ঢাকা ০২:৫৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোটচাঁদপুরে বাওড়ের ইজারাদারকে মারধর, নৌকা ও গোডাউনে আগুন

 

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের সাফদারপুর ইউনিয়নের জযদিয়া বাওড়ে হামলা চালিয়েছেন বাওড় মৎস্যজীবি আন্দোলনকারীরা। মঙ্গলবার সকালে এ হামলা করেন তারা। হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন বাওড়ের ইজারাদার রঞ্জিত হালদার। আন্দোলনকারীদের দেয়া আগুনে পুড়ে গেছে বাওড়ের অফিস, গোডাউন ও মাছ ধরার নৌকা। এতে ৮০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভূক্তভোগী।

ভূক্তভোগী রঞ্জিত হালদার বলেন, গত ২০২৩ সালে ছয় বছরের জন্য কোটচাঁদপুরের জয়দিয়া বাওড়ের ইজারা পাই। সে থেকে বাওড়টিতে আমি মাছ চাষ করে আসছি। তারাও বাওড় প্রাপ্তির পর থেকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকিসহ আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। মঙ্গলবার সকাল তখন ১০ টা বাজে। প্রতিদিনের মত আমি বাওড়ের অফিস কক্ষে বসে ছিলাম। হঠাৎ করে আমিনুল মোল্লা, আলম হোসেন ও নিত্য হালদারের নেতৃত্বে কয়েকশ নারী-পুরুষ অফিস কক্ষের দিকে আসেন। তারা আমার সঙ্গে কোন কথা না বলেই মারপিট শুরু করেন। এরপর বিক্ষোভকারীরাও হামলা চালায় আমার উপর। এতে আমি গুরুতর আহত হয়। এ সময় স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন।

তিনি আরো বলেন, ওই সময় বিক্ষোভ কারীরা আগুন দিয়েছে বাওড়ের আমার অফিসে,খাবার রাখা গোডাউন ও মাছ ধরার আটটি নৌকায়। যা সম্পর্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে করে ৮০ লাখ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে বলে দাবি করেছেন বাওড়ের ইজারাদার রঞ্জিত হালদার।

এই ঘটনায় ১৭ জনকে এজাহারনামীয় ও বাকি ৫০/৬০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে কোটচাঁদপুর মডেল থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী। বর্তমানে তিনি কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

জয়দিয়া মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি শীতল হালদার বলেন, যশোর অঞ্চলের ছয়টি বাওড়ের ইজারা বাতিলের দাবিতে মঙ্গলবার সকালে বাওড়পাড়ে আমাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ ছিল। এ সময় ইজারাদারের লোকজন বাধা দেন। এতে করে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়।

তিনি আরো বলেন, আপনারা জানেন গত দুই বছর আমরা বাওড় হারিয়েছি। সে থেকে বিভিন্ন ধরনের আন্দোলন সংগ্রাম আমরা অব্যাহত রেখেছি।

শিক্ষক আমিনুল মোল্লা বলেন, সোমবার বাওড়ে একটি নৌকা বাইচ ছিল। তাদের কাছে নৌকা চাওয়া হয়েছে। তারা আমাদের কোন সহায়তা করেন নাই। আর আমি জানতে পারলাম হালদাররা বাওড়ের নামতেই পারেন না। আজ শান্তিপূর্ন আন্দোলন করতে গিয়েছিলাম। এরপর স্থানীয় লিটন নামের একজন ইজারাদারের পক্ষে বাঁধা দেন। শুরু হয় বাকবিতন্ডা। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ওই ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে আমি কাউকে মারিনি।

কোটচাঁদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)কবির হোসেন মাতুব্বর বলেন, বাওড়ের ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। একটা অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ইজারাদার। তদন্ত করতে এসে দেখি এজাহারের সঙ্গে কোন মিল নাই। তারা লিখেছেন ৮১ লাখ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে। তবে বাস্তবে তেমনটা না।

কি নিয়ে বিরোধ এমন প্রশ্ন তিনি বলেন, বাওড়ের হালদারদের মধ্যে দুই গ্রুপ আছে। আগে একটি পক্ষ হালদারদের সাথে নিয়ে মাছ চাষ করে খেয়েছেন। এখন আরেকটি পক্ষ অন্যদেরকে সাথে নিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা সম্ভব হবে।

