ঢাকা ০২:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে রাতে যানবাহনে এলইডি লাইট, আলোর তীব্রতায় ঘটছে দুর্ঘটনা

Reporter Name

সবুজদেশ ডেক্সঃ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরসহ এই উপজেলার সড়ক ও মহা-সড়কগুলোতে সন্ধ্যা লাগলেই চলাচল করা মুশকিল হয়ে পড়েছে। এর একটাই কারণ বিভিন্ন যানবাহনের হেড লাইটে এলইডি লাইটের ব্যবহার।

মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ৭০ বছর বয়সী একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, জীবনের শুরু থেকেই মোটরসাইকেল চালান তিনি। মোটরসাইকেল চালানোর এত বছরের অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও তিনি এখন চালাতে ভয় পান। বর্তমানে যে কোনো ব্যক্তি রাতে শহরসহ সড়ক-মহাসড়কে বের হলেই গাড়ির হেডলাইটের যন্ত্রণায় পড়বে। যানবাহনের হেডলাইটের সাথে এলইডি লাইটের আলোর প্রভাবে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, যানবাহনের সাথে লাগানো এলইডি লাইটের আলো চলাচলের সময় ব্যাপক ভাবে চোখে পড়ায় সাধারণ মানুষের পথ চলতে নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এই আলো চোখে পড়া মাত্র যেন চোখ ধাঁধিয়ে যায়। যার ফলে প্রতিনিয়ত মানুষ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।

রাতে কালীগঞ্জ শহরের বিভিন্ন সড়ক মহা-সড়কগুলোতে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি অটোভ্যান, রিকশা, ইজিবাইক, সিএনজি, থ্রি-হুইলার , লাটা হাম্বার, আলমসাধু, নছিমন, করিমন, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য অনেক যানবাহনে এলইডি লাইটের ব্যবহার সর্বত্রই। এছাড়া অন্য লাইট ব্যবহারকারী যানবাহনের চালকরা এই এলিডি লাইটের আলোর কারণে দাঁড়িয়ে যায়। কারণ একটু বেপরোয়া হলেই ঘটবে দুর্ঘটনা। এলইডি লাইটের অধিক ব্যবহারের দিকে ট্রাফিকপুলিশ প্রশাসনের যেন কোনো মাথাব্যথা নেই।

কালীগঞ্জ মাস্টার পাড়ার ট্রাক ড্রাইভার আরজ আলী বলেন, শহর, সড়ক ও মহাসড়কে চলাচলকারী বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকারসহ কোনো গাড়ির হেডলাইটের ওপরের অংশে এখন আর কালো রং ব্যবহার করা হয় না। আগে গাড়ির হেডলাইটের প্রায় এক ইঞ্চি কালো রং করা না থাকলে পুলিশে ধরত। এখন আর ধরে না তাই কেউই কালো রং করে না। তবে ঢাকায় কালো রং করা না থাকলে পুলিশে ধরে জরিমানা করে। অনেক সময় মামলা দেয়।

চক্ষু চিকিৎসক আবু সুফিয়ান শান্তি বলেন, এই লাইটের প্রভাবে ম্যাকুলা বার্ন হতে পারে এবং প্রতিটা মানুষের চোখে কর্নিয়া থাকে আর এই আলো সরাসরি চোখে লাগলে চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে দীর্ঘদিন এভাবে আলো চোখে লাগতে থাকলে কর্নিয়া নষ্ট হয়ে যেতে পারে। যাতে করে চোখে কম দেখা, ঝাপসা দেখাসহ আস্তে আস্তে অন্ধ হয়ে যেতে পারে।

এ ব্যাপারে বারবাজারের হাইওয়ে থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা আসলে হাইড্রোলিক হর্ন বা অন্যান্য যে সমস্যা আছে সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যা যা করা উচিৎ করছি। লাটা হাম্বার, আলমসাধু, নছিমন,করিমনসহ যা আছে এগুলো তো মহাসড়কে চলারই কোন আইন নাই। এসব যানবাহন তো অবৈধ আর অন্যান্য যে যানবাহনে এলইডি লাইট লাগানো আছে আমরা বন্ধ করার ব্যাপারে পদক্ষেপ নিবো। গতমাসে আমরা এসব অবৈধ যানবাহনে ১৪০টি মামলা দিয়েছি এবং ১২০ টির অধিক আটক আছে।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৬:৫৯:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮
৮২৯ Time View

