চাঁদা না পেয়ে মডেল মসজিদের কাজ বন্ধ করে দিল ছাত্রলীগ
পঞ্চগড়ঃ
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাসফিকুর রহমান সাকিবের বিরুদ্ধে চাঁদা না পেয়ে মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ সময় ঠিকাদারসহ তার লোকজনদের মারধর এবং ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় বৃহষ্পতিবার দুপুরের পর ঠিকাদারের পক্ষ থেকে থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। তবে অভিযোগ পাওয়ার কথা অস্বীকার করে পুলিশ জানায়, ওই লিখিত কাগজটি মামলা নেয়ার মতো না।
ঠিকাদারের লিখিত অভিযোগে জানা যায়, দেশের ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পের অধীনে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা সদরের ডাঙ্গীবস্তি এলাকায় ৫০ শতক জমির উপর মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। গণপূর্ত বিভাগের অধীনে ১২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে তিনতলা ভবন বিশিষ্ট মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ করছে রংপুরের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নর্দান টেকনো ট্রেড। কিন্তু কাজ শুরুর প্রাথমিক অবস্থা থেকেই স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাদের বাধার মুখে পড়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
তাদের অভিযোগ, সম্প্রতি ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে তেঁতুলিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাসফিকুর রহমান সাকিব। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় বুধবার থেকে নির্মাণ কাজ বন্ধের নির্দেশ দেয় সাকিব। বৃহস্পতিবার সকালে ভিত্তি ঢালাইয়ের কাজ শুরু হলে ছাত্রলীগ নেতা সাকিব তার ২০/২৫ জন সহযোগী নিয়ে মডেল মসজিদ নির্মাণ স্থলে হাজির হয়। এ সময় তারা সেখানে অস্থায়ী ঘর ও চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করে। তারা ঠিকাদার নাজমুলহকসহ অন্য কর্মীদের মারধর করে।
ঠিকাদার নাজমুল হক বলেন, সাকিব ছাত্রলীগের পরিচয় দিয়ে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। আমরা তা দিতে অস্বীকার করায় বারবার আমাদের কাজ বন্ধ দেয়। বৃহস্পতিবার সকালে মডেল মসজিদের ভিত্তির ঢালাইয়ের কাজ শুরু হলে সাকিব তার ২০/২৫ জন সহযোগী নিয়ে হাজির হয়ে বলেন, কাজ শুরুর অনুমতি কে দিলো বলেই ভাঙচুর শুরু করেন। তারা আমাদের মারধর করে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
প্রকল্পের প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, তাদের চাঁদা না দেয়ায় এবং ইট, বালু ও পাথর সরবরাহের সুযোগ না দেয়ায় তারা এসে কোনো কথা না বলে ভাঙচুর শুরু করে। এ সময় ঠিকাদার ও আমাদের লোকজনদের মারধর করে তারা। কাজ শুরু করলে আমাদের সিমেন্টের সঙ্গে বেঁধে ঢালাই করে দেয়ার হুমকি দেয়।
অভিযোগ অস্বীকার করে তেঁতুলিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাসফিকুর রহমান সাকিব বলেন, আমরা কোথাও কোনো চাঁদাবাজি করিনি। আমরা চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজিতে বিশ্বাস করি না। তবে আমি আমার নেতাকর্মীদের এসব থেকে বিরত রাখতে তাদের কাজের ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলাম। তারা যেসব অভিযোগ করছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশের ওসি জহুরুল ইসলাম বলেন, ঘটনা শোনার পর আমি নিজেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। তবে এখনও কেউ আমাকে কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তারা যে লিখিত নিয়েছেন, সেটা মামলা নেওয়ার মতো কোনো লিখিত অভিযোগ নয়।।