ফারুক নোমানীঃ

মানুষ আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। বড় মমতা ও ভালোবাসা দিয়ে তিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে। তাকে দিয়েছেন সর্বোত্তম সৌন্দর্য। করেছেন সর্বোচ্চ সম্মানে অধিষ্ঠিত। এই পৃথিবীতে মানুষ দয়াময় আল্লাহর খলীফা বা প্রতিনিধি। মানুষের পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব, সৌহার্দ, সম্প্রীতি ও সহমর্মিতার বিধান দিয়েছে ইসলাম। কাউকে অন্যায়ভাবে কষ্ট দেয়া, হৃদয়ে আঘাত করা এটা জঘন্যতম কাজ। কুরআনুল কারীম ও সহীহ হাদীসে বলা হয়েছে মানুষকে কষ্ট দেয়ার ভয়াবহ পরিণতির কথা। হত্যা, জুলুম নির্যাতন, মিথ্যা অপবাদ, গিবত পরনিন্দা চর্চাসহ এ জাতীয় নানা অপরাধের স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা রয়েছে কুরআন ও হাদীসে। কিছু কথা বলা হয়েছে মূলনীতির আকারে। যে কোন স্থান কাল ও প্রেক্ষাপটে তা প্রযোজ্য। আমাদের মনে রাখতে হবে মানুষকে কষ্ট দেয়া ইসলামে হারাম করা হয়েছে। সাথে সাথে যে সকল কাজে মানুষ কষ্ট পেতে পারে তাও পরিহার করা একান্তই আবশ্যক।

মানুষের উপকার করা ইসলামের শিক্ষা। মানুষের কষ্ট দূর করা ইসলামের বিধান। মানুষের যিনি উপকার করেন, আল্লাহর কাছে তিনি বড়ই প্রিয়। ঈমানের শাখার ভেতর একটি শাখা হলো পথ থেকে কষ্টদায়ক কোন কিছু সরিয়ে দেয়া। মানুষের চলার পথে পড়ে থাকা একটি গাছ সরিয়ে দেয়ার কারণে জান্নাত দেয়ার কথাও বলা হয়েছে সহীহ হাদীসে। একজন মুসলিম তো কিছুতেই কোন মানুষকে কষ্ট দিতে পারে না। মুসলিমের পরিচয় হলো, তার মুখ ও হাত থেকে অন্য মানুষ নিরাপদে থাকে। তাই কোন মুসলিমই কখনো কারো কষ্টের কারণ হতে পারে না। বরং মানুষের কষ্ট দূর করাই মুসলিমের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

তবে বড় দুঃখের কথা হলো এগুলো আমাদের থেকে আজ বিদায় নিয়েছে। শুধু নাম সর্বস্ব মুসলিমে আমরা পরিণত হয়েছি।

ইসলামে মানুষের উপকারের গুরুত্ব:
মানুষের উপকার করা ইসলামের অন্যতম বিধান। হোক সে মানুষটি মুসলিম অথবা অমুসলিম। নবীজী সা. বড় গুরুত্ব দিয়ে শিখিয়েছেন মানুষের উপকারের বিষয়টি। মানুষের কষ্ট দূর করতে যেমন আদেশ করেছেন। তেমনি পুরস্কারের ঘোষণাও দিয়েছেন। এ সম্পর্কেই আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত একটি হাদীসে আছে, নবীজী সা. বলেছেন-‘এক ব্যক্তি কখনো কোনো ভালো কাজ করেনি, শুধু একটি কাঁটাযুক্ত ডাল রাস্তা থেকে সরিয়েছিল। হয়তো ডালটি গাছেই ছিলো, কেউ তা কেটে ফেলে রেখেছিল অথবা রাস্তায়ই পড়ে ছিল। সে তা সরিয়ে ফেলেছিল। আল্লাহ তার একাজ গ্রহণ করলেন এবং তাকে জান্নাতে প্রবেশ করালেন।’ (আবু দাউদ ৫২৪৫)