সবুজদেশ/এসইউ

কোটচাঁদপুরে বাওড়ের ইজারাদারকে মারধর, নৌকা ও গোডাউনে আগুন

Update Time : ০৮:৪৮:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল ২০২৫

 

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের সাফদারপুর ইউনিয়নের জযদিয়া বাওড়ে হামলা চালিয়েছেন বাওড় মৎস্যজীবি আন্দোলনকারীরা। মঙ্গলবার সকালে এ হামলা করেন তারা। হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন বাওড়ের ইজারাদার রঞ্জিত হালদার। আন্দোলনকারীদের দেয়া আগুনে পুড়ে গেছে বাওড়ের অফিস, গোডাউন ও মাছ ধরার নৌকা। এতে ৮০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভূক্তভোগী।

ভূক্তভোগী রঞ্জিত হালদার বলেন, গত ২০২৩ সালে ছয় বছরের জন্য কোটচাঁদপুরের জয়দিয়া বাওড়ের ইজারা পাই। সে থেকে বাওড়টিতে আমি মাছ চাষ করে আসছি। তারাও বাওড় প্রাপ্তির পর থেকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকিসহ আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। মঙ্গলবার সকাল তখন ১০ টা বাজে। প্রতিদিনের মত আমি বাওড়ের অফিস কক্ষে বসে ছিলাম। হঠাৎ করে আমিনুল মোল্লা, আলম হোসেন ও নিত্য হালদারের নেতৃত্বে কয়েকশ নারী-পুরুষ অফিস কক্ষের দিকে আসেন। তারা আমার সঙ্গে কোন কথা না বলেই মারপিট শুরু করেন। এরপর বিক্ষোভকারীরাও হামলা চালায় আমার উপর। এতে আমি গুরুতর আহত হয়। এ সময় স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন।

তিনি আরো বলেন, ওই সময় বিক্ষোভ কারীরা আগুন দিয়েছে বাওড়ের আমার অফিসে,খাবার রাখা গোডাউন ও মাছ ধরার আটটি নৌকায়। যা সম্পর্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে করে ৮০ লাখ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে বলে দাবি করেছেন বাওড়ের ইজারাদার রঞ্জিত হালদার।

এই ঘটনায় ১৭ জনকে এজাহারনামীয় ও বাকি ৫০/৬০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে কোটচাঁদপুর মডেল থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী। বর্তমানে তিনি কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

জয়দিয়া মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি শীতল হালদার বলেন, যশোর অঞ্চলের ছয়টি বাওড়ের ইজারা বাতিলের দাবিতে মঙ্গলবার সকালে বাওড়পাড়ে আমাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ ছিল। এ সময় ইজারাদারের লোকজন বাধা দেন। এতে করে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়।

তিনি আরো বলেন, আপনারা জানেন গত দুই বছর আমরা বাওড় হারিয়েছি। সে থেকে বিভিন্ন ধরনের আন্দোলন সংগ্রাম আমরা অব্যাহত রেখেছি।

শিক্ষক আমিনুল মোল্লা বলেন, সোমবার বাওড়ে একটি নৌকা বাইচ ছিল। তাদের কাছে নৌকা চাওয়া হয়েছে। তারা আমাদের কোন সহায়তা করেন নাই। আর আমি জানতে পারলাম হালদাররা বাওড়ের নামতেই পারেন না। আজ শান্তিপূর্ন আন্দোলন করতে গিয়েছিলাম। এরপর স্থানীয় লিটন নামের একজন ইজারাদারের পক্ষে বাঁধা দেন। শুরু হয় বাকবিতন্ডা। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ওই ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে আমি কাউকে মারিনি।

কোটচাঁদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)কবির হোসেন মাতুব্বর বলেন, বাওড়ের ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। একটা অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ইজারাদার। তদন্ত করতে এসে দেখি এজাহারের সঙ্গে কোন মিল নাই। তারা লিখেছেন ৮১ লাখ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে। তবে বাস্তবে তেমনটা না।

কি নিয়ে বিরোধ এমন প্রশ্ন তিনি বলেন, বাওড়ের হালদারদের মধ্যে দুই গ্রুপ আছে। আগে একটি পক্ষ হালদারদের সাথে নিয়ে মাছ চাষ করে খেয়েছেন। এখন আরেকটি পক্ষ অন্যদেরকে সাথে নিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা সম্ভব হবে।

সবুজদেশ/এসইউ