আসামি থেকে রাজসাক্ষী হওয়া পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, জুলাই-আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করতে গিয়ে এত ছাত্রজনতা নিহত ও আহত হয়েছে। এ ঘটনার জন্য আমি অনুতপ্ত ও লজ্জিত।
তিনি বলেন, এত বড় গণহত্যা আমার দায়িত্ব পালনের সময় সংঘটিত হয়েছে, যার জন্য আমি দোষ ও দায় স্বীকার করছি। দেশবাসী, নিহত, আহত পরিবার ও ব্যক্তির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করছি।
মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের জবানবন্দিতে এ কথা বলেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেলে মামলার একমাত্র রাজসাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। সকালে তাকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর পর দুপুরের বিরতিতে যান আদালত। এরপর বিকালে আবারেও জবানবন্দি পেশ করবেন তিনি।
তিনি তার নিজের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের ১১তম দিনে রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন। প্রসিকিউশন সূত্রে জানা যায়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ ক্যামেরা ট্রায়ালে জবানবন্দি দেন।
এ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ চলমান। আজ মামলার ১১তম দিনের সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। এর আগে এ মামলায় ৩৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়।
জুলাই অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক আসামি।
গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনালে নিজের দায় স্বীকার করে শেখ হাসিনার এ মামলায় স্বপ্রণোদিত হয়ে রাজসাক্ষী হতে চান চৌধুরী মামুন। একই সঙ্গে নিজের সব দায় স্বীকার করেন।
এ মামলায় গত ৩ আগস্ট থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে এখন পর্যন্ত ৩৫ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষীদের জবানবন্দিতে গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে দেশজুড়ে হত্যাযজ্ঞ চালানোর বীভৎস বর্ণনা উঠে এসেছে। এসবের জন্য দায়ী করে শেখ হাসিনা, কামালসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন শহীদ পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরা।
সবুজদেশ/এসএএস