ঢাকা ০৩:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জিপিএ-৫ পেয়ে কলেজে ভর্তি নিয়ে শঙ্কা কালীগঞ্জের জাহিদের

Reporter Name

বিশেষ প্রতিনিধিঃ

বাবা রিকশাচালক হওয়ায় ঠিকমতো পড়াশোনার খরচ দিতে পারতেন না।

যতটুকু পারতেন তার সঙ্গে নিজে প্রাইভেট পড়িয়ে সেই টাকা যোগ করে পড়াশোনার খরচ চালিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে মেধাবী শিক্ষার্থী জিহাদ হাসান তুহিন।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার রঘুনাথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে সে।

তার এমন ফলে বেশ খুশি বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

নিজের এই সফলতায় খুশি হলেও নতুন শঙ্কায় ভুগছে রিকশাচালক শাজাহান আলীর ছেলে তুহিন।

ইচ্ছা আছে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার; কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থ। এখন কলেজে ভর্তি হওয়ার মতো কোনো অর্থ নেই তার কাছে।

মেধাবী শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান তুহিন জানায়, বাবা যশোর শহরে রিকশা চালান। সেখান থেকে যা আয় হয় তা দিয়েই দুই ভাইয়ের লেখাপড়া ও পরিবারের খরচ সেভাবে চলে না। তাই ঠিকমতো প্রাইভেট পড়তে পারিনি। নিজে প্রাইভেট পড়িয়ে নিজের খরচ চালিয়েছি। ইংরেজি প্রাইভেট পরীক্ষার আগে দুই মাস পড়েছি। পরীক্ষায় শুধু ইংরেজি বাদে অন্য সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছি।

তুহিন আরও জানায়, রিকশাচালক বাবার পক্ষে কলেজে ভর্তির টাকা জোগাড় করা নিয়ে শঙ্কায় আছি। করোনাভাইরাসের কারণে বাবা গত তিন মাস রিকশা চালাতে পারছেন না। এখন মাঝেমধ্যে দিনমজুরের কাজ করেন। ইচ্ছা আছে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার কিন্তু টাকার জন্য সেই স্বপ্ন পূরণ হবে কিনা জানি না।

জাহিদ হাসান তুহিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, টিনের একটি কক্ষ ও এর পেছনে বাঁশ দিয়ে ঘেরা একটি কক্ষে মা-বাবা ও তিন ভাইবোন নিয়ে বসবাস করে। বড়ভাই ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। বর্তমানে সে সাতমাইল কাজী নজরুল ইসলাম কলেজে এইচএসসি ১ম বর্ষের ছাত্র।

জাহিদের মা জাহানারা খাতুন জানান, ছেলেরা অনেক সময় না খেয়েও স্কুলে গেছে। ওদের বাবা এখন রিকশা চালাতে পারছে না। এখন জিহাদের কলেজে ভর্তির টাকা নিয়ে বেশ চিন্তায় আছি।

রোস্তম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতিয়ার রহমান জানান, জিহাদ খুব ভদ্র ছেলে। পড়াশোনায় সে খুব মনোযোগী ছিল। স্কুলে নিয়মিত আসত। সে জিপিএ-৫ পাওয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত। লেখাপড়া করে ভালো চাকরি করে বাবা-মায়ের মুখ উজ্জ্বল করুক সেই দোয়া করি।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৭:৪৭:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুন ২০২০
২৯০ Time View

জিপিএ-৫ পেয়ে কলেজে ভর্তি নিয়ে শঙ্কা কালীগঞ্জের জাহিদের

আপডেট সময় : ০৭:৪৭:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুন ২০২০

বিশেষ প্রতিনিধিঃ

বাবা রিকশাচালক হওয়ায় ঠিকমতো পড়াশোনার খরচ দিতে পারতেন না।

যতটুকু পারতেন তার সঙ্গে নিজে প্রাইভেট পড়িয়ে সেই টাকা যোগ করে পড়াশোনার খরচ চালিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে মেধাবী শিক্ষার্থী জিহাদ হাসান তুহিন।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার রঘুনাথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে সে।

তার এমন ফলে বেশ খুশি বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

নিজের এই সফলতায় খুশি হলেও নতুন শঙ্কায় ভুগছে রিকশাচালক শাজাহান আলীর ছেলে তুহিন।

ইচ্ছা আছে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার; কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থ। এখন কলেজে ভর্তি হওয়ার মতো কোনো অর্থ নেই তার কাছে।

মেধাবী শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান তুহিন জানায়, বাবা যশোর শহরে রিকশা চালান। সেখান থেকে যা আয় হয় তা দিয়েই দুই ভাইয়ের লেখাপড়া ও পরিবারের খরচ সেভাবে চলে না। তাই ঠিকমতো প্রাইভেট পড়তে পারিনি। নিজে প্রাইভেট পড়িয়ে নিজের খরচ চালিয়েছি। ইংরেজি প্রাইভেট পরীক্ষার আগে দুই মাস পড়েছি। পরীক্ষায় শুধু ইংরেজি বাদে অন্য সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছি।

তুহিন আরও জানায়, রিকশাচালক বাবার পক্ষে কলেজে ভর্তির টাকা জোগাড় করা নিয়ে শঙ্কায় আছি। করোনাভাইরাসের কারণে বাবা গত তিন মাস রিকশা চালাতে পারছেন না। এখন মাঝেমধ্যে দিনমজুরের কাজ করেন। ইচ্ছা আছে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার কিন্তু টাকার জন্য সেই স্বপ্ন পূরণ হবে কিনা জানি না।

জাহিদ হাসান তুহিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, টিনের একটি কক্ষ ও এর পেছনে বাঁশ দিয়ে ঘেরা একটি কক্ষে মা-বাবা ও তিন ভাইবোন নিয়ে বসবাস করে। বড়ভাই ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। বর্তমানে সে সাতমাইল কাজী নজরুল ইসলাম কলেজে এইচএসসি ১ম বর্ষের ছাত্র।

জাহিদের মা জাহানারা খাতুন জানান, ছেলেরা অনেক সময় না খেয়েও স্কুলে গেছে। ওদের বাবা এখন রিকশা চালাতে পারছে না। এখন জিহাদের কলেজে ভর্তির টাকা নিয়ে বেশ চিন্তায় আছি।

রোস্তম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতিয়ার রহমান জানান, জিহাদ খুব ভদ্র ছেলে। পড়াশোনায় সে খুব মনোযোগী ছিল। স্কুলে নিয়মিত আসত। সে জিপিএ-৫ পাওয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত। লেখাপড়া করে ভালো চাকরি করে বাবা-মায়ের মুখ উজ্জ্বল করুক সেই দোয়া করি।