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে রাতে যানবাহনে এলইডি লাইট, আলোর তীব্রতায় ঘটছে দুর্ঘটনা

আপডেট সময় : ০৬:৫৯:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সবুজদেশ ডেক্সঃ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরসহ এই উপজেলার সড়ক ও মহা-সড়কগুলোতে সন্ধ্যা লাগলেই চলাচল করা মুশকিল হয়ে পড়েছে। এর একটাই কারণ বিভিন্ন যানবাহনের হেড লাইটে এলইডি লাইটের ব্যবহার।

মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ৭০ বছর বয়সী একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, জীবনের শুরু থেকেই মোটরসাইকেল চালান তিনি। মোটরসাইকেল চালানোর এত বছরের অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও তিনি এখন চালাতে ভয় পান। বর্তমানে যে কোনো ব্যক্তি রাতে শহরসহ সড়ক-মহাসড়কে বের হলেই গাড়ির হেডলাইটের যন্ত্রণায় পড়বে। যানবাহনের হেডলাইটের সাথে এলইডি লাইটের আলোর প্রভাবে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, যানবাহনের সাথে লাগানো এলইডি লাইটের আলো চলাচলের সময় ব্যাপক ভাবে চোখে পড়ায় সাধারণ মানুষের পথ চলতে নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এই আলো চোখে পড়া মাত্র যেন চোখ ধাঁধিয়ে যায়। যার ফলে প্রতিনিয়ত মানুষ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।

রাতে কালীগঞ্জ শহরের বিভিন্ন সড়ক মহা-সড়কগুলোতে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি অটোভ্যান, রিকশা, ইজিবাইক, সিএনজি, থ্রি-হুইলার , লাটা হাম্বার, আলমসাধু, নছিমন, করিমন, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য অনেক যানবাহনে এলইডি লাইটের ব্যবহার সর্বত্রই। এছাড়া অন্য লাইট ব্যবহারকারী যানবাহনের চালকরা এই এলিডি লাইটের আলোর কারণে দাঁড়িয়ে যায়। কারণ একটু বেপরোয়া হলেই ঘটবে দুর্ঘটনা। এলইডি লাইটের অধিক ব্যবহারের দিকে ট্রাফিকপুলিশ প্রশাসনের যেন কোনো মাথাব্যথা নেই।

কালীগঞ্জ মাস্টার পাড়ার ট্রাক ড্রাইভার আরজ আলী বলেন, শহর, সড়ক ও মহাসড়কে চলাচলকারী বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকারসহ কোনো গাড়ির হেডলাইটের ওপরের অংশে এখন আর কালো রং ব্যবহার করা হয় না। আগে গাড়ির হেডলাইটের প্রায় এক ইঞ্চি কালো রং করা না থাকলে পুলিশে ধরত। এখন আর ধরে না তাই কেউই কালো রং করে না। তবে ঢাকায় কালো রং করা না থাকলে পুলিশে ধরে জরিমানা করে। অনেক সময় মামলা দেয়।

চক্ষু চিকিৎসক আবু সুফিয়ান শান্তি বলেন, এই লাইটের প্রভাবে ম্যাকুলা বার্ন হতে পারে এবং প্রতিটা মানুষের চোখে কর্নিয়া থাকে আর এই আলো সরাসরি চোখে লাগলে চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে দীর্ঘদিন এভাবে আলো চোখে লাগতে থাকলে কর্নিয়া নষ্ট হয়ে যেতে পারে। যাতে করে চোখে কম দেখা, ঝাপসা দেখাসহ আস্তে আস্তে অন্ধ হয়ে যেতে পারে।

এ ব্যাপারে বারবাজারের হাইওয়ে থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা আসলে হাইড্রোলিক হর্ন বা অন্যান্য যে সমস্যা আছে সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যা যা করা উচিৎ করছি। লাটা হাম্বার, আলমসাধু, নছিমন,করিমনসহ যা আছে এগুলো তো মহাসড়কে চলারই কোন আইন নাই। এসব যানবাহন তো অবৈধ আর অন্যান্য যে যানবাহনে এলইডি লাইট লাগানো আছে আমরা বন্ধ করার ব্যাপারে পদক্ষেপ নিবো। গতমাসে আমরা এসব অবৈধ যানবাহনে ১৪০টি মামলা দিয়েছি এবং ১২০ টির অধিক আটক আছে।