কাজটি একদম সাধারণ। কাঁটাযুক্ত একটি ডাল রাস্তায় পড়ে ছিলো, মানুষের পায়ে বিঁেধ কষ্ট হতে পারে সে জন্যই লোকটি রাস্তা থেকে ডালটি সরিয়ে দিলো। এ ছাড়া আর কোন ভালো কাজ তার ছিলো না, আল্লাহ তার এই কাজের প্রতি এতটাই খুশি হলেন যে, তাকে জান্নাতে প্রবেশ করালেন।

ঈমানের যে শাখা প্রশাখা রয়েছে, তার ভেতরে অন্যতম একটি শাখা হলো, রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে দেয়া। আবু হুরায়রা রা. বর্ণিত হাদীসে নবীজী সা. বলেছেন- ‘ঈমানের সত্তুরের অধিক শাখা রয়েছে, তার ভেতর সর্বোত্তম শাখা হলো আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এ কথা বলা, আর সর্বোনিম্ন শাখা হলো রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে দেয়া।’ (সহীহ মুসলিম ৩৫)

অন্য হাদীসে রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে দেয়াকে সদকা বলা হয়েছে। আবু হুরায়রা রা. বলেন, নবীজী সা. বলেছেন- ‘রাস্তা থেকে কেউ কোন কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে দিলো, এটা তার জন্য সদকা।’ (সহীহ বুখারী ২৯৮৯)

রাস্তায় পড়ে থাকা ইট, কলার খোসা, কাঁটা বা এজাতীয় কোন বস্তু যা মানুষকে কষ্ট দিতে পারে, তা সরিয়ে দিতে কষ্ট না হলেও এ কাজটি আল্লাহর কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর এ কাজের কারণেই আল্লাহ ক্ষমা করে জান্নাত দিয়েছেন মর্মেও বহু সহীহ হাদীস বিদ্যমান।

আবু যর রা. বলেন, নবীজী সা. বলেছেন-‘আমার কাছে আমার উম্মতের ভালো ও মন্দ সকল আমল পেশ করা হয়েছে। আমি তার ভালো কাজের ভেতরে পেয়েছি কষ্টদায়ক বস্তু রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়া।’

আবু হুরায়রা রা. বলেন, নবীজী সা. বলেছেন- ‘আমি জান্নাতে একজন লোককে দেখতে পেলাম, যে জান্নাতে প্রবেশ করেছে রাস্তা থেকে একটি গাছ কেটে সরিয়ে দেয়ার কারণে, যা মানুষকে কষ্ট দিচ্ছিলো।’ (সহীহ মুসলিম ১৯১৪)

পাঠক, এখানে মানুষের কষ্টের কথা বলা হয়েছে, বলা হয়নি শুধু মুসলিমদেরকে কষ্ট দিচ্ছিলো। বিষয়টি আরো স্পষ্ট হবে আবদুল্লাহ ইবনু উমর রা. বর্ণিত হাদীসটি দেখলে, নবীজী সা. বলেছেন-‘মানুষের ভেতর আল্লাহর কাছে সেই বেশি প্রিয় যে মানুষের উপকার করে।’ (আল মুজামুল আওসাত ৬০২৬)

আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, নবীজী সা. বলেছেন-‘বান্দা যতক্ষণ তার ভাইয়ের উপকার করে, আল্লাহ ততক্ষণ পর্যন্ত তার সাহায্য করেন।’ (সহীহ মুসলিম ২৬৯৯)

