কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ

কুষ্টিয়ার মিরপুরে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জাল করে চার বছর ধরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ওএমএসের বরাদ্দকৃত চাল আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত ওই ইউপি সদস্যের নাম মীর জাকিরুল ইসলাম। তিনি উপজেলার ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের বিজনগর ৬নং নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। গত চার বছর ধরে ইউপি সদস্য মীর জাকিরুল ইসলাম চাল উত্তোলন করতেন।

সম্প্রতি বিষয়টি জানতে পেরে ভুক্তভোগী জয়নাল আবেদীন প্রতিকারের আশায় জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেছেন। স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। উপজেলার ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের বিজনগর গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন। তিনি জানতেন না তার নামে রয়েছে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ড। সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে উপকারভোগীদের তালিকা যাচাই-বাছাই করা হলে বিষয়টি জানতে পারেন তিনি। পরে চাল উত্তোলন করতে গেলে বুঝতে পারেন গত চার বছর ধরে তার নামে চাল উত্তোলন করছেন তারই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মীর জাকিরুল ইসলাম। স্বাক্ষর জাল করে করা হয়েছে এমন প্রতারনা।

ভুক্তভোগী জয়নাল আবেদীন বলেন, পেশায় আমি একজন চাষী। আমার নামে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ওএমএসের বরাদ্দকৃত চালের কার্ড আছে এটা আমার জানা ছিল না। উপকারভোগীদের কার্ড যাচাই বাছাই করতে গেলে অনিয়মের বিষয়টি টের পান। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আমাকে গ্রাম পুলিশ দিয়ে ডেকে পাঠালে একটি কার্ডে চেয়ারম্যান ও মেম্বর টিপসই দিতে বলে। আমি এসএসসি পাশ। কেনো টিপসই দিব? এমন বলতেই সাক্ষর দিতে বলেন তারা। সাক্ষর দিতেই দেখি কার্ডের সঙ্গে আমার ছবি। তখন সাক্ষর দিতে রাজি না হলে জোর করে টিপসই নেই তারা। পরে চেয়ারম্যানকে চার বছর ধরে চাল তুলে নেওয়ার কথা জানালে আমার উপরই চোরাও হন তিনি। এমন প্রতারণার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ শাস্তির আশায় জেলা প্রশাসকের নিকট অভিযোগ করেছি।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ১০ টাকার চালের কার্ডধারী হতদরিদ্র জয়নাল আবেদীন তিনি নিজেই জানেন না তার নামে কার্ড আছে। এমন অনেক প্রতারণার সাথেই জড়িত অভিযুক্ত এই জনপ্রতিনিধি। গরীব ও অসহায় মানুষের বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দিতেও অর্থ লেনদেন ও বয়স্ক ভাতার টাকার কমিশন নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মীর জাকিরুল ইসলাম জানান,এর সাথে জড়িত নন তিনি, তাকে ফাঁসাতে ষড়যন্ত্র করছে প্রতিপক্ষরা। ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের ওএমএসের চালের ডিলার রাসেল আহমেদ সাথে যোগাযোগ করা হলে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি তিনি।

এ ব্যাপারে ফুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী আবদুস সালাম সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,অফিসে আসেন। একটু কথা বলি।

মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিংকন বিশ্বাস বলেন, অভিযোগ পেলেই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো.আসলাম হোসেন বলেন,অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শেষে নেওয়া হবে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here