ঢাকা ১২:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জামিন নিতে এসে আদালত থেকে পালালেন কালীগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা

 

ঝিনাইদহে জামিন নিতে আদালতে এসে পালিয়েছেন এক আওয়ামী লীগ নেতা। তার নাম নজরুল ইসলাম খান। তিনি জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার জামাল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার। দীর্ঘদিন ধরে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এই আওয়ামী লীগ নেতাকে জামিন নিতে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন তার আইনজীবী শারমিন সুলতানা শ্যামলী।

নজরুল ইসলাম খান কালীগঞ্জ উপজেলার নাটোপাড়া গ্রামের হাসেম আলী খানের পুত্র।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি নাটোপাড়া গ্রামে শাহিনুর রহমান শাহীনের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করেন তিনি। ওই মামলায় ২৫ জন আসামির সবাই রোববার ঝিনাইদহ আদালতে জামিন নিতে যান। আসামিদের পক্ষে আইনজীবী শারমিন সুলতানা শ্যামলী ওকালতনামায় স্বাক্ষর নিয়ে আদালতে জামিন আবেদন করেন। তবে জামিন শুনানিতে ২৪ জন আসামি স্বশরীরে উপস্থিত থাকলেও আদালতে হাজির হননি ওই মামলার এক নম্বর আসামি নজরুল ইসলাম খান। ওকালতনামায় স্বাক্ষর করে কৌশলে আদালত থেকে পালিয়ে যান তিনি। ওই আসামিকে হাজিরের জন্য এক ঘণ্টা সময় দেন আদালত।

পরে আইনজীবী শারমিন সুলতানা শ্যামলী আসামিকে আদালতে হাজিরে ব্যর্থ হন। মামলার ২৫ জন আসামির মধ্যে পার্শ্ববর্তী ছোট তালিয়ান গ্রামের পাঁচ আসামি জামিন পান। নাটোপাড়া গ্রামের ১৯ জন আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

ঝিনাইদহ আদালতের একাধিক আইনজীবী জানান, শারমিন সুলতানা শ্যামলী আওয়ামীপন্থী একজন আইনজীবী। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিভিন্ন মামলা থেকে জামিন করতে নানা প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছেন তিনি। আসামিকে স্বশরীরে আদালতে হাজির না করে প্রতারণা করে জামিন নেওয়ার চেষ্টা দুঃখজনক। এই আইনজীবীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

এ ঘটনায় আসামীপক্ষের আইনজীবী শারমিন সুলতানা শ্যামলী বলেন, ২৫ জন আসামীকে আত্মসমর্পন ও জামিন প্রার্থনার আবেদন করা হয়। এর মধ্যে নজরুল ইসলাম অন্য একটি মামলায় জজ কোর্টে হাজিরা দিতে যান। ঠিক ওই সময় আদালতে জামিন শুনানি শুরু হলে নজরুল ইসলাম খানকে অনুপস্থিত পান আদালত। পরে তাকে হাজির করার জন্য এক ঘণ্টা সময় দেন আদালত। কিন্তু এই খবর জানার পর আসামী নজরুল ইসলাম খান আদালত চত্বর থেকে পালিয়ে যান। পরে আর তাকে হাজির করা যায়নি। বাকি ২৪ জন আসামীকে আত্মসমর্পন করানো হয়েছে।

বাদীপক্ষের আইনজীবী খলিল মিয়া জানান, এই মামলায় ২৫ জন আসামিকে আত্মসমর্পণ দেখিয়ে আদালতে জামিন চাওয়া হয়। পরবর্তীতে আসামিদের আইনজীবীর মিথ্যা আদালতে ধরা পড়ে। আসামিদের মধ্যে ২৪ জন উপস্থিত ছিলেন। এক নম্বর আসামি নজরুল ইসলাম খান আদালতে হাজির ছিলেন না। মূলত এই আসামিকে আদালতে হাজির না করেই কৌশলে জামিন করতে চেয়েছিলেন তার আইনজীবী।

ঝিনাইদহ জেলা আদালতের কোর্ট পরিদর্শক মো. মুক্তার হোসেন বলেন, এই মামলায় ১৯ আসামির জামিন নামঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন আদালত। তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সবুজদেশ/এসএএস

Tag :