মানুষের কষ্ট দূর করা যেমন ইবাদত, আল্লাহর প্রিয় একটি কাজ। জান্নাতে যাবার সহজ উপায়। সাথে সাথে মানুষের কষ্টের কারণ হওয়াটাও বড় গোনাহ। এরদ্বারা মানুষ অভিশাপ কোড়ায়, তাই নবীজী সা, এ ধরনের কাজ থেকে বেঁচে থাকতে বলেছেন। আবু জর রা. বলেন, নবীজী সা. বলেছেন- ‘তোমরা তিনটি অভিশম্পাতের কাজ থেকে বেঁচে থাকো- (তা হলো) পানির ঘাটে, রাস্তায় ও ছায়ায় মলমূত্র ত্যাগ করা।’ (ইবনু মাজাহ ১২৪)

আগের যুগে টিউবয়েলের ব্যবস্থা ছিলো না, মানুষ পানি সংগ্রহের জন্য নদীর ঘাটে ও কুয়ার পাড়ে যেতো, তেমনিভাবে রাস্তা ও গাছের ছায়ায় মানুষের স্বাভাবিকভাবেই চলাচল ও সমাগম হতো। এজায়গাগুলোতে কেউ মলমূত্র ত্যাগ করলে অন্য মানুষ কষ্ট পায়। আর কষ্টের কারণে মন থেকেই মানুষ তাকে অভিশাপ দেয়। এখানে মলমূত্র ত্যাগকে মূলনীতি হিসেবে বলেছেন নবীজী সা.। উদ্দেশ্য হলো মানুষ যাদ্বারা কষ্ট পাবে সেটাই পরিহার করা আবশ্যক।

আর একজন মুসলিম তো কিছুতেই কোন মানুষকে কষ্ট দিতে পারে না। আবদুল্লাহ ইবনু আমর রা. বলেন, নবীজী সা. বলেছেন-‘প্রকৃত মুসলিম সেই, যার মুখ ও হাত থেকে অন্য মুসলিম নিরাপদে থাকে।’ (সহীহ বুখারী ১০, সহীহ মুসলিম ৬১)

যার কথা ও কাজের দ্বারা অন্যরা কষ্ট পায় না, সেই তো প্রকৃত মুসলিম। আর এক জায়গায় বসবাসের কারণে মানুষ প্রতিবেশীর সাথে অনেক অসৌজন্যমূলক আচরণও করে থাকে, আবু হুরায়রা রা. বর্ণিত হাদীসে নবীজী সা. সে বিষয়টি সতর্ক করে বলেছেন- ‘যে আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন কিছুতেই তার প্রতিবেশিকে কষ্ট না দেয়।’ (সহীহ বুখারী ১৫৮৫)

সুতরাং কোনভাবেই যেন আমার দ্বারা কেউ কষ্ট না পায়, কারো কষ্টের কারণ যেন আমি না হই, সেটা স্মরণ রাখা প্রতিটি মুসলিমের আবশ্যকীয় কর্তব্য।

পাঠক, মানুষ কোন কোন কাজে কষ্ট পায় আমরা সচেতন মানুষ তা ভালোভাবেই বুঝি। কিন্তু কিছু বিষয় আছে যাদ্বারা অনেক মানুষই কষ্ট পায়, অথচ এইগুলো আমাদের কাছে কোন অপরাধই মনে হয় না। এমন কিছু ছোট করে দেখা বড় অপরাধ তুলে ধরা হলো।

১ কলা খেয়ে রাস্তায় খোসা ফেলা:
দোকান থেকে কলা কিনে খেতে খেতে রাস্তায় চলে অনেকে। অথবা দোকানে বা অন্য কোন জায়গায় কলা খেয়ে খোসাটা নির্দিষ্ট স্থানে না রেখে ফেলে মানুষের চলাচলের রাস্তায়। এটাকে কোন অপরাধই মনে করে না সে। খুবই স্বাভাবিক একটি ব্যাপার তার কাছে। কিন্তু তার এই ফেলানো কলার খোসায় যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে বড় কোন দুর্ঘটনা।

