ঢাকা ০৯:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খালেদা জিয়াকে হত্যার প্রচেষ্টা হচ্ছে: ফখরুল

Reporter Name

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে খালেদা জিয়াকে ‘মিথ্যা সাজানো’ মামলায় শাস্তি দিয়ে কারাগারে বেআইনিভাবে আটক রেখে হত্যা করার হীন প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার।

আজ শুক্রবার সকালে ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের সংবিধান এবং প্রচলিত আইন অনুযায়ী কোনো অসুস্থ নাগরিককে সুস্থ না হলে বিচারকাজ চালানো যায় না। এটা সম্পূর্ণ অমানবিক এবং সংবিধান পরিপন্থী। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে রাজনীতি এবং আসন্ন নির্বাচন থেকে দূরে রেখে একতরফা নির্বাচনে নিজেদের বিজয়ী ঘোষণা করার নীলনকশা নিয়েই এগোচ্ছে সরকার।

ফখরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকার এতটাই নিচে নেমে গেছে যে, একজন মারাত্মক অসুস্থ সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে চিকিৎসার কোনো সুযোগ দিচ্ছে না। অথচ চিকিৎসা পাওয়া তাঁর সাংবিধানিক অধিকার। তিনি বলেন, গণবিরোধী সরকার নিশ্চিত হয়েছে যে, খালেদা জিয়া মুক্ত হলে তাদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব বিপন্ন হবে এবং আগামী নির্বাচনে তাদের ভরাডুবি হতে বাধ্য। এটি এখন শুধু বিএনপির কথা নয়, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিনাক ভট্টাচার্য সম্প্রতি তাঁর লেখায় এ কথা বলেছেন।

অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের লজ্জাজনক পরাজয় হবে দাবি করে ফখরুল ইসলাম বলেন, খালেদা জিয়া যেন নির্বাচনে নেতৃত্ব দিতে না পারেন এবং জনগণ যেন তাদের পছন্দমতো প্রার্থীকে ভোট দিতে না পারে, এ জন্যই সরকার তাঁর চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বেআইনিভাবে সাজা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, সরকার তাঁকে শাস্তি দেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। আইন বহির্ভূতভাবে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আনা এই মামলায় উচ্চতর আদালত জামিন দেওয়ার পরও তাঁকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না। সম্পূর্ণ মিথ্যা, সন্ত্রাসী ও নাশকতার মামলায় তাঁকে জামিন দেওয়া হচ্ছে না। যদিও এসব মামলায় অন্যান্য অভিযুক্তদের সবাইকে জামিন দেওয়া হয়েছে।

খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে সকল দায়দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। বিশেষ করে সংবিধান লঙ্ঘন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে সরকারকে অভিযুক্ত হতে হবে। কারা কর্তৃপক্ষ প্রজাতন্ত্রের কর্তৃপক্ষ, তাদের দায়িত্ব সুস্পষ্টভাবে আইন ও বিধান দ্বারা পরিচালিত। এ দায় তাদেরও বহন করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা বলেছেন তিনি মারাত্মকভাবে অসুস্থ। অবিলম্বে বিশেষায়িত হাসপাতালে স্থানান্তর করে তাঁর জীবন রক্ষার জন্য তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া অতি প্রয়োজন। সরকার কোনো কথার কর্ণপাত না করে শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য চিকিৎসা না দিয়ে পরিত্যক্ত নির্জন কারাগারে স্যাঁতসেঁতে অস্বাস্থ্যকর কক্ষে আবদ্ধ করে রেখেছে। একজন সাধারণ বন্দীর সঙ্গেও এ ধরনের আচরণ করা হয় না। বেগম জিয়ার অবদান যারা অস্বীকার করতে চান, তারা কেউই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না বলে বিএনপি মনে করে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৪:০৮:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮
৮৯৪ Time View

খালেদা জিয়াকে হত্যার প্রচেষ্টা হচ্ছে: ফখরুল

আপডেট সময় : ০৪:০৮:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে খালেদা জিয়াকে ‘মিথ্যা সাজানো’ মামলায় শাস্তি দিয়ে কারাগারে বেআইনিভাবে আটক রেখে হত্যা করার হীন প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার।

আজ শুক্রবার সকালে ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের সংবিধান এবং প্রচলিত আইন অনুযায়ী কোনো অসুস্থ নাগরিককে সুস্থ না হলে বিচারকাজ চালানো যায় না। এটা সম্পূর্ণ অমানবিক এবং সংবিধান পরিপন্থী। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে রাজনীতি এবং আসন্ন নির্বাচন থেকে দূরে রেখে একতরফা নির্বাচনে নিজেদের বিজয়ী ঘোষণা করার নীলনকশা নিয়েই এগোচ্ছে সরকার।

ফখরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকার এতটাই নিচে নেমে গেছে যে, একজন মারাত্মক অসুস্থ সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে চিকিৎসার কোনো সুযোগ দিচ্ছে না। অথচ চিকিৎসা পাওয়া তাঁর সাংবিধানিক অধিকার। তিনি বলেন, গণবিরোধী সরকার নিশ্চিত হয়েছে যে, খালেদা জিয়া মুক্ত হলে তাদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব বিপন্ন হবে এবং আগামী নির্বাচনে তাদের ভরাডুবি হতে বাধ্য। এটি এখন শুধু বিএনপির কথা নয়, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিনাক ভট্টাচার্য সম্প্রতি তাঁর লেখায় এ কথা বলেছেন।

অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের লজ্জাজনক পরাজয় হবে দাবি করে ফখরুল ইসলাম বলেন, খালেদা জিয়া যেন নির্বাচনে নেতৃত্ব দিতে না পারেন এবং জনগণ যেন তাদের পছন্দমতো প্রার্থীকে ভোট দিতে না পারে, এ জন্যই সরকার তাঁর চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বেআইনিভাবে সাজা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, সরকার তাঁকে শাস্তি দেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। আইন বহির্ভূতভাবে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আনা এই মামলায় উচ্চতর আদালত জামিন দেওয়ার পরও তাঁকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না। সম্পূর্ণ মিথ্যা, সন্ত্রাসী ও নাশকতার মামলায় তাঁকে জামিন দেওয়া হচ্ছে না। যদিও এসব মামলায় অন্যান্য অভিযুক্তদের সবাইকে জামিন দেওয়া হয়েছে।

খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে সকল দায়দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। বিশেষ করে সংবিধান লঙ্ঘন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে সরকারকে অভিযুক্ত হতে হবে। কারা কর্তৃপক্ষ প্রজাতন্ত্রের কর্তৃপক্ষ, তাদের দায়িত্ব সুস্পষ্টভাবে আইন ও বিধান দ্বারা পরিচালিত। এ দায় তাদেরও বহন করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা বলেছেন তিনি মারাত্মকভাবে অসুস্থ। অবিলম্বে বিশেষায়িত হাসপাতালে স্থানান্তর করে তাঁর জীবন রক্ষার জন্য তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া অতি প্রয়োজন। সরকার কোনো কথার কর্ণপাত না করে শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য চিকিৎসা না দিয়ে পরিত্যক্ত নির্জন কারাগারে স্যাঁতসেঁতে অস্বাস্থ্যকর কক্ষে আবদ্ধ করে রেখেছে। একজন সাধারণ বন্দীর সঙ্গেও এ ধরনের আচরণ করা হয় না। বেগম জিয়ার অবদান যারা অস্বীকার করতে চান, তারা কেউই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না বলে বিএনপি মনে করে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।