সবুজদেশ ডেক্সঃ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সহযোগী অধ্যাপক মাইদুল ইসলামকে রিমান্ডে নেয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষকরা। মুখে কালো কাপড় বেঁধে এই মানববন্ধন ও সমাবেশে অংশ নেন বিভিন্ন বিভাগের আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও বামপন্থী প্রায় অর্ধশত শিক্ষক। মঙ্গলবার ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে বেলা সাড়ে ১১টায় সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

মানববন্ধন শেষে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক মো. শামসুল আলম সেলিম জিডিটাল নিরাপত্তা আইনের বিতর্কিত ধারাগুলো বাতিল করার দাবি জানিয়ে বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাইদুলকে যে ডিজিটাল আইনের মাধ্যমে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে, আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণের কথা বলার স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে এই আইন দিয়ে। আশা করি, সরকারের বোধোদয় হবে এবং মাইদুলকে নিঃশর্ত মুক্তি দেবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যদি কথা বলতে না পারি, তা হলে অন্যরা কীভাবে বলবে? আমরা সরকারের কাছে আহ্বান জানাব, অবিলম্বে ডিজিটাল আইনের এ ধারা প্রত্যাহার করে নিয়ে মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা নিশ্চিত করার।

নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস বলেন, ভিন্নমত প্রকাশ করা গণতন্ত্রের অংশ, সরকার যখন ভিন্নমতকে দমন করতে চাচ্ছে, তার মানে সরকার গণতন্ত্রের বিপরীতমুখী অবস্থানে। আমরা সেটির তীব্র নিন্দা করি। আমরা মনে করি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন থেকে শুরু করে যে কোনো ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও নিপীড়নমূলক ব্যবস্থা সেটি আলোকচিত্রীর সঙ্গে হোক বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের সঙ্গে হোক, সেটি ভয়ানক অন্যায়।

মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক মো. শাহেদুর রশিদ, অধ্যাপক মো. নূরুল ইসলাম, অধ্যাপক মানস কুমার চৌধুরী, অধ্যাপক শরিফুল হুদা রিপন, সহযোগী অধ্যাপক মো. নজরুল ইসলাম প্রান্তিক, খন্দকার হাসান মাহমুদ, মোছা. তমালিকা সুলতানা, মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক শাকিল আহম্মেদ, মোহাম্মদ রেজাউল রকিব প্রমুখ।

উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ‘কটুক্তি’করে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার অভিযোগে গত ২৩ জুলাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে হাটহাজারী থানায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা করেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইফতেখারুল ইসলাম। এ মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। সোমবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে তিন দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here