২ অধূমপায়ীর পাশে ধূমপান করা:
‘ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’ কথাটি এতই প্রচলিত তা ব্যাখ্যা করে বুঝানোর কোন প্রয়োজন নেই। এখন অনেক সিগারেটের প্যাকেটে কণ্ঠনালীর ক্যান্সারের ছবি দিয়ে লেখা থাকে- ‘ধূমপান ক্যান্সারের ঝুকি বাড়ায়’। তবুও মানুষ কষ্টে অর্জিত পয়সা দিয়ে এই বিষ পান করে। ধূমপায়ী নিজেই ধূমপানে শেষ হয় না, তার আশেপাশের মানুষকেও দেয় অবর্ণনীয় কষ্ট। তার দেহ ও কাপড়ে থাকে দম বন্ধ করা বিশ্রী দুর্গন্ধ। এটা সে বুঝতে না পারলেও খুবই কষ্ট পায় পাশে থাকা মানুষ। দেশে প্রকাশ্যে ধূমপান নিষিদ্ধ হলেও এ আইনের প্রয়োগ নেই কোথাও। তাই পাবলিক পরিবহন ও পাবলিক প্লেসে প্রকাশ্যে ধূমপান করে নির্লজ্জ কিছু মানুষ। পাশে বসা মানুষের কষ্ট বুঝার মতো অনুভূতিটাও তার শেষ হয়ে গেছে বিড়ির আগুনে পুড়ে।

যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা:
বাংলাদেশীদের অপরিচ্ছন্নতার কথা পরিচিত পুরো পৃথিবীতে। এটা একটি জাতীয় বদনাম। সাদামাটা করে বললে বলতে হবে পুরো বাংলাদেশটাই একটা ডাস্টবিন। এখানে যে ঘখন যেখানে ইচ্ছা ময়লা আবর্জনা ফেলতে পারে। নোংরা করতে পারে পরিচ্ছন্ন রাস্তাটি। নিদিষ্ট স্থানে ডাস্টবিন থাকলেও তার বাইরে ময়লা ফেলেই যেন আমাদের শান্তি লাগে। অথচ একটু ভাবি না যে, এটা পরিবেশকে দূষিত করছে। রোগ বালাই ছড়াচ্ছে। এর দ্বারা মানুষ বড় কষ্ট পাচ্ছে।

বাদাম খেয়ে খোসা ছিটের আসে পাশে ফেলা:
বাস অথবা ট্রেন ভ্রমণের সময় যে আসনটি আমরা পাই, সেটাকে অনেকে পৈত্রিক সম্পত্তির মতো ব্যবহার করে। বাদাম খেয়ে তার খোসাগুলো আসনটিতে ও তার পাশে ছড়িয়ে এমন একটি নোংরা পরিবেশ সৃষ্টি করে যা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। অথচ এতটুকু চিন্তা আমরা করতে পারি না যে, আমি নেমে যাবার পর তো অন্য আরেকজন এখানে বসবে। আমি কেনইবা তার কষ্টের কারণ হবো।

৫ কুরবানীর পশুর বর্জ্র ভালো করে পুতে না রাখা:
কুরবানী ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত। ত্যাগ ও বিসর্জনের মাধ্যমে আনন্দ পাবার অনন্য শিক্ষা রয়েছে কুরবানীতে। তবে পশু জবাইয়ের মাধ্যমেই কিন্তু দায়িত্বটা শেষ হয় না। আরো একটি অবশ্য পালনীয় কর্তব্য থেকে যায়, তাহলো কুরবানীকৃত পশুর বর্জ্য অপসরণ। অর্থাৎ ভালো করে গর্ত করে ময়লাগুলো সেখানে মাটি চাপা দেয়া। নতুবা রক্ত ও অন্যান্য ময়লা কুকুরে ছড়িয়ে দিবে, যা থেকে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হবে, রোগবালাই তৈরি হবে, পরিবেশ দূষিত হবে, সব থেকে বড় কথা হলো মানুষ কষ্ট পাবে। মানুষকে কষ্ট দিয়ে এভাবে কুরবানি করে আমরা কতটুকু সাওয়াব কামনা করতে পারি!

