খুলনার কয়রায় দীর্ঘ এক যুগ পর জামায়াতে ইসলামীর এক কর্মী হত্যার ঘটনায় আদালতে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার নিহত জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী ছবিরন নেছা বাদী কয়রা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কয়রা থানায় এফআইআর করতে আদেশ দেয়।
এ মামলায় খুলনা-৬ আসনের সাবেক দুই সংসদ সদস্যসহ ১১৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর বেশিরভাগই আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী। এছাড়া সাংবদিকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে মামলার এজাহারে।
মামলার এজাহারে জানা গেছে, জামায়াতের কেন্দ্রিয় নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের উদ্যোগে কয়রা সদরে মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ওই সমাবেশ শেষে বাড়ি ফেরার পথে উপজেলার জালালের মোড়ে আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতৃত্বে হামলা হয়। হামলায় কমপক্ষে ২৯ জন আহত হয়। এর মধ্যে মামলার বাদীর স্বামী জাহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলেই নিহত হন। সে সময় আহতদেরও হাসপাতালে নিতেও বাঁধা দেয় আওয়ামীলীগ কর্মীরা।
মামলার ৫২ নম্বর আসামি কয়রা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মামলায় উল্লিখিত ঘটনার সময় আমি খুলনা জেলা শহরের একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলাম। ঘটনার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। মামলায় আমার নাম থাকাটা বিব্রতকর।
মামলার বাদী ছবিরন নেছা জানান, তাঁর স্বামী জাহিদুল ইসলাম দিন মজুরি কাজ করতেন। তিনি স্বামী হত্যার বিচারের দাবিতে মামলাটি করেছেন। তবে মামলার আসামি তালিকাকায় সাংবাদিকদের নাম থাকার বিষয়ে তিনি কেন মন্তব্য করতে চান না বলে মুঠোফোনে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে জামায়াতের কয়রা উপজেলা শাখার আমীর মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনার দিন শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশে আওয়ামী লীগ সশস্ত্র হামলা চালায়। এ সময় বহু নেতাকর্মী আহত হয়। এর মধ্যে ঘটনাস্থলে একজন নিহত হন। সে সময় মামলা করার সাহস করেনি কেউ। এখন ভুক্তভোগীর পরিবার হত্যার বিচার চেয়ে মামলা করেছেন। তবে আমরা বারবার বলছি মামলায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কারো নাম যেন জড়ানো না হয়। কেউ যদি অপরাধে জড়িত থাকে, অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। কিন্তু কাউকে হেয় প্রতিপন্ন কিংবা হয়রানি করতে মামলায় আসামি করা উচিত নয়। এতে সুবিচার করার প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
সবুজদেশ/এসইউ