোন দুর্নীতিবাজ এবং সুবিধাবাদীদের ঠাঁই নাই।
অথচ জেলা আহ্বায়ক সজ্ঞানে জননেতা তারেক রহমানের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে শুধুমাত্র ব্যক্তি স্বার্থের কারণে দলের স্বার্থকে বিসর্জন দিয়েছেন। আমরা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই দুর্নীতিবাজ এবং বিশ্বাসঘাতক ওসমান আলীর জেলা কৃষক দলের আহবায়কের পদ থেকে অপসারণের দাবি জানাচ্ছি। সাথে সাথে কোটচাঁদপুরে সদ্য গঠিত আহবায়ক কমিটি বাতিলেরও দাবি করছি।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা কৃষক দলের আহবায়ক ওসমান আলী বিশ্বাস বলেন, তারা আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছেন, সেটা সম্পূন্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমরা দল করতে এসেছি কারোর কাছ থেকে টাকা নেবার জন্য নয়। দলের পিছনে টাকা খরচ করতে। তিনি সাংবাদিকদের উদ্যেশে বলেন,আপনারা সমাজের দর্পন। আপনারা আমার সম্পর্কে খোঁজ নেন আমি কেমন মানুষ। বিগত দিনে দলের পিছনে নিজের লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করেছি।
তিনি আরো বলেন,আমি তো মূল দলের কেউ না। আমি সামান্য দলেন অঙ্গ সংগঠন করি। আমাকে মূল দলের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে হয়। এখানে আমার একার কোন সিদ্ধান্ত গ্রহন যোগ্য নয়।
সংবাদ সন্মেলন শেষে নেতা-কর্মীরা কোটচাঁদপুর পোস্ট অফিস মোড় থেকে কৃষক দলের ঝিনাইদহ জেলার আহ্বায়ক ওসমান আলী বিশ্বাসের দলীয় সকল পদ থেকে অপসারণ ও কোটচাঁদপুরের আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে নানারকম স্লোগানে স্লোগানের মুখরিত করে তোলেন শহর। মিছিল শেষে মেইন বাস স্ট্যান্ড চত্বরে সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।