ঢাকা ০৮:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ২৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোটচাঁদপুরে বিষ খাওয়ায়ে শিশুকে হত্যা, সৎ মায়ের বিরুদ্ধে মামলা

 

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে ৫ বছর বয়সী শিশু মাহমুদাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যার অভিযোগে স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন স্বামী শাহিন আলম। শুক্রবার (৭ মার্চ) সন্ধ্যায় মামলা টি রেকর্ড করা হয়। এ সময় মামলাটি সুষ্ঠু তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন শিশুটির বাবা।

মামলা সুত্রে জানা যায়, গত ২০১৭ সালের দিকে চুয়াডাঙ্গার ভূলটিয়া গ্রামের জাকের মুন্সির মেয়ে আফরোজা খাতুনের বিয়ে হয় শাহিন আলমের। বিয়ের দুই বছর পর আফরোজার গর্ভে আসেন শিশু মাহমুদা। তাঁর জন্মের দিনই মারা যান তাঁর মা। এরপর তাকে রেখে বিদেশে চলে যান শাহিন আলম। সেই থেকে মাহমুদাকে কোলে পিঠে করে বড় করেন শাহীনের দাদী সখিনা খাতুন। এভাবেই কেটে গেছে কয়েক বছর। গেল এক বছর হল ভোমরাডাঙ্গা গ্রামের জিয়াউর রহমানের মেয়ে বন্যার সঙ্গে মোবাইলে বিদেশে থাকা অবস্থায় বিয়ে হয় শাহিনের। সে থেকে বন্যা খাতুন উভয় বাড়িতে যাতায়াত শুরু করেন। এরপর চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি শাহিন আলম বিদেশ থেকে বাড়িতে আসেন। কয়েক দিন ভালই কাটে তাদের দাম্পত্য জীবন। এর কিছু দিন পর মেয়ে মাহমুদা কে নিয়ে শুরু হয় তাদের মধ্যে কলহ।

সেই কলহের জেরে গত ০১ মার্চ  বিকেলে কৌশলে কোমল পানীয়ওর সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাওয়ান। এরপর মাহমুদাকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয় সেখান থেকে যশোর সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। পরে ঢাকা থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। বাড়িতে আসার পর সে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় তাঁর পিতা শাহীন আলম তাকে চুয়াডাঙ্গা হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসা শুরু হয় মাহমুদার। এরপর চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৬ মার্চ দুপুরে মারা যায় মাহমুদা। মাহমুদা কোটচাঁদপুরের ভোমরাডাঙ্গা গ্রামের শাহীন আলমের মেয়ে। সে ভোমরাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেনীতে পড়তো।

শিশুটির বাবা শাহিন আলম বলেন, আমি বিদেশ থেকে বাড়িতে আসার পর ভালোই ছিলাম কয়েকদিন। তবে মেয়েকে সে সহ্য করতে পারতো না। সেটা তাঁর আচরণে আমি বুঝতাম। তবে তাকে যে এভাবে পরিকল্পিত ভাবে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিবে সেটা আমি বুঝতে পারেনি।

তিনি বলেন, আমার কোন চাষাবাদ নাই। সে আমার মেয়েকে যে বিষ পান করিয়েছেন, সেটা সে পরিকল্পিত ভাবে সংগ্রহ করে খাওয়ায়। ঘটনাটি নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় শাহিন আলম বাদি হয়ে তাঁর স্ত্রীর নামে কোটচাঁদপুর মডেল থানায় মামলা করেছেন।

এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন মাতুব্বর বলেন, শিশু মাহমুদা হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় বাদি হয়েছেন শিশুটির পিতা। ওই মামলায় একজনকে আসামি করা হয়েছে।

সবুজদেশ/এসইউ

কোটচাঁদপুরে বিষ খাওয়ায়ে শিশুকে হত্যা, সৎ মায়ের বিরুদ্ধে মামলা

Update Time : ০৯:২২:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মার্চ ২০২৫

 

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে ৫ বছর বয়সী শিশু মাহমুদাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যার অভিযোগে স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন স্বামী শাহিন আলম। শুক্রবার (৭ মার্চ) সন্ধ্যায় মামলা টি রেকর্ড করা হয়। এ সময় মামলাটি সুষ্ঠু তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন শিশুটির বাবা।

মামলা সুত্রে জানা যায়, গত ২০১৭ সালের দিকে চুয়াডাঙ্গার ভূলটিয়া গ্রামের জাকের মুন্সির মেয়ে আফরোজা খাতুনের বিয়ে হয় শাহিন আলমের। বিয়ের দুই বছর পর আফরোজার গর্ভে আসেন শিশু মাহমুদা। তাঁর জন্মের দিনই মারা যান তাঁর মা। এরপর তাকে রেখে বিদেশে চলে যান শাহিন আলম। সেই থেকে মাহমুদাকে কোলে পিঠে করে বড় করেন শাহীনের দাদী সখিনা খাতুন। এভাবেই কেটে গেছে কয়েক বছর। গেল এক বছর হল ভোমরাডাঙ্গা গ্রামের জিয়াউর রহমানের মেয়ে বন্যার সঙ্গে মোবাইলে বিদেশে থাকা অবস্থায় বিয়ে হয় শাহিনের। সে থেকে বন্যা খাতুন উভয় বাড়িতে যাতায়াত শুরু করেন। এরপর চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি শাহিন আলম বিদেশ থেকে বাড়িতে আসেন। কয়েক দিন ভালই কাটে তাদের দাম্পত্য জীবন। এর কিছু দিন পর মেয়ে মাহমুদা কে নিয়ে শুরু হয় তাদের মধ্যে কলহ।

সেই কলহের জেরে গত ০১ মার্চ  বিকেলে কৌশলে কোমল পানীয়ওর সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাওয়ান। এরপর মাহমুদাকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয় সেখান থেকে যশোর সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। পরে ঢাকা থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। বাড়িতে আসার পর সে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় তাঁর পিতা শাহীন আলম তাকে চুয়াডাঙ্গা হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসা শুরু হয় মাহমুদার। এরপর চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৬ মার্চ দুপুরে মারা যায় মাহমুদা। মাহমুদা কোটচাঁদপুরের ভোমরাডাঙ্গা গ্রামের শাহীন আলমের মেয়ে। সে ভোমরাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেনীতে পড়তো।

শিশুটির বাবা শাহিন আলম বলেন, আমি বিদেশ থেকে বাড়িতে আসার পর ভালোই ছিলাম কয়েকদিন। তবে মেয়েকে সে সহ্য করতে পারতো না। সেটা তাঁর আচরণে আমি বুঝতাম। তবে তাকে যে এভাবে পরিকল্পিত ভাবে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিবে সেটা আমি বুঝতে পারেনি।

তিনি বলেন, আমার কোন চাষাবাদ নাই। সে আমার মেয়েকে যে বিষ পান করিয়েছেন, সেটা সে পরিকল্পিত ভাবে সংগ্রহ করে খাওয়ায়। ঘটনাটি নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় শাহিন আলম বাদি হয়ে তাঁর স্ত্রীর নামে কোটচাঁদপুর মডেল থানায় মামলা করেছেন।

এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন মাতুব্বর বলেন, শিশু মাহমুদা হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় বাদি হয়েছেন শিশুটির পিতা। ওই মামলায় একজনকে আসামি করা হয়েছে।

সবুজদেশ/এসইউ