ঢাকা ০২:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছাত্রদল নেতা তাওহীদুল হত্যা মামলা, সব আসামি খালাস

Reporter Name

সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের কলেজ শাখার নেতা তাওহীদুল ইসলাম (২৫) হত্যা মামলার সব আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। খালাস পাওয়া সবাই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।

অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক বেগম মমিনুন নেসা সোমবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি মো. মাসুক আহমদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত এ রায় দিয়েছেন।

খালাসপ্রাপ্ত ১৬ জন হলেন মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগ শাখার সভাপতি সৌমেন দে, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হাই, ছাত্রলীগ কর্মী মো. মুশফিকুজ্জামান আকন্দ, হাফিজুর রহমান, ফারহান আনজুম নিশাত পাঠান, অন্তরদীপ, আবু সালাহ মো. ফাহিম, শরিফুল ইসলাম খান, মো. জুবায়ের ইবনে খায়ের, জহুর রায়হান, এ টি এম তামজিদুল ইসলাম, মো. সারওয়ার হোসেন, মো. ওয়াহিদুর রহমান খান, মো. আরিফুর রহমান চৌধুরী, মো. আফজালুল আলম আফজাল ও আশিষ কুমার শীল। তাঁরা সবাই ওই সময় মেডিকেলের শিক্ষার্থী ছিলেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৪ জুন ওসমানী মেডিকেল কলেজের আবু সিনা ছাত্রাবাসের ১০০৩ নম্বর কক্ষে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয় তাওহীদুল ইসলামকে। তাওহীদ এমবিবিএস চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কলেজ শাখার আপ্যায়নবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তিনি শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার সামসুর রহমানের ছেলে।

ওই ঘটনায় পরদিন তাওহীদের চাচা আনোয়ার হোসেন মাতবর বাদী হয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সৌমেন দে ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুলসহ ছাত্রলীগের ১৬ নেতা-কর্মীকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

হত্যার প্রতিবাদে ছাত্রদল মেডিকেল কলেজে ধর্মঘটের ডাক দেয় ও বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভের মুখে মেডিকেল কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ঘটনার তিন দিনের মাথায় ৭ জুন আসামিদের মধ্যে ছাত্রলীগ নেতা সৌমেনসহ ১০ জনকে মেডিকেল কলেজ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। পরে পালানোর সময় সৌমেনকে রেলস্টেশন থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ৮ জুন সৌমেন আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দিয়েছিলেন।

২০১৬ সালে এ মামলায় ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এরপর বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়। ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন।

ছাত্রদলের একজন সাবেক নেতা বলেন, সংগঠনের পক্ষ থেকে আইনি সহায়তা দিয়ে মামলা পরিচালনা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু মামলার বাদী অজ্ঞাত কারণে এতে সম্মত হননি। বিচার চলাকালে বাদীকে আর সিলেটেও আসতে দেখা যায়নি। পরে তাঁরা খোঁজ নিয়ে জেনেছেন যে বাদী শরীয়তপুর আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। সোমবার রায় ঘোষণার সময়েও তাওহীদুল পরিবারের কেউ উপস্থিত ছিলেন না।

মামলার রায় হওয়ার পর এ ব্যাপারে কথা বলতে মামলার বাদী ও তাওহীদুলের চাচা আনোয়ার হোসেন মাতবরের মুঠোফোন নম্বরে ফোন দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

About Author Information
আপডেট সময় : ১১:৪৭:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অগাস্ট ২০১৮
৩৮৪ Time View

ছাত্রদল নেতা তাওহীদুল হত্যা মামলা, সব আসামি খালাস

আপডেট সময় : ১১:৪৭:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অগাস্ট ২০১৮

সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের কলেজ শাখার নেতা তাওহীদুল ইসলাম (২৫) হত্যা মামলার সব আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। খালাস পাওয়া সবাই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।

অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক বেগম মমিনুন নেসা সোমবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি মো. মাসুক আহমদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত এ রায় দিয়েছেন।

খালাসপ্রাপ্ত ১৬ জন হলেন মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগ শাখার সভাপতি সৌমেন দে, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হাই, ছাত্রলীগ কর্মী মো. মুশফিকুজ্জামান আকন্দ, হাফিজুর রহমান, ফারহান আনজুম নিশাত পাঠান, অন্তরদীপ, আবু সালাহ মো. ফাহিম, শরিফুল ইসলাম খান, মো. জুবায়ের ইবনে খায়ের, জহুর রায়হান, এ টি এম তামজিদুল ইসলাম, মো. সারওয়ার হোসেন, মো. ওয়াহিদুর রহমান খান, মো. আরিফুর রহমান চৌধুরী, মো. আফজালুল আলম আফজাল ও আশিষ কুমার শীল। তাঁরা সবাই ওই সময় মেডিকেলের শিক্ষার্থী ছিলেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৪ জুন ওসমানী মেডিকেল কলেজের আবু সিনা ছাত্রাবাসের ১০০৩ নম্বর কক্ষে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয় তাওহীদুল ইসলামকে। তাওহীদ এমবিবিএস চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কলেজ শাখার আপ্যায়নবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তিনি শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার সামসুর রহমানের ছেলে।

ওই ঘটনায় পরদিন তাওহীদের চাচা আনোয়ার হোসেন মাতবর বাদী হয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সৌমেন দে ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুলসহ ছাত্রলীগের ১৬ নেতা-কর্মীকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

হত্যার প্রতিবাদে ছাত্রদল মেডিকেল কলেজে ধর্মঘটের ডাক দেয় ও বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভের মুখে মেডিকেল কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ঘটনার তিন দিনের মাথায় ৭ জুন আসামিদের মধ্যে ছাত্রলীগ নেতা সৌমেনসহ ১০ জনকে মেডিকেল কলেজ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। পরে পালানোর সময় সৌমেনকে রেলস্টেশন থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ৮ জুন সৌমেন আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দিয়েছিলেন।

২০১৬ সালে এ মামলায় ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এরপর বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়। ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন।

ছাত্রদলের একজন সাবেক নেতা বলেন, সংগঠনের পক্ষ থেকে আইনি সহায়তা দিয়ে মামলা পরিচালনা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু মামলার বাদী অজ্ঞাত কারণে এতে সম্মত হননি। বিচার চলাকালে বাদীকে আর সিলেটেও আসতে দেখা যায়নি। পরে তাঁরা খোঁজ নিয়ে জেনেছেন যে বাদী শরীয়তপুর আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। সোমবার রায় ঘোষণার সময়েও তাওহীদুল পরিবারের কেউ উপস্থিত ছিলেন না।

মামলার রায় হওয়ার পর এ ব্যাপারে কথা বলতে মামলার বাদী ও তাওহীদুলের চাচা আনোয়ার হোসেন মাতবরের মুঠোফোন নম্বরে ফোন দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।