বুধবার রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ও পুলিশ কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।
বিএনপি অভিযোগ করে আসছে, ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থীর মনোনীত এজেন্টদের তুলে নিয়ে গিয়ে সাজানো মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে।
তিন সিটির সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে বিকালে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনাররা সিটির প্রশাসন ও পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকের পরে ইসি সচিব বলেন, “গণগ্রেপ্তার করা হচ্ছে-এটা প্রার্থীর অভিযোগ হতে পারে। তবে পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন গণগ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। ওখানে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটেছে, সেটাকে কেন্দ্র করে যারা যারা জড়িত শুধু তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। হয়রানি করার জন্য কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।”
সচিব জানান, পত্রপত্রিকায় বা অন্যভাবে যেসব তথ্য এসেছে সেগুলোর বিষয়ে পুলিশ কমিশনারদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে।
“তারা জানিয়েছেন, কাউকে হয়রানির উদ্দেশ্যে নয়, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এবং মামলার ভিত্তিতে তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।”
বিএনপির লিখিত অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ ধরনের কোনো অভিযোগের সত্যতা পুলিশ কমিশনারদের বক্তব্যে পাওয়া যায়নি।
“আমরা বিষয়গুলো তলিয়ে দেখছি। রিটার্নিং অফিসারের কাছে অভিযোগের তালিকা দেওয়া হয়েছে। তারাও বিষয়গুলো দেখছেন। তারা দেখেছেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।”
নির্বাচনের পরিবেশের বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচনী পরিস্থিতি ‘অত্যন্ত ভালো’ বলে বৈঠকে জানানো হয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবে প্রার্থীরা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
“কোথাও কোনো সমস্যা হচ্ছে না। হৃদ্যতাপূর্ণভাবে, সুষ্ঠুভাবে তারা প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। বিভিন্ন সময় যেসব অভিযোগ আসছে, তাৎক্ষণিকভাবে তারা সেগুলো খতিয়ে দেখছেন এবং সুরাহা করার ব্যবস্থা করছেন।”
তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে যেন সুষ্ঠু পরিবেশ অক্ষুণ্ন থাকে। নির্বাচনের দিন যেন এমন কোনো পরিবেশ সৃষ্টি না হয়, যাতে ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে বাধার সম্মুখীন হন।”
আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠক
আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে ইসি সচিব বলেন, তিন সিটি নির্বাচনে ‘যা যা সহযোগিতা প্রয়োজন তারা তা করবে’।
“আমরা তাদের কাছে এ ধরনের কিছু বলিনি। উনারা বলেছেন, যেসব অভিযোগ ইসির বিরুদ্ধে হয়ে থাকে সেসব অভিযোগের ভিত্তি নেই। সরকারি দল এসব অভিযোগকে প্রশ্রয় দেয় না। কারণ নির্বাচন কমিশন স্বাধীন সংস্থা, আইন কানুন বিধি বিধান অনুসারে কার্যক্রম পরিচালিত করবে।”
আচরণবিধি লংঘনের বিষয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে সচিব বলেন, “আচরণবিধি লংঘনের বিষয়গুলো ওভাবে আলোচনা হয়নি। আমাদের কাছে যে সকল বিষয় এসেছে দুই সিটি মেয়রকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। স্পিকারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে যেন কোনো এমপি প্রচারণায় অংশ না নেন।”
ইউব্লিউজির ‘ক্ষমা’
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে ইডব্লিউজির প্রতিবেদন প্রসঙ্গে সচিব বলেন, “ইডব্লিউজি এজন্য ক্ষমা চেয়েছে। তারা আমার সঙ্গে দেখা করেছে। লিখিতভাবে প্রতিটি পত্রিকায় তারা প্রতিবাদ দিয়েছেন।”