ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে নাসরিন সুলতানা সুবর্না (৩৪) নামে এক গৃহবধূকে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে।
সে কোটচাঁদপুর পৌর এলাকার বাজেবামনদহ গ্রামের উপজেলা পেছন পাড়ার আব্দুল হান্নানের স্ত্রী এবং ঝিনাইদহ পৌর এলাকার মহিলা কলেজ পাড়ার সাবেক পুলিশ সদস্য মৃত মোশাররফ হোসেনের মেয়ে। বুধবার সকালে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।
নিহতের স্বামী আব্দুল হান্নান কুশনা ইউনিয়নের রঘুনাথুর গ্রামের মৃত আব্দুল মালেক বিশ্বাসের ছেলে।
নিহতের ভাই আল আমীন কোটচাঁদপুর মডেল থানায় বাদি হয়ে এই বিষয়ে হত্যা অভিযোগ এনে এজাহার দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন।
নিহতের পরিবারের অভিযোগ, নাসরিন সুলতানা সুবর্ণার বাবা সাবেক পুলিশ সদস্য। তার অবসর ভাতার ভাগ নিতে দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন করে আসছিল জামাই। গত ২৩ আগস্ট তাকে ব্যাপর মারধর করে ঘুমের টাবলেট খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়। পরিবারের লোকজন জানতে পেরে তাকে কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসার পর ২৬ আগস্ট তাকে আবার স্বামীর বাড়িতে রেখে আসা হয়। বুধবার সকালে তার দুলাভাই আব্দুল হান্নান মোবাইল ফোনে তাদের জানায় তার বোন গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করেনি।
আল আমীন বলেন, আমার দুলা ভাইয়ের পরিবারের লোক আমার বোনকে মেরে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রেখেছে। আমার বোনের ৮ বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে। আমরা আমার বোন হত্যার বিচার চাই।
এই বিষয়ে আব্দুল হান্নানের বড়ো ভাই সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ বলেন বলেন, যৌতুক বা অর্থ লেনদেনের কোন বিষয় না। এই সমস্যা অনেক আগে থেকেই। ভাইয়ের বউ টিক টক করতো পরকীয়ায় আসক্ত। এ বিষয় নিয়ে তার ফ্যামিলির সাথে একাধিক বার বসাবসি হয়েছে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে তারপরও মেয়ে কোন প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি গোপনে পরকীয়া চালিয়েছে। ১২ বছর ধরে ভুগছি এই সমস্যায়। ছোট ভাই বাড়িতে না থাকলে ওই ছেলে এই বাড়িতে আসতো। পরকীয়ার কারণে আত্মহত্যা করেছে। যৌতুক কি কারনে চাইবে আমার বাবার দেওয়া সম্পত্তি বেঁচে তিনতলা বাড়ি করেছে শহরে এখনো যা আছে তা বিক্রি করে ওরা সারা জীবনেও খেয়ে ফুরাতে পারবে না। মেয়ের ভাইয়ের করা অভিযোগ ভিত্তিহীন মিথ্যা।
এই বিষয়ে কোটচাঁদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কবির হোসেন মাতুব্বর বলেন, এই ঘটনায় অপমৃত্যুর জিডি মূলে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের ভাই হত্যা মামলা দায়ের করতে এসেছিল। আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলাও তারা করতে চায় না। ময়নাতদন্ত শেষ হলেই নিশ্চিতভাবে বলা যাবে মৃত্যুর মূল কারণ। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ উঠে আসলেই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সবুজদেশ/এসএএস