ঢাকা ০৪:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাকরিচ্যুত হতে পারেন জামালপুরের সেই ডিসি

Reporter Name

সবুজদেশ ডেস্কঃ

নারী অফিস সহকর্মীর সঙ্গে আপত্তিকর আচরণের ঘটনায় বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হওয়া জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীর তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে চাকরিচ্যুত হতে পারেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ওএসডি হওয়া জামালপুরের ডিসির বিরুদ্ধে সার্বিক বিষয়ে তদন্ত করা হবে। দোষী প্রমাণিত হলে তার পদাবনতি বা চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হতে পারে।

গত বৃহস্পতিবার জামালপুরের সাবেক ডিসি আহমেদ কবীরের একটি আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটিতে ডিসি আহমেদ কবীরের সঙ্গে তার অফিসের এক নারীকর্মীকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখা যায়।

বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে খন্দকার সোহেল আহমেদ নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে জেলা প্রশাসকের আপত্তিকর ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। যদিও বিষয়টি অস্বীকার করে ঘটনাটি ‘সাজানো’ বলে দাবি করেন ডিসি আহমেদ কবীর। ওই ঘটনায় জামালপুরসহ সারা দেশের মানুষের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

এ ঘটনায় রোববার জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীরকে ওএসডি করা হয়। তার বদলে নতুন ডিসি হিসেবে নিয়োগ পান পরিকল্পনামন্ত্রীর একান্ত সচিব (উপসচিব) মোহাম্মদ এনামুল হক। ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব (জেলা ও মাঠ প্রশাসন অধিশাখা) মুশফিকুর রহমানকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি, ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনারের একজন প্রতিনিধি, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) একজন প্রতিনিধি। কমিটিকে আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

আদেশে কমিটিকে প্রকাশিত ভিডিওটির সঠিকতা যাচাই করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া কমিটি প্রয়োজনে সরেজমিন পরিদর্শন করবে এবং ভিডিওটি যাচাইয়ের বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেবে। কমিটিতে প্রতিবেদনে সুস্পষ্ট মতামত দিতে হবে বলেও আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগ প্রমাণিত হলে জামালপুরের ডিসি থেকে ওএসডি হওয়া আহমেদ কবীরের বিরুদ্ধে ‘উদাহরণ সৃষ্টির মতো’ শাস্তির ব্যবস্থা হবে বলে জানান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই উদাহরণ সৃষ্টি করার মতো পানিশমেন্ট হবে। আমাদের চাকরির বিধানে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ রয়ে গেছে। সেটিই হবে।

আমরা খুব দ্রুত একটা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারব। সেখানে কী ঘটেছে, কতটুকু ‘অনৈতিকতা’ সেখানে হয়েছে, সবকিছু বিচার-বিশ্লেষণ করেই তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দেবে। আর তার ভিত্তিতেই সরকারব্যবস্থা নেবে।’

বিষয়টি অনেকের ‘দৃষ্টিগোচর’ হয়েছে মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটি অনৈতিক কর্মকাণ্ড। একজন ডিসি হিসেবে তার যে দায়দায়িত্ব আছে, সেখান থেকে সরে গিয়ে যে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কথা আমরা দেখেছি।

এটি আমাদের কাছে লিখিত এসেছে এবং আমরা খুব ত্বরিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। আমরা তাকে ওএসডি করেছি। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে আমরা সেটি করেছি আপাতত।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৪:২৪:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ অগাস্ট ২০১৯
৬৫৫ Time View

চাকরিচ্যুত হতে পারেন জামালপুরের সেই ডিসি

আপডেট সময় : ০৪:২৪:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ অগাস্ট ২০১৯

সবুজদেশ ডেস্কঃ

নারী অফিস সহকর্মীর সঙ্গে আপত্তিকর আচরণের ঘটনায় বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হওয়া জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীর তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে চাকরিচ্যুত হতে পারেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ওএসডি হওয়া জামালপুরের ডিসির বিরুদ্ধে সার্বিক বিষয়ে তদন্ত করা হবে। দোষী প্রমাণিত হলে তার পদাবনতি বা চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হতে পারে।

গত বৃহস্পতিবার জামালপুরের সাবেক ডিসি আহমেদ কবীরের একটি আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটিতে ডিসি আহমেদ কবীরের সঙ্গে তার অফিসের এক নারীকর্মীকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখা যায়।

বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে খন্দকার সোহেল আহমেদ নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে জেলা প্রশাসকের আপত্তিকর ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। যদিও বিষয়টি অস্বীকার করে ঘটনাটি ‘সাজানো’ বলে দাবি করেন ডিসি আহমেদ কবীর। ওই ঘটনায় জামালপুরসহ সারা দেশের মানুষের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

এ ঘটনায় রোববার জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীরকে ওএসডি করা হয়। তার বদলে নতুন ডিসি হিসেবে নিয়োগ পান পরিকল্পনামন্ত্রীর একান্ত সচিব (উপসচিব) মোহাম্মদ এনামুল হক। ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব (জেলা ও মাঠ প্রশাসন অধিশাখা) মুশফিকুর রহমানকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি, ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনারের একজন প্রতিনিধি, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) একজন প্রতিনিধি। কমিটিকে আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

আদেশে কমিটিকে প্রকাশিত ভিডিওটির সঠিকতা যাচাই করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া কমিটি প্রয়োজনে সরেজমিন পরিদর্শন করবে এবং ভিডিওটি যাচাইয়ের বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেবে। কমিটিতে প্রতিবেদনে সুস্পষ্ট মতামত দিতে হবে বলেও আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগ প্রমাণিত হলে জামালপুরের ডিসি থেকে ওএসডি হওয়া আহমেদ কবীরের বিরুদ্ধে ‘উদাহরণ সৃষ্টির মতো’ শাস্তির ব্যবস্থা হবে বলে জানান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই উদাহরণ সৃষ্টি করার মতো পানিশমেন্ট হবে। আমাদের চাকরির বিধানে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ রয়ে গেছে। সেটিই হবে।

আমরা খুব দ্রুত একটা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারব। সেখানে কী ঘটেছে, কতটুকু ‘অনৈতিকতা’ সেখানে হয়েছে, সবকিছু বিচার-বিশ্লেষণ করেই তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দেবে। আর তার ভিত্তিতেই সরকারব্যবস্থা নেবে।’

বিষয়টি অনেকের ‘দৃষ্টিগোচর’ হয়েছে মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটি অনৈতিক কর্মকাণ্ড। একজন ডিসি হিসেবে তার যে দায়দায়িত্ব আছে, সেখান থেকে সরে গিয়ে যে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কথা আমরা দেখেছি।

এটি আমাদের কাছে লিখিত এসেছে এবং আমরা খুব ত্বরিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। আমরা তাকে ওএসডি করেছি। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে আমরা সেটি করেছি আপাতত।