চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় দায়ের হওয়া একটি হত্যাচেষ্টা ও গুরুতর জখমের মামলায় শাহ আলম (২৭) নামের এক যুবককে ১১ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২৩ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শিমুল কুমার বিশ্বাস এ রায় দেন।
এ ঘটনায় দণ্ডপ্রাপ্ত শাহ আলম চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নের চকপাড়ার মরহুম রহিমের ছেলে বলে জানা গেছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২২ সালের ২১ ডিসেম্বর সকালে শাহ আলমের সাইকেল মেরামতের দোকানের সামনে সাইকেল সরানোর জন্য ওই এলাকার লালনের ছেলে আমির হোসেনকে অনুরোধ করলে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। পরবর্তীতে ২১ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে মামলার ১ নম্বর বাদি মাফিজুর রহমান (১৭) এবং ২ নম্বর বাদি আমির হোসেন আলুকদিয়া চকপাড়া বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় পথে একই এলাকার কিতাব মণ্ডলের ছেলে সাইজুলের দোকানের সামনে তাদের গতিরোধ করে শাহ আলম ও তার সহযোগীরা।
এ সময় শাহ আলম তার হাতে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে খুন করার উদ্দেশ্যে মাফিজুর রহমানের পেটে গুরুতর আঘাত করেন, যার ফলে তার ভুঁড়ি বেরিয়ে যায়। মাফিজুর রহমানের বন্ধু আমির হোসেন তাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে শাহ আলম তাকেও ছুরি দিয়ে পেটের ডান পাশে আঘাত করেন এবং তাকে গুরুতর জখম করেন।
এ ঘটনায় আশপাশের লোকজন তাদের ডাক-চিৎকার শুনে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসক তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ঘটনার পর দিন মাফিজুর রহমানের বাবা হায়দার আলী এবং আমির হোসেনের বাবা লালন শেখ চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় হত্যাচেষ্টা ও গুরুতর জখমের অভিযোগে মামলা করেন।
মামলার তদন্ত শেষে শাহ আলমকে ১ নম্বর আসামি তার মা রেনু রেনুকে ২ নম্বর আসামি এবং তার ভাই জুয়েলকে ৩ নম্বর আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। দীর্ঘদিন চলা মামলার পর সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত শাহ আলমকে দোষী সাব্যস্ত করেন।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) আদালত প্যানেল কোডের ১৮০-এর ৩২৬ ধারায় পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন। এছাড়া ৩০৭ ধারায় পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। ৩২৪ ধারায় এক বছরের কারাদণ্ড এবং তিন হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো দু’মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
আদালত তার রায়ে বলেন, দণ্ডপ্রাপ্ত শাহ আলমের সকল দণ্ড একত্রে চলবে। ১৮৯৮-এর ৩৫এ ধারার বিধান অনুযায়ী আসামির পূর্ববর্তী হাজতবাসের মেয়াদ এই কারাদণ্ড থেকে বাদ যাবে। এছাড়া মামলার খরচ এবং ভিকটিমদের চিকিৎসা বাবদ দণ্ডপ্রাপ্ত শাহ আলমকে প্রদত্ত অর্থ পরিশোধ করতে হবে।
সবুজদেশ/এসইউ