আগের মতো রোববারও সকাল থেকে বিভিন্ন জেলার আঞ্চলিক সড়ক ও মহাসড়কগুলোতে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে; ফলে বিভিন্ন স্থানে আটকে পড়া যাত্রীরা তাদের গন্তব্যে পেঁছাতে পারছেন না।
গত ২৯ জুলাই ঢাকায় বাসচাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর থেকে শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলনে বেশ কিছু গাড়ি ভাঙচুর হয়; সমালোচনার মুখে পড়েন পরিবহন শ্রমিকদের নেতা নৌমন্ত্রী শাজাহান খান। এরপর শুক্রবার থেকে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক শওকত আলী বাবুল রোববার সকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাজধানীর তিনটি আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকে কোন বাস ছেড়ে যায়নি। একই সঙ্গে অন্যান্য জেলা থেকেও ঢাকামুখী কোনো বাসও চলছে না।
“সড়কে আমাদের কোনো নিরাপত্তা নাই। তাই আমরা বাস চালাতে পারছি না। পরিস্থিতির উত্তরণ না হলে আমরা বাস নামাব না।”
ময়মনসিংহ পাটগুদাম বাস টার্মিনালে কথা হয় হালুয়াঘাট থেকে আসা আব্দুল মান্নানের সঙ্গে; তার গন্তব্য ঢাকা।বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে মান্নান বলে, “ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক আত্মীয়কে দেখতে যাব। বাস বন্ধ তাই যেতে পাচ্ছিনা।”
আরেক যাত্রী মুরিনা বেগম বলেন, “ঢাকা যাব বলে দুইদিন ধরে অপেক্ষা করছি; বাস না ছাড়ায় আটকা পড়ে আছি। ট্রেনের টিকিটও পাচ্ছি না। কিন্তু ঢাকা যাওয়া খুবই দরকার।”
জেলা পরিবহন মোটর মালিক সমিতির সভাপতি মমতাজ উদ্দিন সরকার বলেন, ময়মনসিংহ থেকে দূরপাল্লা সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। আঞ্চলিক সড়কেও বাস চলাচল করছে না।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শীথিল হলে বাস চলাচল আবার স্বাভাবিক হবে বলে জানান এ পরিবহন নেতা জানান।
মাগুরা জেলা বাস টার্মিনালে অপেক্ষায় থাকা শহীদুর রহমান বলেন, “সকাল থেকে ঢাকায় যাওয়ার জন্য টার্মিনালে অবস্থান করছি। কিন্তু কোনো বাস ছাড়ছে না।”
মনিরুল ইসলাম বলেন, “অফিস থেকে দুই দিনের ছুটি নিয়ে বাড়ি এসেছিলাম। কিন্তু বাস না চলায় চারদিন দিন পেরিয়ে গেলেও কর্মস্থলে ফিরতে পারিনি।”
জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এমদাদুর রহমান মোল্লা বলেন, মাগুরায় সকাল থেকে জেলা বাস টার্মিনাল থেকে দূর পাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি; অধিকাংশ বাস কাউন্টার বন্ধ রয়েছে।সোহাগ পরিবহনের কাউন্টার মালিক ইমদাদুর বলছেন, মালিকরা বাস না ছাড়ায় তারা বেকার বসে রয়েছেন।
ফরিদপুর পৌরবাস টার্মিনালে বাসের জন্য অপেক্ষায় থাকা জুলেখা পারভীন বলেন, “রাজবাড়ী যাব বলে অনেক কষ্টে মাদারীপুর থেকে ফরিদপুর এসেছি, কিন্তু এখন রাজবাড়ী যাওয়ার বাস পাচ্ছি না।”
জুলেখার মতো অনেকেই বাসস্ট্যান্ডে এসে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে বাড়ি ফিরে গেছেন। কেউবা আবার বিকল্প পথে ঢাকার দিকে রওনা দিচ্ছেন ।