৬. ড্রেনে ময়লা ফেলা:
বর্ষায় প্রতি বছর দেশে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়ে মানুষ নানাভাবে ভোগান্তির শিকার হয়ে থাকে। রাজধানী ঢাকা ও বন্দরনগরী চট্রগ্রামেরই শুধু সমস্যা নয় এটা। সমস্যাটা পুরো বাংলাদেশের। এ সমস্যার জন্য পাবলিক সরকারকে বড় দায়ী করে। সুশীলরা বলেন নগরায়নের ত্রæটির কথা। তবে সবচেয়ে বড় সমস্যাটা আমাদের নাগরিকদের। পানি নিষ্কাষণের জন্য ব্যবহৃত হয় ড্রেন। আমরা সেখানে ময়লা ফেলি। কাগজ বোতল আবর্জনা দিয়ে ভরা থাকে আমাদের দেশের ড্রেনগুলো। তাই সামান্য বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হয় চরম জনদুভোর্গ। ড্রেন তো ময়লা ফেলার জন্য নয়, ময়লা ফেলার স্থান তো আলাদা আছেই।

৭. পানের পিক ও কফ জানালা দিয়ে ফেলা:
পান খায় যারা তাদের অধিকাংশই সামাজিক জ্ঞানবোধহীন। যেখানে সেখানে পানের পিক ফেলাটা তাদের কাছে কোন ধরনেরই অপরাধ নয়। পানের রংযুক্ত কফও ফেলে তারা পরিষ্কার জায়গায়। অথচ এর মাধ্যমে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হচ্ছে। অন্য মানুষের কষ্টের কারণ হচ্ছে তা। তাই কোন সচেতন নাগরিক কিছুতেই যেখানে সেখানে পানের পিক ও কফ ফেলতে পারেন না।

মোটকথা, আমরা সামাজিক সচেতনতার ব্যাপারে বড়ই অমনযোগী, পরিচ্ছন্ন সুস্থ সমাজ নির্মাণ যে নাগরিকদের একটি গুরুদায়িত্ব আমরা তা জানিই না অনেকে। ইসলামের অন্যতম আদেশ পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা। কিন্তু আমরা এ বিষয়টিকে বড়ই অবহেলা করি।

তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আমার দায়িত্বহীনতার কারণে যদি কোন মানুষের কষ্ট হয়, সে দায়ভার তো আমার ঘাড়েই আসবে! আমাদের নদী খাল ড্রেনগুলো এমনিতে বন্ধ হয়নি। আমাদের দায়িত্বহীন আচরণেই তা এমন হয়েছে। আমরা পুরো দেশটাকেই একটা উম্মুক্ত ডাস্টবিন বানিয়ে ফেলিয়েছি। যেখানে সেখানে যখন তখন ময়লা আবর্জনা ফেলতে একটুও বিবেকে বাধে না আমাদের। অথচ এইসব ময়লা জমা হবে কোন ড্রেন, খাল, নদীতে গিয়ে। সৃষ্টি হবে জলাবদ্ধতা। ভোগান্তির শিকার হয় সাধারণ মানুষ। তিলে তিলে জমে ওঠা ড্রেনের ময়লার ভেতরে আমার চিপসের প্যাকেটটিও থাকতে পারে। থাকতে পারে বাদাম খেয়ে ফেলানো খোসাগুলো। আর এগুলো অন্য ময়লার সাথে মিশে আটকে দিতে পারে পানির স্রোত। তাহলে জলাবদ্ধতা তৈরির পেছনে আমিও জড়িত হয়ে পড়লাম। মানুষের ভোগান্তির জন্য দায়ী আমিও। আর এটা যে একটি মহাপাপ তা দলিল দিয়ে বুঝানোর প্রয়োজন নেই।

লেখক: ইমাম, মেইন বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদ, কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ।
মুহাদ্দিস, বলিদাপাড়া মাদরাসা, কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here