দীর্ঘ এক যুগ পর রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ফিরে এসেছে। রোববার (১ জুন) দেশের সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগ এক ঐতিহাসিক রায়ে হাইকোর্টের পূর্বের রায় বাতিল করে নির্বাচন কমিশনকে দলটির নিবন্ধন পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই রায় দেন। রায়ের ফলে জামায়াত এখন ভোটের রাজনীতিতে ফেরার পূর্ণ সুযোগ পেল। নির্বাচন কমিশনের কাছে দলটি আবারও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে বিবেচিত হবে।
জামায়াতের পক্ষে আদালতে ছিলেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, অ্যাডভোকেট শিশির মনির, ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন এবং ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাশেম।
২০১৩ সালে হাইকোর্ট এক রায়ে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করেছিল। সেই রায়ের ভিত্তিতেই নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন বাতিল করে দেয়। তবে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন দলটির আইনজীবীরা।
গত বছর ১ আগস্ট ছাত্র-কোটাবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে জামায়াতের সম্পৃক্ততা দেখিয়ে দলটিকে নিষিদ্ধ করেছিল তৎকালীন সরকার। কিন্তু ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর দলটি ফের প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করে, যদিও তখনও তাদের নিবন্ধন ছিল না।
জামায়াতের আইনজীবীরা শুরু থেকেই বলছিলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশন যেভাবে দলটিকে সাময়িক নিবন্ধন দিয়েছিল, তা ছিল আইনসিদ্ধ। আজকের রায়ে সেই যুক্তিই আদালত গ্রহণ করেছে বলে দাবি তাদের।
এছাড়া জামায়াতের ঐতিহ্যবাহী প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ ফিরিয়ে দেয়ার বিষয়েও রায় আসতে পারে। আইনজীবী শিশির মনির জানিয়েছেন, প্রতীক বাতিলের পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আপিল বিভাগ এ বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা দেবে, যেন নির্বাচন কমিশন সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
এই রায়ের ফলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। জামায়াত এখন থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক দল হিসেবে মাঠে সক্রিয় থাকতে পারবে।
সবুজদেশ/এসইউ