করোনাভাইরাস: দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ১৩

জামিন নিতে এসে আদালত থেকে পালালেন কালীগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা

Update Time : ০৮:৪০:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

 

ঝিনাইদহে জামিন নিতে আদালতে এসে পালিয়েছেন এক আওয়ামী লীগ নেতা। তার নাম নজরুল ইসলাম খান। তিনি জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার জামাল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার। দীর্ঘদিন ধরে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এই আওয়ামী লীগ নেতাকে জামিন নিতে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন তার আইনজীবী শারমিন সুলতানা শ্যামলী।

নজরুল ইসলাম খান কালীগঞ্জ উপজেলার নাটোপাড়া গ্রামের হাসেম আলী খানের পুত্র।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি নাটোপাড়া গ্রামে শাহিনুর রহমান শাহীনের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করেন তিনি। ওই মামলায় ২৫ জন আসামির সবাই রোববার ঝিনাইদহ আদালতে জামিন নিতে যান। আসামিদের পক্ষে আইনজীবী শারমিন সুলতানা শ্যামলী ওকালতনামায় স্বাক্ষর নিয়ে আদালতে জামিন আবেদন করেন। তবে জামিন শুনানিতে ২৪ জন আসামি স্বশরীরে উপস্থিত থাকলেও আদালতে হাজির হননি ওই মামলার এক নম্বর আসামি নজরুল ইসলাম খান। ওকালতনামায় স্বাক্ষর করে কৌশলে আদালত থেকে পালিয়ে যান তিনি। ওই আসামিকে হাজিরের জন্য এক ঘণ্টা সময় দেন আদালত।

পরে আইনজীবী শারমিন সুলতানা শ্যামলী আসামিকে আদালতে হাজিরে ব্যর্থ হন। মামলার ২৫ জন আসামির মধ্যে পার্শ্ববর্তী ছোট তালিয়ান গ্রামের পাঁচ আসামি জামিন পান। নাটোপাড়া গ্রামের ১৯ জন আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

ঝিনাইদহ আদালতের একাধিক আইনজীবী জানান, শারমিন সুলতানা শ্যামলী আওয়ামীপন্থী একজন আইনজীবী। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিভিন্ন মামলা থেকে জামিন করতে নানা প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছেন তিনি। আসামিকে স্বশরীরে আদালতে হাজির না করে প্রতারণা করে জামিন নেওয়ার চেষ্টা দুঃখজনক। এই আইনজীবীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

এ ঘটনায় আসামীপক্ষের আইনজীবী শারমিন সুলতানা শ্যামলী বলেন, ২৫ জন আসামীকে আত্মসমর্পন ও জামিন প্রার্থনার আবেদন করা হয়। এর মধ্যে নজরুল ইসলাম অন্য একটি মামলায় জজ কোর্টে হাজিরা দিতে যান। ঠিক ওই সময় আদালতে জামিন শুনানি শুরু হলে নজরুল ইসলাম খানকে অনুপস্থিত পান আদালত। পরে তাকে হাজির করার জন্য এক ঘণ্টা সময় দেন আদালত। কিন্তু এই খবর জানার পর আসামী নজরুল ইসলাম খান আদালত চত্বর থেকে পালিয়ে যান। পরে আর তাকে হাজির করা যায়নি। বাকি ২৪ জন আসামীকে আত্মসমর্পন করানো হয়েছে।

বাদীপক্ষের আইনজীবী খলিল মিয়া জানান, এই মামলায় ২৫ জন আসামিকে আত্মসমর্পণ দেখিয়ে আদালতে জামিন চাওয়া হয়। পরবর্তীতে আসামিদের আইনজীবীর মিথ্যা আদালতে ধরা পড়ে। আসামিদের মধ্যে ২৪ জন উপস্থিত ছিলেন। এক নম্বর আসামি নজরুল ইসলাম খান আদালতে হাজির ছিলেন না। মূলত এই আসামিকে আদালতে হাজির না করেই কৌশলে জামিন করতে চেয়েছিলেন তার আইনজীবী।

ঝিনাইদহ জেলা আদালতের কোর্ট পরিদর্শক মো. মুক্তার হোসেন বলেন, এই মামলায় ১৯ আসামির জামিন নামঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন আদালত। তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সবুজদেশ/এসএএস